বিরাটকে পাল্টা জবাব দিতে তৈরি কামিন্স

সিরিজের প্রথম বল পড়ার আগেই ভারত-অস্ট্রেলিয়ার ‘শান্তি চুক্তি’ বাতিল হওয়ার মুখে! 

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:১৮
Share:

সিরিজের প্রথম বল পড়ার আগেই ভারত-অস্ট্রেলিয়ার ‘শান্তি চুক্তি’ বাতিল হওয়ার মুখে!

Advertisement

বিরাট কোহালির দল অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে পা রাখার আগে দু’দেশের আসন্ন দ্বৈরথ ঘিরে একটা শান্তির বাতাবরণ লক্ষ করা যাচ্ছিল। অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারেরা আগেই বলেছিলেন, তাঁরা আর মাঠে নেমে স্লেজ করতে চান না। ভারতের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছিল, ‘‘ওরা না করলে আমরাও করব না।’’ কিন্তু সফরের তৃতীয় দিনেই দেখা যাচ্ছে, সেই বাতাবরণ মুছে গিয়ে আবহ ধীরে ধীরে তপ্ত হতে শুরু করেছে।

কারণ, অস্ট্রেলিয়া মনে করছে, কোহালি মাঠে নামবেন আর স্লেজ করবেন না, এমনটা হবে না! এ রকম ঘটনা ঘটবে বলে বিশ্বাসই করতে পারছেন না প্যাট কামিন্স। অস্ট্রেলিয়ার এই ফাস্ট বোলার হুঙ্কারও দিয়ে রাখছেন, কোহালি স্লেজ করলে তাঁরাও ছেড়ে কথা বলবেন না।

Advertisement

তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচের পরে শুরু হবে চার টেস্টের বহু প্রতীক্ষিত সিরিজ। দু’দেশের টেস্ট দ্বৈরথ শুরু হওয়ার সপ্তাহ দু’য়েক আগে দুই শিবিরই কিন্তু বেশ গনগনে মেজাজে। রবিবার ব্রিসবেনে ভারতীয় কোচ রবি শাস্ত্রী বুঝিয়ে দিয়েছেন, বিপক্ষকে নিয়ে ভারত কোনও মায়াদয়া দেখাবে না। যার কিছু পরেই ভেসে এসেছে কামিন্সের হুঙ্কার। অস্ট্রেলীয় প্রচারমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে প্রথমেই কোহালি প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন কামিন্স। বলেছেন, ‘‘সে দিন প্রচারমাধ্যমে দেখলাম কোহালি বলছে, ও স্লেজিং করতে চায় না। আমার কিন্তু বিশ্বাস হয় না। কোহালি বাগ্‌যুদ্ধে জড়িয়ে না পড়লেই আমি অবাক হব। ওই ধরনের পরিস্থিতির মধ্যেই কোহালি ওর সেরাটা বার করে আনতে পারে।’’

অস্ট্রেলিয়ার ফাস্ট বোলার এও জানাচ্ছেন, কোহালি যদি ভেবে থাকেন, তাঁরা সব কিছু মুখ বুজে সহ্য করবেন, তা হলে ভুল ভাবছেন ভারত অধিনায়ক। কামিন্স বলে দিচ্ছেন, ‘‘আমরা আমাদের জায়গা ছাড়ব না। সমানে সমানেই লড়াই হবে। সব ব্যাপারেই টক্কর হবে। ওরা যা বলবে, তার জবাব পাবে। বাকিদের সঙ্গে মাঠে যে রকম আচরণ করি, কোহালির সঙ্গেও সে রকমই আচরণ করব। আমার মনে হয়, দু’দলের ক্রিকেটারদের মধ্যেই চূড়ান্ত আবেগ প্রদর্শন দেখতে পাবেন।’’ তবে কামিন্স পাশাপাশি এও বলে দিচ্ছেন, ‘‘আগের সিরিজে যে আগুনে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, ততটা এ বার হবে না বলেই মনে হয়।’’

এর আগের ভারত-অস্ট্রেলিয়া টেস্ট সিরিজে বেঙ্গালুরুতে বিস্ফোরক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ডিআরএস নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সাহায্য পেতে নিজেদের ড্রেসিংরুমের দিকে তাকিয়েছিলেন তৎকালীন অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ। যা আইন বিরুদ্ধ। এর পরে ঘুরিয়ে স্মিথকে প্রতারক বলেছিলেন কোহালি। যার পরে দু’দলের সম্পর্ক খারাপ হয়ে যায়।

স্লেজ করার ব্যাপারে অস্ট্রেলিয়া কখনওই পিছপা ছিল না। কিন্তু বল বিকৃতি কাণ্ডের পরে অস্ট্রেলিয়ার ‘যে কোনও মূল্যে জিততে হবে’ মনোভাব নিয়ে প্রশ্ন উঠে যায়। স্টিভ স্মিথ, ডেভি়ড ওয়ার্নাররা নির্বাসনে যাওয়ার পরে দলের দায়িত্ব পান উইকেটকিপার টিম পেন। তার পর থেকেই অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারদের মানসিকতায় বদল আসতে থাকে। এমনকি তাঁরা যে স্লেজ করা থেকে বিরত থাকবেন, সেটাও প্রকাশ্যে জানিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু কোহালির ভারত অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে পা রাখার পরেই দেখা যাচ্ছে ছবিটা আবার বদলে যাচ্ছে।

কোহালিকে নিয়ে তাদের কৌশল কী হতে যাচ্ছে, সেটা সম্ভবত টেস্টের প্রস্তুতি শিবির চলার সময়ই চূড়ান্ত করবে অস্ট্রেলিয়া। কামিন্স বলছেন, ‘‘আমাদের টেস্ট দল একসঙ্গে হলে আমরা এই সব নিয়ে আলোচনা করব। তখনই ঠিক হবে, কার বিরুদ্ধে কী কৌশল নেওয়া হবে। আমি সেই কাজটাই করি, যেটা আমার মধ্যে থেকে সেরাটা বার করে আনতে পারে। নিজেকে তাতিয়ে তোলা যায়। মাঠে নেমে আমি শুধু নিজের সেরাটা দিতে চাই। ব্যাটসম্যানকে নিয়ে বিশেষ মাথা ঘামাই না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন