অতিথি সৎকার— রাজকোটে ভারতের চিন্তায় বোধহয় সবার শেষে থাকবে এই শব্দ দুটো!
অতিথি হিসেবে ২০১২-এ খুব ভদ্র ছিল না ইংল্যান্ড। আসবাবপত্র ভেঙে, কাপ-প্লেট চুরমার করে, সবটুকু কেক আর পানীয় শেষ করে, ভারতের মুখে ডিম ছুড়ে বাড়ি চলে গিয়েছিল। ২০১৪ সালে নিমন্ত্রণকর্তা হিসেবেও ইংল্যান্ডকে আদর্শ বলা যায় না। ওরা টেবল সাজিয়েছিল একটাই জিনিস দিয়ে। ভারতের ধ্বংসাবশেষ। ভারতও পাল্টা মারের জন্য মুখিয়ে।
খেলাধুলোয় মাত্রাতিরিক্ত ক্রোধ যদিও সব সময় ফাঁদ। তাই ভারতকে পদ্ধতিটা উপেক্ষা করলে চলবে না। বলের বিরুদ্ধে লড়তে হবে, বিপক্ষের বিরুদ্ধে নয়। আর বদলা ব্যাপারটা যত বিলম্বিত হয়, ততই তার মজা বাড়ে। সিরিজে ফেভারিট ভারত। আর তার কারণ এই নয় যে, ওদের পিছনে সহানুভূতি কমিশন কাজ করছে।
স্পিন অবশ্যই এমন একটা দৈত্য যে পুরোপুরি ভারতের বশে। এটা অনেকটা সিংহের ডেরায় ঢোকার মতো। যেখান থেকে অক্ষত অবস্থায় বেরনোর কোনও সুযোগ নেই। এতটাই যে, অমিত মিশ্রকে বিশেষ ভূমিকায় নামাতে পারে ভারত। বিশেষ করে যদি হার্দিক পাণ্ড্য সুযোগ পায়। বিখ্যাত ভূমিপুত্র রবীন্দ্র জাডেজার জন্য পিচ নির্দয় হবে বলে মনে হয় না। বরং ওর জন্য দারুণ কিছু নিয়ে অপেক্ষা করে থাকতে পারে।
অ্যালিস্টার কুক আর জো রুটের বংশগরিমা ছাড়াও ইংল্যান্ডের অনেক কিছু দরকার হবে। ওদের সেরা বাজি সুইপ করা। টম ল্যাথাম নিউজিল্যান্ড সিরিজে যেটা করেছিল। ইতিবাচক থাকাটাও জরুরি, কারণ সব সময় স্ট্রাইক রোটেট করতে হবে। পরপর কয়েকটা মে়ডেন ওভার হতে দেওয়া মানে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মৃত্যু।
ব্যাটিং গভীরতা ইংল্যান্ডকে সাহায্য করবে। নীচের দিকে বেন স্টোকস অসাধারণ ব্যাট। বাঁ-হাতিরা সাধারণত যেমন হয়, মইন আলিও সে রকম মসৃণ। ও সকাল থেকে সন্ধে ক্রিজেও পড়ে থাকতে পারে। সব কিছু ব্যর্থ হলেও বিমা হিসেবে থাকছে জনি বেয়ারস্টো আর ক্রিস ওকস। ইংল্যান্ড দলটা ভাল। লম্বা সিরিজে পিছিয়ে গেলেও তাই ফিরে আসার সম্ভাবনা ওদের ভালই আছে।
যে কোনও সফরকারী দলের কাছে ভারত অমঙ্গলের প্রতীক। কারণ দলে যতই চোট-আঘাত থাকুক না কেন, দেশের মাটিতে টেস্টে ভারত প্রায় অপরাজেয়। প্রায় দুটো মরসুম ধরে ব্যাটিংয়ের ল্যাজ দারুণ করে যাচ্ছে। এখন তো দশ উইকেট না পড়া পর্যন্ত বলাও যায় না যে, ভারতীয় ইনিংস শেষ হয়ে গিয়েছে। সামনের কয়েকটা সপ্তাহ রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে প্রচুর দেখবে ইংল্যান্ড। বল হাতে তো বটেই, ব্যাট হাতেও। এখন তো মনে হয় চেন্নাইয়ের এই ছেলেটাই অর্ধেক ভারতীয় দল!