অনেক দিন থেকেই ফুটবল আর প্লেঅ্যাকটিং সমার্থক হয়ে উঠেছে। স্বীকার করছি, আমি নিজেও খেলোয়াড় জীবনে দু’একবার এটা করে ফেলেছিলাম। সে দিক থেকে দেখলে আমিও নির্দোষ না। কিন্তু হালফিলে এই ধরনের ঘটনা বিপজ্জনক রকম বেড়ে গিয়েছে।
সব চেয়ে লজ্জাজনক বিষয় হল কিছু প্লেয়ার আর কোচ বিষয়টাকে মাত্রা ছাড়া জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে। যা ফুটবলের স্পিরিটের পক্ষে খুব খারাপ।
একবার ভেবে দেখুন, এ ভাবে যদি খেলা থমকে যেতে থাকে তা হলে আই লিগের দর্শকেরা কী করতে পারে। মনে রাখবেন, রিমোটটা ওদের হাতেই থাকে এবং চাইলেই ওরা খেলা দেখা বন্ধ করে অন্য হাজারটা চ্যানেলের কোনও একটাতে চলে যেতে পারে। তা ছাড়া, প্লেঅ্যাকটিংয়ের জন্য খেলা বন্ধ থাকা মানে ফুটবলের গতিটাও স্তব্ধ হচ্ছে। মার খাচ্ছে ভারতীয় ফুটবলের উন্নতির সম্ভাবনাও।
আমি দেখেছি, যে টিম গোল করে এগিয়ে থাকে তারাই বেশি করে চোটের নাটক করে। প্লেয়াররা বহুক্ষণ চোট পাওয়ার ভান করে মাটিতে পড়ে থাকে। বোঝাই যায়, এটা করার একমাত্র কারণ সময় নষ্ট করা। বিশ্বাস করুন, ব্যাপারটা এতটাই বিরক্তিকর যে আমি নিজেও বহুবার খেলা দেখা ছেড়ে অন্য চ্যানেলে চলে গিয়েছি।
এখানে আরও কিছু কথা। বিশেষ করে কয়েক জন গোলকিপারের ব্যাপারে। আমি দেখেছি বলতে গেলে প্রতিবার গোল বাঁচিয়েই এরা মাটিতে শুয়ে পড়ে। যেন বিরাট কোনও আঘাত পেয়েছে। এবং বহুক্ষণ খেলা বন্ধ থাকে। খেলোয়াড় জীবনে মাঠে আমি নিজে বোঝার চেষ্টা করতাম, সত্যিই চোট গুরুতর না এটা স্রেফ প্লেঅ্যাকটিং। যখন বুঝলাম এটা প্লেঅ্যাকটিং ছাড়া অন্য কিছু না, তখন মনে হত ওকে যেন আর বলটাই না ধরতে দেওয়া হয়।
শুধু প্লেয়ারদেরই বা দোষ দেব কেন? আমি দেখেছি এমনকী কোচেরাও অনেক ক্ষেত্রে সমান রকম দোষী। ওরাই প্লেয়ারদের বলতে থাকে নাটক করে মাটিতে পড়ে যতক্ষণ পারিস শুয়ে থাক, সময় নষ্ট কর। আমার কথা হচ্ছে, যদি সত্যিই বিপক্ষকে হতাশ করতে সময় নষ্ট করতে চাও, তা হলে বলটা নিজের কাছে, নিজেদের মধ্যে ধরে রাখলেই তো হয়। সঙ্গে আরও অনেক কিছুও তো করা যায়। বল ধরে রেখে খেলাটা স্লো করে দেওয়া যেমন। চাইলে বলটা কর্নার ফ্ল্যাগের কাছেও নিয়ে যাওয়া যায়।