ময়দানে মেদিনীপুর

অভাবকে হারিয়ে বড় ফুটবলার হতে চায় শ্রীজি

ছোট থেকেই বড় ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন দেখেন তিনি। ‌অভাবে‌র সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। প্রতিকূলতাকে ছাপিয়ে সম্প্রতি খড়্গপুর ফুটবল ক্লাবের হয়ে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের অনূর্ধ্ব উনিশ বিভাগের ট্রায়ালে যোগ দেন শ্রীজি রজক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:০২
Share:

শ্রীজি রজক।-নিজস্ব চিত্র

ছোট থেকেই বড় ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন দেখেন তিনি। ‌অভাবে‌র সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। প্রতিকূলতাকে ছাপিয়ে সম্প্রতি খড়্গপুর ফুটবল ক্লাবের হয়ে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের অনূর্ধ্ব উনিশ বিভাগের ট্রায়ালে যোগ দেন শ্রীজি রজক। ‘ইন্ডিয়ান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন’ (আইএফএ)-এর সাব জুনিয়র ট্রায়ালেও শ্রীজি যোগ দেন। তাঁকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছে জেলার ক্রীড়ামহলও।

Advertisement

শ্রীজি-র বাবা উপেন্দ্রপ্রসাদ রজক জামাকাপড় ইস্ত্রি করে সংসার চালান। মা সরস্বতীদেবী গৃহবধূ। এক দিদি-সহ তিন ভাইবোনের সংসারে শ্রীজি ছোট। দিদি অবিবাহিতা। দাদাও এখনও চাকরি পাননি। বাবার সামান্য আয়ে সংসার চলে টেনেটুনে। বাবার সঙ্গে মাঝেমধ্যে ইস্ত্রির কাজেও হাত লাগাতে হয় শ্রীজিকে। অভাবে খেলার জার্সি, দামি জুতো কেনার সামর্থ্য নেই তাঁর। উপেন্দ্রপ্রসাদবাবু বলেন, “আমারও ইচ্ছে, ছেলে বড় ফুটবলার হোক। কিন্তু সংসার সামলে ওর খেলার খরচ জোগাতে পারি না। ওর স্বপ্ন পূরণ হবে কি না জানিনা!”

হাল ছাড়তে অবশ্য রাজি নন শ্রীজি। খড়্গপুর ফুটবল ক্লাবে কোচ স্বপন দে-র কাছে শ্রীজি প্রশিক্ষণ নেন। সময় পেলেই সেরসা স্টেডিয়ামে চলে অনুশীলন। ২০১৫ সালে টাউন থানার পুলিশের উদ্যোগে ক্লাবভিত্তিক ফুটবল প্রতিযোগিতায় জয়ী হয় খড়্গপুর ফুটবল ক্লাব। ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট হন শ্রীজি। দিনকয়েক আগে ঘাটালে অনুষ্ঠিত স্টেট লিগের জোনাল পর্যায়ের খেলায় ফাইনালে ওঠে খড়্গপুর ফুটবল ক্লাব। সেই দলেও ছিলেন তিনি।

Advertisement

শ্রীজি-র কথায়, “ইস্টবেঙ্গলের মতো ক্লাবে খেলার স্বপ্ন রয়েছে। তবে সে জন্য আরও অনুশীলন প্রয়োজন।’’ তিনি বলেন, ‘‘বাড়ির কাজ সামলে অনুশীলনে সময় দিতে পারি না। খেলার জন্য কিছু সরঞ্জামও প্রয়োজন। স্বপনস্যার খুব চেষ্টা করছেন। আমি স্যারের স্বপ্ন ভাঙতে দেব না।”

ছাত্রকে নিয়ে আশাবাদী কোচ স্বপনবাবুও। তাঁর কথায়, “শ্রীজির আর্থিক অবস্থা খারাপ। তবে ওঁর মধ্যে প্রতিভা রয়েছে। আমি সাধ্যমতো জার্সি, জুতো দেওয়ার চেষ্টা করি।’’ পাশাপাশি তাঁর আক্ষেপ, ‘‘নিয়মিত অনুশীলনই বড় কথা। বাড়িতে ইস্ত্রির কাজের জন্য ওকে অনেকটা সময় দিতে হয়। এ ভাবে না ওর মতো প্রতিভা হারিয়ে যায়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন