নাছোড় শ্রীনি বসলেন ভিডিও কনফারেন্সে, বিকল্প নাম উঠল রাজীবের

নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনের সেলফোন শুক্রবার গোটা দিন ধরে খুব ব্যস্ত থাকল। বেশ কিছু বোর্ড সদস্যের সঙ্গে তিনি ভিডিও কনফারেন্স করলেন। যাঁদের ভিডিও কনফারেন্সে ধরা সম্ভব হল না তাঁদের ফোনে ধরলেন। ত্রিশ বোর্ড সদস্যকে শ্রীনি আলাদা-আলাদা করে বোঝালেন, আমি এখনও আছি। খুব ভাল ভাবে আছি। মোটেও অতীত হয়ে যাইনি!

Advertisement

গৌতম ভট্টাচার্য

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:৪৫
Share:

নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনের সেলফোন শুক্রবার গোটা দিন ধরে খুব ব্যস্ত থাকল। বেশ কিছু বোর্ড সদস্যের সঙ্গে তিনি ভিডিও কনফারেন্স করলেন। যাঁদের ভিডিও কনফারেন্সে ধরা সম্ভব হল না তাঁদের ফোনে ধরলেন। ত্রিশ বোর্ড সদস্যকে শ্রীনি আলাদা-আলাদা করে বোঝালেন, আমি এখনও আছি। খুব ভাল ভাবে আছি। মোটেও অতীত হয়ে যাইনি!

Advertisement

শ্রীনিবাসনের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু শুক্রবার মোটেও বিরোধী গোষ্ঠী ছিল না। ছিল ভারতীয় মিডিয়া। ভিডিও কনফারেন্সে যাদের আক্রমণ করে বোর্ড সদস্যদের শ্রীনি বলে দেন, মিডিয়া প্রচুর ইচ্ছাকৃত মিথ্যে লিখেছে। ওদের কথা শুনে বা কাগজ পড়ে আপনারা বিভ্রান্ত হবেন না। মিডিয়া লিখেছে, আমি শেষ। বোর্ড প্রেসিডেন্ট আমি হতে পারব না। সুপ্রিম কোর্ট দাঁড়াতে দেবে না। কিন্তু ওদের বিশ্বাস করার কোনও যুক্তি নেই, কারণ ব্যাপারটা অন্য।

শ্রীনি বোর্ড সদস্যদের বলে দেন, সুপ্রিম কোর্ট বৃহস্পতিবার যা বলেছে সবটাই অবজারভেশন। বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণ। কোনওটাই রায় নয়। আর দ্বিতীয়ত, বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ আদালত যা-ই বলেছে, সে সব ওদের আইনজীবীদের করা সওয়ালের প্রেক্ষিতে বলা। সোমবার আমার আইনজীবী সওয়াল করবে। ওরা যে যে অভিযোগ তুলেছে, তার প্রত্যেকটার উত্তর আমার কাছে আছে। সেগুলো সব পেশ করা হবে। আর পরিস্থিতিও সোমবার ঘুরে যাবে।

Advertisement

বোর্ড মহাধ্যক্ষর যে মনোভাব দেখে শ্রীনি-ঘনিষ্ঠরা এ দিন বলতে শুরু করলেন, আদালত যত ভ্রূকুটিই দেখাক, শ্রীনির উচ্চাকাঙ্খায় এতটুকু ঝটকা লাগেনি। কোনও কোনও সদস্য আবার আশ্চর্য হয়ে গেলেন, এই অবস্থায় শ্রীনিকে ভিডিও কনফারেন্স করতে দেখে। এঁরা অবাক হচ্ছেন এটা ভেবে যে, শ্রীনির ভিডিও কনফারেন্স করার কথা চাপা থাকবে না। ওটা বেরোবে। আর সেটা কানে গেলে সুপ্রিম কোর্ট অবশ্যই প্রসন্ন হবে না।

সুপ্রিম কোর্ট শ্রীনি নিয়ে শেষ পর্যন্ত কী মনোভাব দেখাবে, খাদের কিনারে দাঁড়িয়ে থেকে তিনি আবার কোনও কামব্যাক ঘটাবেন কি না, সোমবারের আদালত-কক্ষ আঁচ দিয়ে দেবে। কিন্তু শ্রীনির বিকল্প কে, সে সবও ভেবে রাখা হচ্ছে।

গত কাল পর্যন্ত শ্রীনির পরিবর্তে সিএবি প্রেসিডেন্ট জগমোহন ডালমিয়ার দিকে পাল্লা ভারী দেখাচ্ছিল। কিন্তু চব্বিশ ঘণ্টায় পরিস্থিতি পাল্টেছে। ডালমিয়ার সঙ্গে সমান্তরাল ভাবে প্রেসিডেন্টের দৌড়ে চলে এসেছেন রাজীব শুক্লও। রাজীব মাসখানেক ধরে নিরলস ভাবে নিজের জন্য ক্যাম্পেনিং করে যাচ্ছিলেন, কিন্তু তাতে বিশেষ সাড়া মিলছিল না। শুক্রবার পরিস্থিতি যেন খানিকটা বদলাল।

বোর্ডের এই গোষ্ঠী বলছে, ডালমিয়া থাকুন। কিন্তু থাকুন, বোর্ডের অভিভাবক হয়ে। এঁদের মনে হচ্ছে, প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য যে শারীরিক সক্ষমতা এবং মানসিক ক্ষিপ্রতা থাকা দরকার, তা ডালমিয়ার এখন নেই। এঁরা চাইছেন, রাজীব শুক্লকে প্রেসিডেন্ট করা হোক। হিমাচলের অনুরাগ ঠাকুর সচিব হন। আর ডালমিয়াকে করে দেওয়া হোক বোর্ডের অভিভাবক। সেটা প্রেটন-ইন-চিফ হতে পারে বা অন্য কিছু।

মনে করা হচ্ছে, রাজীব শুক্ল কংগ্রেসের সঙ্গে জড়িত থাকলেও বর্তমানে খুবই বিজেপি ঘনিষ্ঠ। আর অনুরাগ তো বিজেপিরই লোক। তাই রাজীব প্রেসিডেন্ট আর অনুরাগ সচিব হলে বোর্ডের রিমোট কন্ট্রোল বিজেপির হাতে থেকে যাবে। কিন্তু এই ফর্মুলা এখন বাকিদের কাছে কতটা গ্রহণযোগ্য হয়, সেটা দেখার। সিএবি যেমন শুক্রবারই বলে দিয়েছে, ডালমিয়া থাকতে কোন দুঃখে রাজীবকে সমর্থন করব?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন