গম্ভীর-হাসি। শুক্রবার ইডেনে প্র্যাকটিসে। ছবি: উৎপল সরকার।
একের পর এক ক্রুদ্ধ হুঙ্কার ছাড়ছেন বিরাট কোহলি। তাঁর টিমের মননে নাকি একটা অসম্ভব রাগ জমা হচ্ছে! এই যে বছরের পর বছর আইপিএল আসে, আর আরসিবি দুর্ধর্ষ টিম নিয়েও তৃষ্ণার্ত থেকে যায়, ব্যাপারটা মোটেও তাঁর আর সহ্য হচ্ছে না। কেকেআর কেন, সমস্ত প্রতিপক্ষকে অদৃশ্য বার্তা দিয়ে রাখছেন যে, আইপিএলে আটে আসল কোহলিকে দেখা যাবে! বোঝা যাবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বিরাট কোহলি কী বস্তু!
ক্রিস গেইল নাকি এখন অসম্ভব ফিট। নেটে অবলীলায় সেই পেসার-স্পিনার নির্বিশেষে তুলে তুলে ফেলছেন। মাথায় সেই পরিচিত ‘ব্যান্ডানা’, চোখের দৃষ্টিতে চেনা শীতল জিঘাংসা। আরসিবি বলছে, তারা নাকি এত ফিট, এত পরিশ্রমী আর আর টগবগে ক্রিস গেইল গত তিন বছরে দেখেনি! ঠিক কী বলতে চাওয়া হল? এখনও আসল গেইল-প্রহারের নমুনা কি দেখা যায়নি যা গত তিন বছর আইপিএল দেখেছে?
নামটা শুনেই হেসে ফেলেন মর্নি মর্কেল। কী বলবেন বন্ধুকে নিয়ে? দক্ষিণ আফ্রিকা নেটে বল করে-করে ভালই জানেন, এবিডিকে নিয়ে প্ল্যান করে কোনও লাভ নেই। ডে’ভিলিয়ার্স চললে স্রেফ দাঁড়িয়ে দেখতে হবে। তিনশো ষাট ডিগ্রি অ্যাঙ্গলে সব শট খেলবে!
আরসিবি বনাম কেকেআর প্রাক্-যুদ্ধের কয়েকটা টুকরো ছবি যা ম্যাচকে ঘিরে গনগনে উত্তাপটা বুঝিয়ে দেবে প্রতি মিনিটে। একটা টিম কাপ ফেভারিটদের মধ্যে থাকে সব সময় আর শেষে কাপ আর ঠোঁটের দূরত্বটা থেকেই যায়। বিশ্ব ক্রিকেটের মানদণ্ডে বললে বলতে হবে, ‘আইপিএলের দক্ষিণ আফ্রিকা’! অন্য টিমটা তারকা নয় কিন্তু কার্যকরী ক্রিকেটারদের নিয়ে টিম করে ইতিহাস তৈরি করছে বছরের পর বছর। ছুটিয়ে চলেছে অশ্বমেধের ঘোড়া। তাদের অধিনায়ক শপথ নিয়ে ফেলে দরকারে খানপনেরো ব্যাটও ভেঙে ফেলবেন। শুধু তাঁর তিন নম্বর আইপিএল ট্রফিটা চাই।
বিকেলে ক্লাবহাউস গেটের বাইরে দেখা গেল, ক্রিকেটপ্রেমীদের তুমুল হর্ষধ্বনির উত্তর অদ্ভুত কায়দায় দিচ্ছেন ডে’ভিলিয়ার্স। কখনও দু’হাত উপরে তুলে দিচ্ছেন, কখনও আবার সেই দু’টোকে নামিয়ে ‘বাও’ করছেন। ফোনে কিছু একটা এল, সেটাকে নিয়ে সতীর্থের সঙ্গে তুমুল হাসতে-হাসতে ড্রেসিংরুমে ঢুকে গেলেন। এক কথায়, অসম্ভব ফুরফুরে। আর সেটাই বোধহয় চাপ বাড়াচ্ছে কেকেআর-মনঃস্তত্বে। মর্নি মর্কেলকে ধরা যাক। পরিষ্কার বলে গেলেন, ‘‘ওকে নিয়ে আলাদা প্ল্যান করে কি কোনও লাভ হবে নাকি? ওর গেম রিডিংটা দেখেছেন? কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ফিল্ড প্লেসিংটা মাথায় তুলে নেবে। আর নিয়ে মাঠের ফাঁকফোকরগুলো খুঁজে নেবে। তিনশো ষাট ডিগ্রি শট খেলবে। ওকে নিয়ে তাই প্ল্যান করছি না। বরং ওর সঙ্গে যুদ্ধটা উপভোগ করব, এটা ভেবেই নামছি।’’
যে মনোভাব স্বাভাবিক। গত আইপিএলে এবি-র পাল্লায় পড়ে স্টেইন পর্যন্ত রক্তাক্ত হয়েছিলেন। তার উপর ইডেন উইকেট এখন একশো সত্তর প্লাসেও নিশ্চিন্ত থাকতে দিচ্ছে না। উইকেটের গতি ও বাউন্সে যদি মর্কেলের লাভ হয়, তা হলে এবিরও কিন্তু সুবিধে হবে। কারণ বল ব্যাটে আসবে ভাল। শোনা গেল, মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ম্যাচের টিম পাল্টাচ্ছে না কেকেআর। উইকেট-চরিত্রের মতো সেটাও অপরিবর্তিত থাকছে। সুনীল নারিন— তাঁকেও নিয়েও প্রতিপক্ষের ভাবনা আদি এবং অকৃত্রিম। যতই মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে তাঁর চার ওভারে ২৮ দেওয়া নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হোক কোনও কোনও মহলে, আরসিবির ডাকাবুকো অধিনায়ক কিন্তু বলে দিয়ে গেলেন, নারিনের বলের গতিটা কমেছে মাত্র। বাকি সব এক। বিরাটের মনে হয়, অ্যাকশনের জন্য নারিন এত দিন উইকেট পাননি। পেয়েছেন স্কিল আছে বলে।
পারস্পরিক সমীহের ম্যাচটা ‘ওয়ান অল’। শুধু একটা জিনিসই এখন দেখার। স্কিল বনাম স্কিল— ম্যাচটা এখন কে জেতে? ক্রিকেটের ‘ডেভিল’? নাকি সেই কোনও এক সুনীল নারিন?
জিতল রাজস্থান
সংবাদ সংস্থা • পুণে
আইপিএল আটে জিতে শুরু করল রাজস্থান। গত বারের ফাইনালিস্ট কিংস ইলেভেন পঞ্জাবকে ২৬ রানে হারিয়ে। আগে ব্যাট করে ১৬২-৭ তোলে রাজস্থান। জেমস ফকনার ৩৩ বলে ৪৬ করেন। জবাবে ১৩৬-৮-এ শেষ পঞ্জাব। সর্বোচ্চ স্কোরার মুরলী বিজয় (৩৭)।