Sports

স্মৃতিতে জেগে নিরহঙ্কারী প্রদীপ

খোঁজ নিয়ে জানা গেল, ময়নাগুড়িতে পিকের সমসাময়িক এখন কেউ বেঁচে নেই।

Advertisement

রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০২০ ০৭:৩০
Share:

প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র

প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে ময়নাগুড়ি এবং জলপাইগুড়িতে। তাঁর জন্ম ময়নাগুড়িতে। ছোটবেলায় পড়াশোনা করেছিলেন জলপাইগুড়ি জেলাস্কুলে। দুই শহরই তাই প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে শোকাচ্ছন্ন।

Advertisement

খোঁজ নিয়ে জানা গেল, ময়নাগুড়িতে পিকের সমসাময়িক এখন কেউ বেঁচে নেই। যে সমস্ত প্রবীণ ব্যক্তি আছেন, তাঁরা পিকে-র কথা তাঁদের বাবা বা ঠাকুমার কাছে শুনেছিলেন। তিনি যে বাড়িটিতে জন্মেছিলেন, সেটি ছিল ময়নাগুড়ি পার্ক এবং ময়নাগুড়ি হাইস্কুল সংলগ্ন এলাকায়। একটি কাঠের বাংলো ছিল।

সনৎ কুমার বসু, ময়নাগুড়ির বাসিন্দা। বয়স ৮০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। স্মৃতিচারণ করে বললেন, “শুনেছিলাম যে শৈশবে প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্বল শরীরের ছিলেন। কিন্তু তখন ভাবা যায়নি সেই দুর্বল শরীরের কিশোর ভবিষ্যতে একজন কিংবদন্তি ফুটবলার হবেন।”

Advertisement

পিকের বাবা প্রভাতবাবু ছেলের জন্মের পর জলপাইগুড়িতে চলে আসেন। ময়নাগুড়ির সেই কাঠের বাংলোটি বিক্রি করে। পরবর্তীকালে জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন পিকে। সেই স্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক ধীরাজ ঘোষের মনে পড়ছে, “এই স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত পড়েছিলেন প্রদীপ। তার পরের বছরই তাঁরা জামশেদপুরে চলে যান।” কিন্তু ফুটবলার হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরও প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জলপাইগুড়ি এবং জেলাস্কুলকে ভোলেননি। ১৯৬২-র জাকার্তা এশিয়ান গেমসে চ্যাম্পিয়ন হওয়া ভারতীয় ফুটবল দলের অন্যতম সদস্য, দুরন্ত এই ফরওয়ার্ড সোনার পদক নিয়ে জলপাইগুড়িতে এসেছিলেন। তার আগেও তিনি কয়েকবার এসেছিলেন জলপাইগুড়িতে দিদির বাড়িতে।

জেলাস্কুলের প্রাক্তন ছাত্র এবং বর্তমানে জেওয়াইএমএ ক্লাবের সম্পাদক তপন বাগচী বললেন, “সেদিনের কথা আমার এখনও মনে আছে। আমি তখন জেলাস্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ি। জানলাম প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় স্কুলে আসবেন। স্কুলে যেন উৎসব লেগে গিয়েছে! আমাদের ছাত্রদের লাইন করে দাঁড় করানো হয়েছিল। শেষপর্যন্ত তিনি এলেন। শুধু ছাত্ররা নয়, শিক্ষকদের মধ্যেও তাঁকে দেখার জন্য কী হুড়োহুড়ি!’’ তপনবাবুর আরও মনে আছে, পিকে সেবার ছাত্রদের কাছে তাঁর অভিজ্ঞতার কথা বলেছিলেন। সোনার পদকও দেখিয়েছিলেন। বললেন, ‘‘এতটাই নিরহঙ্কারী ছিলেন প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় যে ছাত্র ও শিক্ষকদের অনুরোধে স্কুলের মাঠে ফুটবলও খেলেছিলেন সেদিন! ’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন