শনিবার সেমিফাইনালে জয়ের পথে পিভি সিন্ধু। ছবি: এএফপি
গ্লাসগোয় বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের সেই মহাযুদ্ধের রোমাঞ্চের রেশ এখনও কাটেনি। অনেকেরই মনে যথেষ্ট উজ্জ্বল সিন্ধু বনাম ওকুহারার সেই রুদ্ধশ্বাস ফাইনাল।
তার রেশ কাটতে না কাটতেই আবার হতে চলেছে সেই মহারণ। ব্যাডিমন্টনের ‘থ্রিলা ইন ম্যানিলা’। আজ, রবিবার কোরিয়া ওপেন ফাইনালে আবার দু’জনে মুখোমুখি। ভারতের পিভি সিন্ধু বনাম জাপানের নজোমি ওকুহারা।
গ্লাসগোর সেই লড়াইয়ে সিন্ধু হেরেছিলেন ১৯-২১, ২২-২০, ২০-২২-এ। শেষ গেমে ২০-২০ করার পরও হারতে হয় তাঁকে। তার ঠিক তিন সপ্তাহের মধ্যে ভারতীয় তারকার সামনে চলে এল বদলা নেওয়ার সুযোগ। এ বার জাপানি তারকার বিরুদ্ধে হার-জিতের ৩-৪ পরিসংখ্যান নিয়ে নামবেন সিন্ধু।
শনিবার কোরিয়া ওপেন সেমিফাইনালে ষষ্ঠ বাছাই চিনের হি বিংজিয়াও-কে হারিয়ে ফাইনালে উঠে ওকুহারার মুখোমুখি সিন্ধু। ভারতীয় সময় অনুযায়ী রবিবার সকালে হবে সেই খেতাবি যুদ্ধ। ভারতীয় সমর্থকেরা চাইবেন, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে হারের জবাব দিন সিন্ধু।
তবে এ বারও যে সিন্ধুকে কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে চলেছেন, তার ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন ওকুহারা। শনিবার সিন্ধু যেখানে ষষ্ঠ বাছাই বিংজিয়াও-কে ৬৬ মিনিটে হারালেন ২১-১০, ১৭-২১, ২১-১৬ সেখানে অন্য সেমিফাইনালে ওকুহারা নিজের দেশেরই আকানে ইয়ামাগুচি-কে হারাতে মাত্র ৩৮ মিনিট সময় নেন। ফল ২১-১৭, ২১-১৮।
এপ্রিলে এশীয় ব্যাডমিন্টনে বিংজিয়াওর কাছে হেরে গিয়েছিলেন সিন্ধু। এ দিন সেই হারেরই বদলা নিলেন। এর আগে আট বারের মুখোমুখিতে ভারতীয় তারকা জিতেছিলেন মাত্র তিন বার। তবে সে সব পরিসংখ্যানের প্রভাব সিন্ধুর খেলায় পড়তে দেখা যায়নি। দ্বিতীয় গেমে তাঁর সেই ‘আনফোর্সড এরর্স’-এর রোগ ফের ভোগাতে শুরু করেছিল। শেষ গেমে সেই সমস্যা কাটিয়ে উঠে ম্যাচ জিতে নেন সিন্ধু। যদি ফের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের মতো দীর্ঘ র্যালি এবং ম্যারাথন ম্যাচ হয়, তখন সিন্ধুকে এই নাছোড় মনোভাবই দেখাতে হবে।
শনিবার প্রথম গেমে বিংজিয়াও-কে ধারেকাছেও আসতে দেননি সিন্ধু। প্রথমে ৫-০, তার পরে ক্রমশ ৯-১, ১৩-৪ ও সব শেষে ১৮-৭ লিড নিয়ে নেওয়ার পরে নাগালের বাইরে চলে যান তিনি। দ্বিতীয় গেমেও ৯-৪ এগিয়ে যান। কিন্তু এই জায়গা থেকেই ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেন বিংজিয়াও। বিপক্ষের ‘আনফোর্সড এরর্স’-কে কাজে লাগিয়ে খেলায় ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠেন তিনি। ম্যাচে তিনি প্রথম বার এগোন সেই গেমে ১৬-১৫ করে। কিন্তু বিপক্ষের চেয়ে বেশ লম্বা হওয়ার সুবিধাটা শেষ গেমে নিয়ে নেন ভারতীয় তারকা।
পরপর দু’টি বিধ্বংসী রিটার্নে সিন্ধু ১৩-১২ থেকে যখন ১৬-১২ পৌঁছে যান, তখন থেকেই জয় দেখতে পাচ্ছিলেন তিনি। লম্বা র্যালিতে স্নায়ুর জোর বজায় রাখা ও পিছিয়ে থেকেও তাঁর হার না মানা আচরণ ক্রমশ তাঁকে জয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়।
শনিবার রাত কাটিয়েই ফের রবিবার চূড়ান্ত লড়াইয়ে নামতে হবে সিন্ধুকে কঠিনতম প্রতিদ্বন্দ্বীর সামনে। তিন সপ্তাহ আগে যে ক্লান্তি তাঁকে শেষ লড়াইটুকু জিততে দেয়নি। বলা হচ্ছিল, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের ইতিহাসে ফাইনালে এ রকম হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখা যায়নি। রবিবারও সেই ক্লান্তিই ফের সিন্ধুর সামনে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়ায় কি না, সেটাই দেখার।
শনিবার মাত্র ৩৮ মিনিটের জয়ের পরে কিন্তু রবিবার তরতাজা হয়ে কোর্টে ফিরতে ওকুহারার অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। দেখার সিন্ধু বদলা নিতে পারেন কি না রবিবার।