টিম গড়া আর সেটাকে চ্যাম্পিয়ন করা এক নয়

এই সাফল্য কোচিং কেরিয়ারে এভারেস্টে ওঠার মতো: সঞ্জয়

গোলদাতা বেলো রজ্জাকের উপর সতীর্থরা তখন ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। সেই দৃশ্য দেখতে দেখতে সঞ্জয় সেন বলে উঠলেন, ‘‘ও আমার জন টেরি।’’ ১৪ বছর হয়ে গেল তাঁর কেরিয়ারে। কিন্তু ধারাবাহিকতাটা এখনও ধরে রেখেছেন বেলো। তাই হয়তো প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন চেলসির তারকা ফুটবলারের সঙ্গে বেলোর তুলনা করার সময় মুখে তৃপ্তির হাসি আই লিগ চ্যাম্পিয়ন কোচের। আইলিগের সেরা ডিফেন্ডার ও ফাইনালের সেরা ফুটবলারের পুরস্কার জেতা বেলোর প্রশংসা তো আছেই।

Advertisement

রতন চক্রবর্তী

বেঙ্গালুরু শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০১৫ ০৪:২৯
Share:

অবশেষে বাগানে বসন্ত। রবিবার রাতে মোহনবাগান তাঁবু। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস

গোলদাতা বেলো রজ্জাকের উপর সতীর্থরা তখন ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। সেই দৃশ্য দেখতে দেখতে সঞ্জয় সেন বলে উঠলেন, ‘‘ও আমার জন টেরি।’’
১৪ বছর হয়ে গেল তাঁর কেরিয়ারে। কিন্তু ধারাবাহিকতাটা এখনও ধরে রেখেছেন বেলো। তাই হয়তো প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন চেলসির তারকা ফুটবলারের সঙ্গে বেলোর তুলনা করার সময় মুখে তৃপ্তির হাসি আই লিগ চ্যাম্পিয়ন কোচের।
আইলিগের সেরা ডিফেন্ডার ও ফাইনালের সেরা ফুটবলারের পুরস্কার জেতা বেলোর প্রশংসা তো আছেই। কিন্তু তাঁর নিজের কেরিয়ারে এটা কত বড় সাফল্য? সঞ্জয় বলে দেন, ‘‘কেরিয়ারের সেরা সাফল্য। একটা লক্ষ্য নিয়ে মোহনবাগানে কোচিং করাতে এসেছিলাম। এই জয়ে কোচিং কেরিয়ারে এভারেস্টে উঠতে পারলাম।’’ তবে বেলোর প্রশংসা করলেও টিমের সাফল্যের পিছনে তারকা নয়, সঞ্জয় টিম গেমেরই জয় দেখছেন। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন ব্যারেটো, ওডাফারা একা কতগুলো ট্রফি জিতিয়েছেন? আসল তো টিমই।
কঠিন সময়ে মোহনবাগানের কোচিংয়ের দায়িত্ব নেওয়ার সময় তাঁকে কটাক্ষ কম শুনতে হয়নি। বড় ক্লাবে খেলেননি, মোহনবাগানে তাই কোচিংয়ে সাফল্য পাবেন কি না অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। তাই পাল্টা আজ কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি তিনি। ‘‘বড় দলে খেললেই যে কোচ হিসেবে সাফল্য পাওয়া যায় না সেটা প্রমাণ হয়ে গেল। ফেড কাপ জিততে পারিনি কারণ তখনও টিমটাকে ঠিক গুছিয়ে তুলতে পারিনি। আই লিগে কিন্তু আত্মবিশ্বাসী ছিলাম আমরাই জিতব।’’ টিমের এই সাফল্য তাঁকে উপেক্ষা করার জবাবও। বেঙ্গালুরুর বিদেশি কোচ তাঁকে পাত্তাই দিতে চাননি। বাগান কোচ বলে দেন, ‘‘অ্যাশলে ওয়েস্টউড আমাকে খাটো করেছিল। বলেছিল সহজেই ছিটকে দেবে। কিন্তু আমার টিমের উপর আস্থা ছিল।’’

Advertisement

রবিবার বিরতির আগে এক গোলে পিছিয়ে থাকার সময়ও যে আত্মবিশ্বাস অটুট ছিল সেটাও বুঝিয়ে দেন মোহন কোচ। ‘‘সুযোগগুলো কাজে লাগালে ম্যাচটা আমাদের তিন-চার গোলে জেতা উচিত ছিল। তবে বিরতিতে এক গোলে পিছিয়ে থাকার সময়ও ছেলেদের বলেছিলাম শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করতে হবে। সেটাই হয়েছে। এই ম্যাচটায় আমরা যে ভাবে উঠে দাঁড়িয়েছি তাতে এটা প্রমাণ হয় দলটা কত জেদি।’’

ফেড কাপে ব্যর্থতার পর আই লিগেও একই ফল হলে আগামী মরসুম দায়িত্বে থাকবেন কি না ভাবছিলেন। বেঙ্গালুরুতে ঐতিহাসিক ম্যাচের পর সঞ্জয়
ঠিক করে ফেলেছেন পরের মরসুমেও বাগানেই থাকবেন। তবে, উচ্ছ্বাসের দিনে সঞ্জয় বিদেশি কোচদের কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি।

Advertisement

বাংলার কোচেরাও যে বিদেশিদের তুলনায় কম যায় না, সেটাই কি স্পষ্ট হয়ে গেল মোহনবাগানের কৃতিত্বে? সঞ্জয় বলে দেন, ‘‘কর্মকর্তারা কী করবেন জানি না, তবে বাংলার কোচেদের উপর আস্থা রাখলে সাফল্য আসবেই। এই জয়টা শুধু মোহনবাগানের নয়, জয়টা বাংলার, কলকাতার ফুটবলেরও।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন