Novak Djokovic

লড়াই ক্রমশ কঠিন হচ্ছে, অখ্যাত হুরকাজকে চার সেটে হারিয়ে উইম্বলডনের কোয়ার্টারে জোকোভিচ

উইম্বলডনের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলেন নোভাক জোকোভিচ। চতুর্থ রাউন্ডে হুবার্ট হুরকাজকে তিনি হারালেন ৭-৬, ৭-৬, ৫-৭, ৬-৪ গেমে। কঠিন লড়াইয়ের সামনে পড়তে হল সার্বিয়ার খেলোয়াড়কে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৩ ২০:৩২
Share:

নোভাক জোকোভিচ। ছবি: রয়টার্স

উইম্বলডনের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গেলেন নোভাক জোকোভিচ। চতুর্থ রাউন্ডে হুবার্ট হুরকাজকে তিনি হারালেন ৭-৬, ৭-৬, ৫-৭, ৬-৪ গেমে। তবে কঠিন লড়াই লড়তে হল সার্বিয়ার খেলোয়াড়কে। চতুর্থ বাছাই খেলোয়াড় দু’টি সেট টাইব্রেকারে জিতলেন। একটি সেট হারতে হল। চতুর্থ সেটে হারালেন পোল্যান্ডের হুরকাজকে। পরের রাউন্ডে তিনি খেলবেন আন্দ্রে রুবলেভের বিরুদ্ধে।

Advertisement

রবিবার রাতে খেলা যেখানে শেষ হয়েছিল, সেখান থেকেই সোমবার খেলা শুরু হল। ২-০ সেটে জোকোভিচ এগিয়ে থাকলেও হুরকাজ মোটেই ছেড়ে দেওয়ার পাত্র ছিলেন না। সোমবারও যে যাঁর সার্ভ ধরে রাখতে রাখতে এগোচ্ছিলেন। তৃতীয় সেটের ১২তম গেমে ম্যাচে প্রথম বার ব্রেক পয়েন্ট হয়। জোকোভিচের বিরুদ্ধে সেই ব্রেক পয়েন্ট কাজে লাগিয়ে সেট পকেটে পুরে নেন হুরকাজ।

সার্বিয়ার খেলোয়াড় প্রথম ব্রেক পয়েন্ট কাজে লাগালেন চতুর্থ সেটে ষষ্ঠ গেমে। হুরকাজের একটি ‘আনফোর্সড এরর’ (অনিচ্ছাকৃত ভুল) বাইরে যেতেই চিৎকার করে উঠলেন দ্বিতীয় বাছাই। বোঝাই যাচ্ছিল প্রতিপক্ষকে ব্রেক করতে কতটা মরিয়া ছিলেন তিনি।

Advertisement

গোটা ম্যাচেই ১৭তম বাছাই হুরকাজের প্রতিরোধের মুখে পড়লেন জোকোভিচ। হুরকাজের সার্ভিসের কোনও জবাব ছিল না তাঁর কাছে। দ্বিতীয় বাছাই জোকোভিচ প্রথম সেটে তিন বার সেট পয়েন্ট বাঁচিয়েছেন। প্রথম দুটি সেটে প্রথম সার্ভের ক্ষেত্রে অপ্রতিরোধ্য ছিলেন হুরকাজ। যখনই তিনি সমস্যায় পড়েছেন, র‌্যাকেট থেকে বেরিয়েছে ঘণ্টায় দুশো কিলোমিটার গতির সার্ভ। সেটা মেনে নিয়েই ম্যাচের পর জোকোভিচ বলেছেন, “আমার মতে এই মুহূর্তে সার্কিটে সবচেয়ে ভাল সার্ভ হুরকাজেরই। আমার খেলতে বেশ অসুবিধা হয়েছে।”

কিন্তু রিটার্নের ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়েছেন হুরকাজ। ফলে সার্ভিস ভাল থাকা সত্ত্বেও জিততে অসুবিধা হয়েছে তাঁর। সে কারণেই জোকোভিচ ৮৮ শতাংশ ক্ষেত্রে প্রথম সার্ভিস জিতেছেন। একটি ব্যাকহ্যান্ড ড্রপ ভলি এমন মেরেছেন হুরকাজ, যেটি রিটার্ন করতে গিয়ে নেটের উপরে আছড়ে পড়েন জোকোভিচ।

শেষ ১৪টি টাইব্রেকার জিতেছেন জোকোভিচ। শেষ বার অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে একটি টাইব্রেকারে হেরেছিলেন। এই নিয়ে ১৪তম উইম্বলডন কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গেলেন জোকোভিচ। রজার ফেডেরারের পরেই যুগ্মভাবে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন জিমি কোনর্সের সঙ্গে (১৪)। উইম্বলডনে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার জোকোভিচের কোনও ম্যাচের প্রথম দু’টি সেট গড়াল টাইব্রেকে।

তৃতীয় সেট থেকে সোমবারের খেলা শুরু হয়েছিল। সেখানেও দেখা গেল একই চিত্র। হুরকাজের শক্তিশালী সার্ভ। জোকোভিচের সপাটে রিটার্ন। কিন্তু তৃতীয় সেটে শেষ হাসি হাসলেন হুরকাজই। শেষের দিকে ম্যাচের প্রথম ব্রেক পয়েন্টের সুযোগ এসেছিল হুরকাজের কাছে। তিনি সেটি কাজে লাগিয়ে সেট পকেটস্থ করে নেন। সেট খোয়ানোর পর জোকোভিচকে আম্পায়ারের উদ্দেশে উত্তেজিত স্বরে কিছু একটা বলতে দেখা যায়।

সেটাই যেন চাঙ্গা করে দিল সার্বিয়ার খেলোয়াড়। চতুর্থ সেটে সপ্তম গেমে ব্রেক পয়েন্ট কাজে লাগালেন। বাকি সময়ে আর হুরকাজকে ম্যাচে ফিরতে দেননি। জোকোভিচের মতে, অভিজ্ঞতাই তাঁকে এই ম্যাচটায় জিতিয়েছে। বলেছেন, “প্রথম সেটে টাইব্রেকারে ০-৩ পিছিয়ে ছিলাম। সেখান থেকে ফিরে আসি। ওখানেই ম্যাচটা ঘুরে গিয়েছে বলে মনে হয়।” পরবর্তী প্রতিপক্ষকে নিয়ে জোকোভিচ বলেন, “ওর খেলা সম্পূর্ণ আলাদা। গ্রাউন্ড স্ট্রোক ভাল। আরও কিছু শক্তিশালী জায়গা রয়েছে। আমাকে সতর্ক থাকতে হবে।

শেষ আটে মেদভেদেভ

প্রথম বার উইম্বলডনের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলেন ডানিল মেদভেদেভ। সোমবার দুটি সেট খেলার পর চোটের কারণে ওয়াকওভার দেন তাঁর প্রতিপক্ষ জিরি লেহেকা। এই নিয়ে পঞ্চমবার উইম্বলডন খেলতে নেমে প্রথম বার শেষ আটে উঠলেন রাশিয়ার খেলোয়াড়। ৬-৪, ৬-২ এগিয়ে থাকার সময় লেহেকা অবসর নেন। ৮০ মিনিটেই ম্যাচ জিতে নেন মেদভেদেভ। চলতি মরসুমে ৮০টি জয় হল তাঁর। বাকি খেলোয়াড়দের থেকে বেশি। ম্যাচ জিতে মেদভেদেভ বলেন, “প্রতিপক্ষ ওয়াকওভার দেওয়ার আগে পর্যন্ত জয় নিয়ে নিশ্চিত ছিলাম না। তবে বুঝতে পারছিলাম ওর নড়াচড়া করতে সমস্যা হচ্ছে। তা সত্ত্বেও যে ভাবে শট মারছিল তাতে সেটা মনেই হচ্ছিল না। কিন্তু অবসর নেওয়ার সময় বুঝতে পারলাম, যেটা ভেবেছিলাম সেটাই সত্যি। আসলে ম্যাচ জেতার সময় পয়েন্ট জেতা ছাড়া আমাদের মাথায় আর কিছু থাকে না। চোট থাকলেও পয়েন্ট পাওয়ার নেশায় আমরা সব কিছু ভুলে যাই।”

ষোড়শীর দৌড় শেষ

উইম্বলডনে দৌড় শেষ হয়ে গেল ১৬ বছরের প্রতিভাবান খেলোয়াড় মিরা আন্দ্রিভার। রাশিয়ার খেলোয়াড় লড়াই করে ৬-৩, ৬-৭, ২-৬ হারলেন ম্যাডিসন কিজের কাছে। দু’ঘণ্টা দু’মিনিট চলল ম্যাচ। আমেরিকর ম্যাডিসন নবম বার কোনও গ্র্যান্ড স্ল্যামে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলেন। উইম্বলডনে দ্বিতীয় বার। ২০১৫-য় শেষ বার শেষ আটে উঠেছিলেন। ১৯৯৭ সালে আনা কুর্নিকোভার পর কনিষ্ঠতম খেলোয়াড় হিসাবে উইম্বলডনে কোয়ার্টারে ওঠার সুযোগ ছিল আন্দ্রিভার কাছে। তবে সফল হলেন না তিনি।

ওয়াকওভার পেলেন রিবাকিনা

মহিলাদের বিভাগে তৃতীয় বাছাই এলিনা রিবাকিনাকে কোয়ার্টারে পৌঁছতে কষ্টই করতে হল না। ৪-১ এগিয়ে থাকার সময় প্রতিপক্ষ বিয়াত্রিজ হাদ্দাদ মাইয়া ওয়াকওভার দিয়ে দিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন