রিয়ালের সামনে ঝোড়ো বায়ার্ন

শুক্রবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনাল ড্র হওয়ার পর বিশ্বফুটবল যেন দু’ভাগ। কাকে ছেড়ে কাকে দেখবে। এটা তো শুধু মাত্র একটা লড়াই নয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৭ ০৩:৩৩
Share:

শুক্রবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনাল ড্র হওয়ার পর বিশ্বফুটবল যেন দু’ভাগ। কাকে ছেড়ে কাকে দেখবে। এটা তো শুধু মাত্র একটা লড়াই নয়। বরং শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের সর্বশেষ মঞ্চ। মহাতারকাদের কোলাজ। যে কোলাজে স্কিলও দেখা যাবে। আবার হয়তো চোখ ধাঁধানো গোলও। ম্যাচটা—রিয়াল মাদ্রিদ বনাম বায়ার্ন মিউনিখ।

Advertisement

স্পেনের বিখ্যাত ফুটবল সাম্রাজ্যের সামনে জার্মানির হলিউড। যেন রূপকথার পাতা থেকে তুলে আনা কোনও ম্যাচ।

দাঁড়িপাল্লায় রাখলে এ যেন গোলিয়াথ বনাম গোলিয়াথ। তবে দলের নিরিখে বায়ার্ন এ বার অবিসংবাদিত ভাবে এগিয়ে। গোলে একজন ম্যানুয়েল নিউয়ার থেকে রক্ষণে ম্যাটস হুমেলস-জাভি মার্তিনেজ। উইংব্যাকে দাভিদ আলাবা ও ফিলিপ লাম।

Advertisement

মাঝমাঠে ভিদাল, থিয়াগো, জাবি আলোন্সো। উইং জুড়ে রবেন, রিবেরি, ডগলাস কোস্তা। ফরোয়ার্ডে লেয়নডস্কি। যাঁর থেকে একমাত্র লুইস সুয়ারেজকে এই মুহূর্তে এগিয়ে রাখা যায়। মাঝমাঠ এতটাই ভাল যে প্রতি সপ্তাহে সেটা পাল্টাতে হয়।

বায়ার্নকে স্বপ্নের দল বললেও কম বলা হয়। এই দল চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতবে না তো কে জিতবে। আর কোন ক্লাব আছে যারা টমাস মুলারকে অর্ধেক মরসুম রিজার্ভে বসানোর সাহস দেখাবে। বা রেনাতো সাঞ্চেজ, কিংগসলি কোমানের মতো উঠতি তারকাদের ম্যাচ শেষের কিছু মিনিট আগে নামাবে।

বায়ার্ন কোচ কার্লো আনচেলোত্তির সঙ্গে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রোমান্টিক সফর বহু বছরের। আর্সেন ওয়েঙ্গারের মতো কোচ কুড়ি বছর একটা ক্লাবে থেকে এক বার মাত্র চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে পৌঁছেছেন। সেই তুলনায় আনচেলোত্তির তিন বার জেতা হয়ে গিয়েছে। দু’বার এসি মিলানের সঙ্গে। আর একবার রিয়ালের হয়ে। বিশ্বফুটবলে কথাই আছে, কোনও তারকাখচিত দলকে সবচেয়ে ভাল ম্যানেজ করতে পারেন আনচেলোত্তি। তাঁর মতো ম্যান ম্যানেজার আর কেউ নেই। ট্যাকটিশিয়ান হিসেবেই তো কিছু কম জান না। ৪-২-৩-১ ছকে বায়ার্নকে খেলান তিনি। মাঝমাঠের সেই ডাবল পিভটের উপর জোর দিতে ভালবাসেন। উইং ব্যাকদের ওভারল্যাপ করানো। সর্বদা ক্রস বাড়িয়ে যাওয়া।

শেষ আটের যুদ্ধে

• ১১ এপ্রিল: য়ুভেন্তাস বনাম বার্সেলোনা (রাত ১২-১৫), বরুসিয়া ডর্টমুন্ড বনাম মোনাকো (রাত ১২-১৫)

• ১২ এপ্রিল: আতলেতিকো দে মাদ্রিদ বনাম লেস্টার সিটি (রাত ১২-১৫), বায়ার্ন মিউনিখ বনাম রিয়াল মাদ্রিদ (রাত ১২-১৫)

• ১৮ এপ্রিল: লেস্টার সিটি বনাম আতলেতিকো দে মাদ্রিদ (রাত ১২-১৫), রিয়াল মাদ্রিদ বনাম বায়ার্ন মিউনিখ (রাত ১২-১৫)

• ১৯ এপ্রিল: মোনাকো বনাম বরুসিয়া ডর্টমুন্ড (রাত ১২-১৫), বার্সেলোনা বনাম য়ুভেন্তাস (রাত ১২-১৫)

গত বারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদের সবচেয়ে বড় সমাধান যদি বিবিসি হয়। তা হলে এখন সবচেয়ে বড় সমস্যাও হয়ে উঠেছে এই ত্রিফলা। কোথায় সেই ফরোয়ার্ড লাইন? যাঁরা লা ডেসিমা তুলে এনেছিল।

রিয়াল বরাবর গতির উপরে খেলে। প্রেস করতে থাকে যাতে প্রতিআক্রমণে বেল, রোনাল্ডোদের গতি কাজে লাগাতে পারে। আনচেলোত্তির এক সময়ের সহকারি জিদানও তাঁর পূর্বসূরির সেই ফর্মুলা প্রয়োগ করছেন। কিন্তু এই মরসুমে গ্যারেথ বেল অর্ধেক মরসুম চোটে ভুগেছেন। বেঞ্জিমা কী করে মোরাতাকে বেঞ্চে বসিয়া রাখছে সেটাই রহস্য। রোনাল্ডোও গত কয়েক মরসুমের সেই সোনার ফর্ম দেখাতে ব্যর্থ।

ইতিহাস বলছে বায়ার্ন এগিয়ে। অবশ্যই খাতায়কলমেও বায়ার্ন ফেভারিট। কিন্তু রিয়ালে সিআর সেভেন আছেন তো। যাঁর ক্ষমতা আছে যে কোনও সময় ম্যাচের ছবি পাল্টে দেওয়ার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন