কাজে এল না মনোজের লড়াকু ৩৯।
কোচ এবং অধিনায়ক বলেছিলেন, দেড়শোর কাছাকাছি টার্গেট কঠিন হয়ে যাবে। শেষ পর্যন্ত বাংলার সামনে ১৫৫ রানের লক্ষ্য রেখেছিল বরোদা। সেই রান প্রায় তাড়া করেও ফেলেছিলেন মনোজ তিওয়ারিরা। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। বাংলার দ্বিতীয় ইনিংস শেষ হয়ে গেল ১৩৩ রানে। জয় থেকে মাত্র বাইশ রান দূরে।
লাহলির সবুজ উইকেটে প্রথম দিন পড়েছিল ২৩ উইকেট। দ্বিতীয় দিন পড়ল সতেরোটা, এবং নির্ধারিত সময়ের অর্ধেকেই নিষ্পত্তি হয়ে গেল ম্যাচের। যা অবস্থা, তাতে পাঁচ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে বাংলা গ্রুপ ‘এ’-র পাঁচে। এবং এর আগে দুটো ম্যাচ সরাসরি জিতেও এখন বাংলার নক আউটে যাওয়া অনিশ্চিত। মনোজদের পরের ম্যাচ মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে। নাগপুরে সেই ম্যাচ শুরু হবে ২৯ নভেম্বর।
সিএবি প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় যদিও বলছেন, ‘‘একটা ম্যাচে খারাপ হতেই পারে। তরুণ টিম এটা। এখনও তিনটে ম্যাচ বাকি আছে। তার মধ্যে গুজরাত বা মুম্বই ম্যাচটা জিতে গেলে আমরা আবার নক আউটের রাস্তায় চলে আসব।’’ এ দিন বাংলার অন্যতম নির্বাচক অরুপ ভট্টাচার্যর সঙ্গে টিম নিয়ে আলোচনা করেন সৌরভ। আজ, বুধবার বাংলা টিম শহরে ফিরলে অধিনায়ক মনোজের সঙ্গেও তাঁর আলোচনা করার কথা। যদিও এই হারের জন্য লাহলির উইকেটকে দোষ দিচ্ছেন না সৌরভ। বরং তিনি বলছেন, ‘‘পিচকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। দুটো টিমই তো এক উইকেটে খেলেছে।’’
এ দিন ৬৩-৩ থেকে যখন দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে বরোদা, তাদের লিড ৮৪। কিন্তু প্রথম সাত ওভারের মধ্যে তারা ৭১-৬ হয়ে যায়। সৌজন্যে মুকেশ কুমারের রঞ্জিতে প্রথম পাঁচ উইকেট শিকার। তেইশ বছরের ডান হাতি পেসার ৪৫ রান দিয়ে পাঁচ উইকেট তুলে নেন। বরোদার দ্বিতীয় ইনিংস শেষ হয়ে যায় ১৩৩ রানে।
জবাবে বঙ্গ প্রতিরোধের একমাত্র মুখ হিসেবে দেখা গেল মনোজকে। বাংলার অধিনায়ক যখন ব্যাট করতে নামেন, তাঁর টিম ৪০-৪। ফিরে গিয়েছেন অভিমন্যু ঈশ্বরন (১৩), সায়নশেখর মণ্ডল (৭), অগ্নিভ পান (৪) এবং সুদীপ চট্টোপাধ্যায় (১৬)। সেখান থেকে টিমকে অর্ধেকের বেশি রাস্তা পার করিয়ে দিয়েছিলেন মনোজ। ছ’টা বাউন্ডারি-সহ ৪৮ বলে ৩৯ করে মনোজ যখন আউট হন, তাঁর টিমের দরকার ছিল আর গোটা ষাটেক রান। পঞ্চম উইকেটে পঙ্কজ শ-র (১৬) সঙ্গে তাঁর ৫৪ রানের পার্টনারশিপ বাংলা ক্রিকেটপ্রেমীদের জয়ের ভাল রকম আশা দেখিয়েছিল।
মনোজ ফিরে যাওয়ার পর শ্রীবৎস গোস্বামী (২৬ ন.আ.) একটা চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তাঁর সঙ্গে লড়ার আর কেউ ছিলেন না। শেষ পর্যন্ত ৪৬ ওভারে মুড়িয়ে যায় বাংলার দ্বিতীয় ইনিংস। প্রথম ইনিংসে সাত উইকেট নেওয়া বরোদা পেসার অতীত শেঠ এ দিন তিনটে উইকেট তুলে নেন। দুটো ইনিংস মিলিয়ে দশ উইকেট নিলেন তিনি।
বরোদা এবং বাংলার দ্বিতীয় ইনিংস শেষ হয়ে যায় একই স্কোরে— ১৩৩। প্রথম ইনিংসে বরোদা যে ২১ রানের লিড নিয়েছিল, শেষমেশ জয়ের ব্যবধান সেটাই দাঁড়াল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বরোদা
৯৭ ও ১৩৩ (কেদার দেওধর ৩৮, মুকেশ ৫-৪৫, অমিত কুইলা ৩-৩২, দিন্দা ২-৫০)
বাংলা
৭৬ ও ১৩৩ (মনোজ ৩৯, শ্রীবৎস ২৬ ন.আ., অতীত ৩-৫৮, বাবাশাফি পাঠান ৩-৩৪, ইরফান পাঠান ২-১৭)।