মেসিদের গ্রহে

ফুটবলের অপেরা হাউসে কাল টিম বনাম তারকা

মাদ্রিদে আটলেটিকো থেকে রিয়ালের দূরত্ব মাত্র ছয় কিলোমিটার। ময়দানে ইস্টবেঙ্গল থেকে মোহনবাগান তাঁবুর দূরত্বের চেয়ে অবশ্য অনেকটা বেশি। মাদ্রিদে গাড়িতে যদিও মাত্র দশ মিনিটের দূরত্ব রিয়াল-আটলেটিকোয়।

Advertisement

সোহম দে

শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৬ ০৪:২৮
Share:

সিআর সেভেনের পাল্টা চ্যালেঞ্জ। রোনাল্ডোর হাত থেকে কি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ কেড়ে নেবেন আঁতোয়া গ্রিজম্যান? চিত্রণ বিমল দাস।

মাদ্রিদে আটলেটিকো থেকে রিয়ালের দূরত্ব মাত্র ছয় কিলোমিটার। ময়দানে ইস্টবেঙ্গল থেকে মোহনবাগান তাঁবুর দূরত্বের চেয়ে অবশ্য অনেকটা বেশি। মাদ্রিদে গাড়িতে যদিও মাত্র দশ মিনিটের দূরত্ব রিয়াল-আটলেটিকোয়। তবে ফুটবলের দৃষ্টিকোণে দূরত্বটা প্রায় আকাশ আর পাতালের। লা ডেসিমা আর শূন্য চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেতাবের। দূরত্বটা স্পেনের সফলতম ক্লাব আর তাদের ছায়া হয়ে থাকার ক্লাবের।

Advertisement

কয়েক বছর আগেও পর্যন্ত মাদ্রিদের ফুটবল ক্লাব বলতে সারা বিশ্ব জানত রিয়াল মাদ্রিদ। চার মাইল দূরের আর এক মাদ্রিদের কেউ তোয়াক্কাই করত না। কিন্তু তারপরেই এক ছ’ফুটিয়া কোচ আটলেটিকো মাদ্রিদের দায়িত্বে এলেন। আর পুরো স্পেনের, এমনকী ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলের ছবিটাই পাল্টে দিলেন। হ্যাঁ, দিয়েগো সিমিওনের কথা বলা হচ্ছে।

লা লিগা থেকে শুরু করে ইউরোপা, কোনও কিছুই বাদ নেই সিমিওনের ট্রফি ক্যাবিনেটে। কেবল একটাই ট্রফি অধরা— উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। দু’দিন বাদেই ফুটবলের অপেরা হাউস অর্থাৎ সান সিরো অপেক্ষা করছে যে টুর্নামেন্টের সামিট যুদ্ধে মাদ্রিদের দুই প্রতিবেশী ক্লাবকে স্বাগত জানাতে। তার আগে গ্যারেথ বেল অবশ্য মনে করিয়ে দিচ্ছেন দু’বছর আগের ফাইনালে রিয়ালের কাছে আটলেটিকোর ১-৪ হারের কথা। রিয়াল ফরোয়ার্ড বলেছেন, ‘‘আমাদের প্রথম টিমে আটলেটিকোর কোনও ফুটবলারের জায়গা হত না। এ বারও আমরাই জিতব।’’ হয়তো বেল ভুলে গিয়েছেন তাঁর চেয়ে বেশি গোল আছে আটলেটিকোর আঁতোয়া গ্রিজম্যানের। কিন্তু ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো-ও যে বলছেন, ‘‘রিয়াল বিশ্বের সেরা ক্লাব। এই ক্লাব ছেড়ে আমি কোথায় যাব!’’ যদিও বিশ্বের সেই সেরা ক্লাব দু’বছর আগে তাদের দশ নম্বর চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেতাব ছাড়া গত সাত বছরে মাত্র এক বারই লা লিগা জিতেছে।

Advertisement

শনিবারের ফাইনালে রিয়াল খাতায়-কলমে বেশি শক্তিশালী হতে পারে কিন্তু এ বার এখন পর্যন্ত রোনাল্ডোরা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে হারিয়েছেন রোমা, উল্ফসবার্গ, ম্যাঞ্চেস্টার সিটির মতো দলকে। আটলেটিকো সেখানে ফাইনালে উঠেছে বার্সেলোনা, বায়ার্ন মিউনিখকে হারিয়ে। তার উপরে সান সিরো আবার রিয়ালের নরক। আজ পর্যন্ত ইতালির এই মাঠ থেকে জিতে বেরোতে পারেনি রিয়াল।

কিন্তু আটলেটিকোর সিমিওনের মতো রিয়ালের বেঞ্চেও তো একটা সোনার মগজ আছে। যে টাক মাথার জোরে ফ্রান্স বিশ্বকাপ জিতেছিল সেটাই তো এখন রিয়ালের ফ্লপ মরসুমকে ব্লকবাস্টার হওয়ার দোড়গোরায় এনে দাঁড় করিয়েছে। জিনেদিন জিদান, মাদ্রিদের প্রিয় জিজু ফুটবলার হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এনে দিয়েছিলেন রিয়ালকে। এ বার পালা কোচ হিসেবে সেই কাজে সফল হওয়ার। তাঁর টিমের ফুটবলারদের ঔদ্ধত্বের বদলে কোচ জিদানের গলায় কিন্তু প্রতিপক্ষ সম্পর্কে সমীহ। ‘‘আটলেটিকো খুবই ভাল দল। কঠিন লড়াই জিতে ফাইনালে উঠেছে।’’

যদিও দু’বছর আগের আটলেটিকো আর এই আটলেটিকোর মধ্যে বিরাট তফাত। থিবাউ কুর্তোয়ার মতো গোলকিপার নেই। গ্রিজম্যান ছাড়া কোনও ভাল স্ট্রাইকার নেই। কিন্তু আছে এগারো জনের টিম। যার সামনে মেসি-সুয়ারেজ, মুলার-লেভানডস্কিরাও হার মেনেছেন। তাই যাঁরা হয়তো ভাবছেন লেস্টার সিটির ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ জয়ই হয়তো একমাত্র রূপকথা, তাঁদের জন্য সতর্কবাণী— ‘পিকচার অভি বাকি হ্যায়...!’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন