মিসবার দাবি সিংহাসন তাঁদের প্রাপ্য

টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে বিভিন্ন যুগে বিভিন্ন দেশ বিশ্বসেরার সিংহাসনে বসেছে। কিন্তু বর্তমানে টেস্ট বিশ্বের এক নম্বর যে টিম, তাদের মতো কেউ এই মুকুটের মালিক যে হয়নি, সেটা নিয়ে কোনও প্রশ্ন ওঠার কথা নয়। একটা টিম যারা গত ছ’বছরে নিজেদের দেশের মাটিতে একটা টেস্ট ম্যাচ খেলতে পারেনি।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০১৬ ০৩:৩৩
Share:

টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে বিভিন্ন যুগে বিভিন্ন দেশ বিশ্বসেরার সিংহাসনে বসেছে। কিন্তু বর্তমানে টেস্ট বিশ্বের এক নম্বর যে টিম, তাদের মতো কেউ এই মুকুটের মালিক যে হয়নি, সেটা নিয়ে কোনও প্রশ্ন ওঠার কথা নয়।

Advertisement

একটা টিম যারা গত ছ’বছরে নিজেদের দেশের মাটিতে একটা টেস্ট ম্যাচ খেলতে পারেনি। দেশের অবস্থা এমন যে, অদূর ভবিষ্যতেও নির্বাসন থেকে মুক্তির আলো দেখা যাচ্ছে না। ক্রিকেট বোর্ডে পরিকাঠামো কম, অপেশাদারিত্ব বেশি। টিমে সংহতির অভাব। স্পট-ফিক্সিং কাণ্ডে নির্বাসিত প্রতিশ্রুতিমান তরুণ টিমে ফিরলেও তাঁকে কোণঠাসা করে রাখা।

সাধারণ হিসেবে এই অবস্থা থেকে একটা টিমের গন্তব্য হতে পারত হতাশা আর লজ্জার আরও গভীর অতল। পাকিস্তান সেখানে সাফল্যের চুড়োয়!

Advertisement

যে টিমের বিরুদ্ধে অপবাদ আছে যে তারা উপমহাদেশের পরিবেশেই শুধু মস্তান, তারা ইংল্যান্ডের মাটিতে ইংল্যান্ডের সঙ্গে সিরিজ ড্র করছে। হ্যাঁ, ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ শেষ টেস্ট বৃষ্টিতে ভেস্তে না গেলে পাকিস্তানের এই শিখর অধরা থাকত। তাদের এই সাফল্যের পিছনে ভাগ্যের হাত তাই থেকেই যাচ্ছে। কিন্তু কোন ক্ষেত্রে তা থাকে না?

মিসবা উল হক, ইউনিস খানদের তাই স্তুতির যে সমুদ্রে ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তা তাঁদের ভীষণ ভাবে প্রাপ্য। বিশেষ করে টেস্ট অধিনায়ক মিসবায় মজে পাক ক্রিকেটমহল। বলা হচ্ছে, তাঁকে টেস্ট টিমের দায়িত্ব দেওয়া এবং তার পর ছ’বছর তাঁর উপর আস্থা রাখা, এটাই পাক বোর্ডের সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব। পরিকল্পনার স্বচ্ছতা, সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার সাহস, ক্রিকেট-মেধা— সব কিছুর বিচারে মিসবা এখন পাকিস্তান ক্রিকেটের সবচেয়ে সমাদৃত আদর্শ। কেউ কেউ তো তাঁকে ইমরান খানের সঙ্গে এক পংক্তিতেও বসিয়ে দিচ্ছেন। মিসবা নিজে মনে করেন, এক নম্বরের সিংহাসন তাঁর টিমের প্রাপ্য। এবং তাঁরা যে কত আত্মত্যাগের পরে আজ এই জায়গায়, সেটা উঠে আসে তাঁর কথায়, ‘‘সবাই ভাবে আরবের মাঠে খেলাটা আমাদের পক্ষে সহজ। ওখানকার উইকেট আমাদের সাহায্য করে আর আমরা পরপর ম্যাচ জিতি। কিন্তু কেউ দেখে না, কী ভাবে প্রতিটা দিন আমরা দেশ থেকে দূরে কাটাই। পরিবার, বন্ধুবান্ধব, কারও সঙ্গে দেখা হয় না।’’

এখানেই থেমে থাকেননি মিসবা। আরও বলেছেন, ‘‘আমার মা-কে, বোনকে বছরে এক বার মাত্র দেখতে পারি। কোনও কোনও বন্ধুর সঙ্গে তো চার-পাঁচ বছর দেখা করতে পারিনি। এ সবের পরেও টিম জিতছে। দেখিয়ে দিচ্ছে, বিদেশেও আমরা পারি। এই টিম আমার গর্ব। আর এক নম্বরের সিংহাসনটা আমাদের প্রাপ্য।’’

এই প্রাপ্তি হয়তো দীর্ঘমেয়াদী নয়। কিন্তু আদিগন্তপ্রসারিত হতাশার মধ্যে এর মূল্যও যে অসীম।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন