শ্যুটিংয়ের প্রথম দিন সহ অভিনেত্রীর সঙ্গে চিমা। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
টলিউডে চিমা! আসার কথা ছিল দুপুর একটায়। সাড়ে বারোটায় ফোনে একটু আগে আসার অনুরোধ করতেই ফোনের ওধার থেকে জলদগম্ভীর গলায় চিমা ওকোরি বলে দিলেন, “ঠিক একটায় পৌঁছব।” এবং ঘড়ির কাঁটায় একটা বাজতেই নির্মীয়মাণ বাংলা ছবি ‘লক্ষ্যভেদ’-এর প্রোমো-র জন্য লাইট, সাউন্ড, ক্যামেরার সামনে হাজির ময়দানের কালো চিতা। তার মধ্যেই একান্তে কথা বললেন আনন্দবাজারের সঙ্গে।
প্রশ্ন: এক মাস আগেও পুলিশ এসি-কে কোচিং করাচ্ছিলেন। চিমা ওকোরির জীবনে এমন কী ঘটল যে, ফুটবল ছেড়ে সিনেমায় নেমে পড়লেন?
চিমা: প্রথমত আমি ফুটবলে প্রবল ভাবেই রয়েছি। দ্বিতীয়ত আমি অভিনেতা নই। তা সত্ত্বেও এর আগে টলিউড কেন বলিউড থেকেও অফার এসেছে। রাজি হইনি। কারণ সেগুলো সব ‘মশালা মুভি’ ছিল। কিন্তু এ বার আমার ফুটবলার বন্ধু-কাম-ভাই দীপঙ্কর রায় ‘লক্ষ্যভেদ’ ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব দিতেই রাজি হয়ে গেলাম?
প্র: কেন?
চিমা: কারণ ছবিটার থিমটাই ফুটবল। ‘এসকেপ টু ভিকট্রি’, ‘গোল’-এর মতো ছবিগুলো কম্পিউটারে বারবার দেখতাম আর ভাবতাম, ফুটবলের গল্প নিয়ে কোনও সিনেমায় যদি অভিনয় করতে পারতাম! অবশেষে সেই ইচ্ছা পূরণ হতে চলেছে।
প্র: কিন্তু আইএসএলের আসরে যখন ব্যারেটো, বিজয়নরা নেমে পড়েছেন, তখন চিমা কোচিং না করিয়ে অভিনয় করছেন!
চিমা: দেখুন ভাই, আইএসএলে কোচিংয়ের জন্য আমি কাউকে গিয়ে বলতে পারব না, আমাকে নিন। ঈশ্বর যে দিন চাইবেন, সে দিন ঠিকই আইএসএলে কোনও না কোনও ফ্র্যাঞ্চাইজিতে আমাকে দেখতে পাবেন।
প্র: এ দিনই সিএবি-তে গিয়ে আটলেটিকো দে কলকাতা-র অন্যতম মালিক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে এলেন। কোনও সুখবর?
চিমা: সৌরভ আমার দীর্ঘ দিনের বন্ধু। ও ফুটবলে এসেছে বলে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়েছিলাম। এর বেশি কিছু নয়।
প্র: কিন্তু সৌরভ তো বলেছেন আপনাকে কাজে লাগাতে চান। দীপেন্দু, মানস ভট্টাচার্যদের সঙ্গে আটলেটিকো দে কলকাতা-র জুনিয়র টিমের দায়িত্ব নিচ্ছেন কি?
চিমা: আমার সঙ্গে এ ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত কোনও কথা হয়নি। সৌরভ যদি এই দায়িত্ব দেয় তবে আমি তৈরি। কিন্তু প্রস্তাবটা তো আগে আসতে হবে।
প্র: সিনেমায় আপনার চরিত্রটা কী?
চিমা: মুভিতে আমি এক জন ফুটবল কোচের ভূমিকায়, যে এক প্রতিভাবান ফুটবলারকে তুলে আনবে। বৃহস্পতিবার থেকে আসল শ্যুটিং শুরু। ময়দানেও শ্যুটিং হবে।
প্র: কোনটা বেশি সমস্যারবাস্তবের কোচ না সিনেমার কোচ?
চিমা: দু’টোই সমান চ্যালেঞ্জিং। আমি শঙ্কর ওঁরাওয়ের প্র্যাকটিস দেখে বড় দলের কর্তাদের বলেছিলাম ওকে দলে নিতে। সিনেমায় ঠিক ওই রকম ব্যাপারস্যাপারই অভিনয় করে দেখাতে হবে। সমস্যা হবে না।
প্র: অভিনয়ের জন্য কোনও নতুন ফিটনেস-মন্ত্র?
চিমা: দিনে দশ হাজার সিট-আপস দেওয়ার পর আর কী করব? এমনিতেই দিনে এক বেলা খাই। সুজি, মাংস, ফল আর প্রচুর জল। আর কিছু লাগবে না।
প্র: অভিনেতা হিসেবে প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা কেমন?
চিমা: ছবির হিরো (রণ) হিরোইন (মৌসুমী)-সহ সবার সঙ্গে দীপঙ্কর আলাপ করিয়ে দিল। ওরা বলছিল, ছোটবেলায় আমার খেলা দেখত। শুনে বেশ মজা লাগছিল।
প্র: বাংলা ছবি এর আগে দেখেছেন?
চিমা: রে-র (সত্যজিৎ রায়) কিছু ছবি দেখেছি। আর কিছু নয়। তবে টলিউড আমার কাছে নতুন নয়। অনেক বন্ধু রয়েছে।
প্র: যেমন?
চিমা: কোয়েল। ওর কয়েকটা ছবি দেখেছি।
প্র: আর দীপঙ্কর রায়?
চিমা: (জোরে হাসি) দারুণ ছেলে। ফুটবলে আমি ওর ফ্রেন্ড, ফিলোজফার, গাইড হলে ও সিনেমায় ঠিক সেটাই আমার জন্য।
প্র: টলিউডের নতুন জীবন নিয়ে নিজের কোনও পরিকল্পনা?
চিমা: একটা গল্প লিখছি। নাম ‘চিমা’। সেটা নিয়ে সিনেমা করতে চাই।
প্র: তার মানে মেরি কমের মতো চিমার বায়োপিক?
চিমা: আরে, এখনই সব বলে দিলে তখন কী দেখবেন? সময় এলে সব বলব।