নিরাপত্তার প্রশ্নে ফার্স্ট টার্মে লেটার মার্ক‌স পেল কি কলকাতা?

সন্ধে তখন ৭টা ৪৪। লাহৌর থেকে আবু ধাবি হয়ে কলকাতা বিমানবন্দরে নামল এতিহাদের বিমানটা। অন্য দিনের তুলনায় বিমানবন্দরের ছবিটা তখন অনেকটাই আলাদা। ওই একটা বিমানের যাত্রীদের জন্য গোটা বিমানবন্দরটাকে তখন নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে তত ক্ষণে।

Advertisement

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৬ ২০:৪৩
Share:

সন্ধে তখন ৭টা ৪৪। লাহৌর থেকে আবু ধাবি হয়ে কলকাতা বিমানবন্দরে নামল এতিহাদের বিমানটা। অন্য দিনের তুলনায় বিমানবন্দরের ছবিটা তখন অনেকটাই আলাদা। ওই একটা বিমানের যাত্রীদের জন্য গোটা বিমানবন্দরটাকে তখন নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে তত ক্ষণে। দু-তিনটে মাছি ইতি-উতি করে ওই নিরাপত্তা গলে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু বিশেষ সুবিধা করতে না পেরে, মানে মানে ভেগেছে। আসলে ওই বিমানে চেপেই যে কলকাতা উড়ে এলেন আফ্রিদিরা। বহু টানাপড়েনের পর। অবশেষে!

Advertisement

যে নিরাপত্তাকে নিয়ে এত হইচই, তার দিকে যাতে বিন্দুমাত্র আঙুল না ওঠে, সে ব্যাপারে তত্পরতা ছিল দেখার মতো। পাক টিমকে আগলে রাখতে চার-স্তরীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার জোর আয়োজন। ভিতরে একদল সিআইএসএফ, তার পরে বিধাননগর কমিশনারেটের স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চ। এর ঠিক পরের স্তরেই স্নিফার ডগকে সঙ্গে নিয়ে বিধান নগর পুলিশ। একদম শেষে কলকাতা পুলিশের কম্যান্ডো আর র‌্যাফ।

১৫ জন ক্রিকেটারকে সঙ্গে নিয়ে পাক দলের ২৭ জনের টিম যখন ফাইভ-এ গেট দিয়ে বাইরে বেরোচ্ছে, বাইরে তখন ভিড় করে দাঁড়িয়ে অন্তত শ’দুয়েক, অতি উত্সাহী জনতা। তাঁরা কি কোনও ক্রিকেট তারকার ফ্যান, নাকি এক্কেবারেই হুজুগে পাবলিক সেটা অবশ্য বোঝা দায়! গেট থেকে একজনের পরেই বেরিয়ে এলেন ক্যাপ্টেন আফ্রিদি। তাঁর নাম ধরে তখন চেঁচামেচি শুরু হয়ে গিয়েছে। যে দিক থেকে তাঁর নাম ভেসে এল, সে দিকে একবার চেয়ে আলতো হেসে হাত নাড়লেন তিনি। উত্সাহ দেখা গেল আমের আর মহম্মদ ইকবালকে নিয়ে। বিমানবন্দরের বাইরে এত ভিড় দেখে প্রথমে খানিকটা ঘাবড়ে গেলেও মহম্মদ ইকবাল পরে সেই ভিড়ের দিকে তাকিয়ে সবাইকে চমকে দিয়ে পুটুশ করে চোখ টিপলেন।

Advertisement

পাক ক্রিকেট টিমের জন্য বিমানবন্দরের বাইরের নিরাপত্তাও এক্কেবারে আঁটোসাঁটো। তাদের রেসকিউ করে হোটেল অবধি পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রথমেই ছিল কলকাতা পুলিশের পাইলট কার, তার পরে বিধাননগর পুলিশের পাইলট কার। ঠিক তার পিছনেই ডামিকার আর হুড খোলা জিপে কম্যান্ডো ফোর্স। পিছনে আস্ত একটা ডামি বাস। একদম শেষে টিম বাস।

এই নিরাপত্তার ঘনঘটায় খেসারত দিতে হল ডোমেস্টিক বিমানের যাত্রীদের। বিমানবন্দরে নেমেও পাক দল যতক্ষণ না বেরোলো তত ক্ষণ তাঁদের আটকে থাকতে হল। অবশ্য এই সব কোল্যাটেরাল ড্যামেজ নিয়ে কেই বা কবে মাথা ঘামিয়েছে।

ধর্মশালা পরিবর্ত হিসাবে হাই ভোল্টেজ ভারত-পাক ম্যাচ ছিনিয়ে নিয়ে প্রথম বাজিটা জিতে ছিল কলকাতাই। এ বার প্রাথমিক নিরাপত্তার প্রশ্নেও লেটার মার্ক‌স নিয়ে পাশ করল এ শহর।

আরও পড়ুন- ম্যাচের পর ধোনি কেন উইকেট নিয়ে আসেন, জানেন? চমকে যাবেন...

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন