গোপীর চোখে

সেরাটা এখনও দেখানো বাকি সিন্ধুর

তাঁর লম্বা শিষ্যা ভবিষ্যতে আরও উচ্চতা ছোঁবেন বলে মনে করছেন গুরু। শিষ্যার নাম পুসারলা বেঙ্কট সিন্ধু। গুরু— পুল্লেলা গোপীচন্দ।

Advertisement
মুম্বই শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:১১
Share:

তাঁর লম্বা শিষ্যা ভবিষ্যতে আরও উচ্চতা ছোঁবেন বলে মনে করছেন গুরু।

Advertisement

শিষ্যার নাম পুসারলা বেঙ্কট সিন্ধু। গুরু— পুল্লেলা গোপীচন্দ।

‘‘আমি বরাবর বলে এসেছি, এমনকী সেটা যখন সিন্ধু পরপর দু’বছর বিশ্ব ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ জিতেছিল তখনও যে, ওর এখনও নিজের সেরা ফর্মে পৌঁছতে আরও কিছু সময় বাকি আছে,’’ বলেছেন গোপী। সঙ্গে তিনি এ-ও যোগ করেছেন, ‘‘এবং এখনও আমার সেই কথা থেকে সরছি না আমি।’’ সিন্ধুর প্রাক্তন অল ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়ন গুরুকে আজ মুম্বইয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতার সময় জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, ২০১৬ সালটা হায়দরাবাদের ২১ বছর বয়সি তরুণীর যে রকম চমকপ্রদ গেল ব্যাডমিন্টন কোর্টে, তার পর কী বলবেন? সিন্ধুর কি এটাই সেরা ফর্ম?

Advertisement

প্রথম ভারতীয় হিসেবে অলিম্পিক্স ব্যাডমিন্টন ফাইনাল খেলা। জীবনের প্রথম সুপার সিরিজ খেতাব জেতা। কেরিয়ারে প্রথম বার ওয়ার্ল্ড সুপার সিরিজ ফাইনালস টুর্নামেন্টে খেলার যোগ্যতা পাওয়া। সেখানে অলিম্পিক্স ও বিশ্বচ্যাম্পিয়নকে হারিয়ে মাত্র মাস চারেকের ভেতর রিও গেমসের হারের বদলা নেওয়া— এমন নানা মণিমুক্তোয় এ বছর সিন্ধুর সিভি ভরা। তা সত্ত্বেও সিন্ধুর গুরুকুলের প্রধানের মন পুরোপুরি ভরছে না! ‘‘এই জায়গায় পৌঁছনোর জন্য সিন্ধু প্রচুর কঠিন পরিশ্রম করেছে। প্রচুর প্লেয়ার এখন ওর বিরুদ্ধে নিজেদের সেরা পারফরম্যান্স করতে মরিয়া হবে। ওকে যে ভাবে হোক হারাতে চাইবে। ফলে কোর্টে সিন্ধুর আগামী দিনগুলো আরও বেশি চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠবে,’’ বলেছেন গোপী। একইসঙ্গে তিনি অবশ্য এ-ও বলছেন, ‘‘আমি খুশি সমস্ত চাপকে সিন্ধু যে ভাবে সামলে চলেছে। আর ধারাবাহিক ভাল পারফরম্যান্স করে যাচ্ছে। যেটা আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ।’’

গত সপ্তাহে মরসুম শেষের ওয়ার্ল্ড সুপার সিরিজ ফাইনালসের সেমিফাইনালে সিন্ধু হেরে গেলেও শিষ্যার দুবাইয়ের পারফরম্যান্সে খুশি গুরু। গোপী বলেছেন, ‘‘সব মিলিয়ে দুবাইয়ে সিন্ধুর পারফরম্যান্স আমার মতে খুব ভাল। সব ক’টা ম্যাচ ভাল খেলেছে ওখানে। সেমিফাইনালে সুংয়ের কাছে হেরেছে বটে, কিন্তু সে দিন সুং সত্যিই অসাধারণ খেলেছে।’’ গোপীকে বরং তৃপ্তি দিচ্ছে, ক্যারোলিনা মারিনের বিরুদ্ধে অলিম্পিক্স ফাইনালের হারের বদলা সিন্ধুকে পরের সাক্ষাতেই সুপার সিরিজ ফাইনালসে নিতে দেখে। ‘‘রিওর পর দুবাইয়ে মারিনের বিরুদ্ধে সিন্ধু প্রথম খেলার সুযোগ পেয়েছিল। এবং প্রথম সুযোগেই ওকে হারিয়েছে। দারুণ ব্যাপার। এটাও দারুণ যে ভাবে ও সুপার সিরিজ ফাইনালস খেলার যোগ্যতা পেয়েছিল। চিন ওপেনে চ্যাম্পিয়ন। হংকংয়ে রানার্স। দুবাইয়েও তো সেমিফাইনালে উঠল। বছরের শেষ তিনটে টুর্নামেন্ট ওর দারুণ গিয়েছে।’’

জাতীয় ব্যাডমিন্টন কোচ গোপীর মতে সিন্ধুর আরও উন্নতির চাবিকাঠি হবে, বিভিন্ন স্টাইলে খেলা রপ্ত করতে পারা। এবং ম্যাচের বিভিন্ন পরিস্থিতিতে সেই সব স্টাইল প্রয়োজনে রদবদল করতে শেখা। ‘‘আসলে ওকে এই ব্যাপারটা একশো ভাগ শিখতে হবে যে, হারটা কোনও ব্যাপারই নয়। হারের কথা মাথায় না রাখতে পারা মানেই তুমি জিতবে,’’ বলেছেন তেতাল্লিশ বছরের গোপী। সঙ্গে তিনি আরও যোগ করেছেন, ‘‘সিন্ধুর বয়স মাত্র একুশ। এর মধ্যেই ওর অলিম্পিক্স, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ, কমনওয়েলথ গেমস, এশিয়াড, এশীয় চ্যাম্পিয়নশিপ— সব পদক জেতা হয়ে গিয়েছে। অনেকে হয়তো বলবেন, পদকগুলোর মধ্যে সোনার পদক তো নেহাতই কম। হয় রুপো, না হয় তো ব্রোঞ্জ। কিন্তু আমি সিন্ধু যা সাফল্য পেয়েছে সেটাকেই বেশি দাম দেব, যে সাফল্য পায়নি সেটা নিয়ে ভেবে হতাশ হবো না। সেটাই বরং সিন্ধুকে আরও সাফল্য পাওয়ার জন্য আরও জেদি করবে। আরও উন্নতির দিকে ওকে পৌঁছে দেবে।’’

আর তাঁর প্রাক্তন ছাত্রীর ফর্ম নিয়ে গোপী কী বলছেন? ‘‘সাইনাকে ট্যুরে ফিরতে দেখে খুব ভাল সাগছে। চিন আর হংকংয়ে কিছু ভাল পারফরম্যান্স করেছে ও। আমি নিশ্চিত আগামী দিনে ওর থেকে আরও ভাল পারফরম্যান্স দেখবেন সবাই। টানা তিনটে টুর্নামেন্ট খেলল। মানে চোট থেকে ভালই সেরে উঠেছে। অবশ্য সত্যিকারের ফিটনেস পেতে সাইনার আরও সময় লাগবে। কোর্টে তীক্ষ্মতা, ম্যাচ ফিটনেস এ সব আর কী!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন