স্মিথদের বিপর্যয়ে ‘ব্রেন ড্রেন’ দেখছেন পন্টিং

অস্ট্রেলিয়ার উদ্ধত ক্রিকেট ইতিহাসে যা কোনও দিন হয়নি, সেই লজ্জার মুহূর্ত থেকে স্টিভ স্মিথরা মাত্র একটা টেস্ট দূরে। অ্যাডিলেডে যদি দক্ষিণ আফ্রিকা শেষ টেস্ট জিতে যায়, তা হলে ঘরের মাঠে এই প্রথম কোনও টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হবে অস্ট্রেলিয়া।

Advertisement
সিডনি শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:৩৬
Share:

অস্ট্রেলিয়ার উদ্ধত ক্রিকেট ইতিহাসে যা কোনও দিন হয়নি, সেই লজ্জার মুহূর্ত থেকে স্টিভ স্মিথরা মাত্র একটা টেস্ট দূরে। অ্যাডিলেডে যদি দক্ষিণ আফ্রিকা শেষ টেস্ট জিতে যায়, তা হলে ঘরের মাঠে এই প্রথম কোনও টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হবে অস্ট্রেলিয়া।

Advertisement

দিন-রাতের সেই টেস্টের দলে ছ’জন নতুন মুখ নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ঢেলে সাজানো হয়েছে দল। কিন্তু তবু দেশ জুড়ে আশঙ্কা, কাঁটার মুকুটে বোধহয় নতুন লজ্জার পালকটা জুড়ে গেল। টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বর হওয়ার ন’মাসের মধ্যে পরপর পাঁচটা টেস্ট হারে বিধ্বস্ত হওয়ার জেরে যে আশঙ্কা একেবারে অমূলক বলে উড়িয়ে দেওয়াও যাচ্ছে না। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার জেমস সাদারল্যান্ড তো বলেই দিয়েছেন, এ সবের পরে তাঁরা যে টেস্ট বিশ্বের প্রথম দশ দলের মধ্যে আছেন, সেটা তাঁদের সৌভাগ্য!

এত দ্রুত এমন পতন কেন, গোটা দেশে সেই ময়নাতদন্ত চলছে। প্রাক্তন কিংবদন্তিরা অবশ্য বলছেন, এমনটা হওয়ারই ছিল। মূলত তিনটে কারণ উঠে আসছে। এক, শেফিল্ড শিল্ডের মান পড়ে যাওয়া। দুই, টি-টোয়েন্টি লিগ বিগ ব্যাশের বাণিজ্যিক চাপ। তিন, খামখেয়ালি ম্যাচ সূচি।

Advertisement

গত সপ্তাহে প্রধান নির্বাচকের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন রড মার্শ। তাঁর চেয়ারের অন্যতম দাবিদার রিকি পন্টিং মনে করছেন, অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট ‘ব্রেন ড্রেন’-এ ভুগছে। ‘‘ব্যাপারটা অস্ট্রেলীয় বোর্ডও জানে। আমাদের ক্রিকেট কিংবদন্তিদের দিকে দেখুন। এঁদের মধ্যে কত জন দেশের ক্রিকেট সিস্টেমে ফিরে এসেছেন? কত জনই বা কোথাও কোচিং করাচ্ছেন?’’ প্রশ্ন পন্টিংয়ের। এবং তাঁর উত্তর, ‘‘এঁরা কেউই কোচিং করাচ্ছেন না। এঁরা সবাই মাইক্রোফোন হাতে কমেন্ট্রি করছেন। কারণ কমেন্ট্রিতে টাকা বেশি আর ওখানে সময়ও কম দিতে হয়। এই ব্যাপারটা নিয়ে ভাবা উচিত।’’

উইকেটকিপিং কিংবদন্তি ইয়ান হিলি আবার মনে করেন, জাতীয় দলের কোচিং স্টাফে খুব বেশি লোক ঢুকে পড়েছেন। তিনি মনে করেন, কোচিং স্টাফ থেকে মেদ কমানো দরকার। অস্ট্রেলীয় দলের হেড কোচ ডারেন লেম্যানের সঙ্গে আছেন ব্যাটিং কোচ গ্রেম হিক, বোলিং কোচ ডেভিড সাকের এবং ফিল্ডিং কোচ গ্রেগ ব্লিউয়েট। এঁদের সবার উপরে আবার রয়েছেন হাই পারফরম্যান্স ম্যানেজার প্যাট হাওয়ার্ড। ‘‘অথচ আমরা স্পষ্ট দেখছি, এদের কারও কোনও প্রভাবই নেই। গত এক বছরে আশি রানে কত বার অল আউট হয়েছে অস্ট্রেলিয়া?’’ প্রশ্ন হিলির।

শেন ওয়াটসনের মতো প্রাক্তনের মতে, সাম্প্রতিক বিপর্যয়ের পিছনে রয়েছে ঠাসা সূচি এবং বিশ্বের বিভিন্ন টি-টোয়েন্টি লিগে খেলার প্রলোভন। ‘‘আজকাল বড্ড বেশি ক্রিকেট হচ্ছে। আর সেটা ক্রিকেটের উন্নতির জন্য হচ্ছে না। এর পিছনে বড় কারণ হল টাকা,’’ বলছেন ওয়াটসন। তাঁর মতো অন্যান্য প্রাক্তনরাও মনে করেন যে, এত বেশি ওয়ান ডে আর টি-টোয়েন্টি খেলতে খেলতে টেস্টের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার সময়ই পাওয়া যাচ্ছে না।

যা মেনে নিয়েছেন সাদারল্যান্ড। অস্ট্রেলীয় বোর্ডের মুখ্যকর্তা বলছেন, ‘‘প্রস্তুতির ব্যাপারটা নিয়ে আমাদের আরও ভাবতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন