অন্দর বদলাচ্ছে যুবভারতীর, বাইরে সেই জঞ্জালের স্তূপ

প্রায় এক বছর পর কৃত্রিম ঘাস পরিচর্যার কাজ হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মানের আর এক জোড়া ড্রেসিংরুম শেষ করতে দিন-রাত কাজ চলছে। চব্বিশটি কর্পোরেট বক্সের কাঠামো তৈরি শুরু হয়েছে সদ্য। ভিআইপি বক্সের দু’পাশে যা তৈরি হবে বারোটি করে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:৪৩
Share:

আইএসএল উদ্বোধনের আগে। যুবভারতীতে তৈরি হচ্ছে নতুন ড্রেসিংরুম। সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হওয়া নিয়ে প্রশ্ন অবশ্য থাকছেই। ছবি: উৎপল সরকার

প্রায় এক বছর পর কৃত্রিম ঘাস পরিচর্যার কাজ হচ্ছে।

Advertisement

আন্তর্জাতিক মানের আর এক জোড়া ড্রেসিংরুম শেষ করতে দিন-রাত কাজ চলছে।

চব্বিশটি কর্পোরেট বক্সের কাঠামো তৈরি শুরু হয়েছে সদ্য। ভিআইপি বক্সের দু’পাশে যা তৈরি হবে বারোটি করে।

Advertisement

বাথরুম সংস্কারের কাজও শেষের মুখে। সেখানে আধুনিক জিনিসপত্র লাগানো হচ্ছে।

ভিআইপি গ্যালারি থেকে চেয়ার তুলে দেওয়া হয়েছে। সেখানে নতুন চেয়ার নয়, সোফা বসাতে চাইছেন আটলেটিকো দে কলকাতার কর্তারা।

ভিআইপি বক্সের উল্টোদিকে পঁচিশ হাজার নতুন চেয়ার পাতার কাজও চলছে। পাতা হয়েছে অর্ধেক।

ফুটবল পক্ষ শুরু হতে আর আঠারো দিন বাকি। মাঝে আবার দুর্গাপুজো।

ভারতীয় ফুটবলের ইতিহাসে সবথেকে আড়ম্বরের টুর্নামেন্টের উদ্বোধনে বসবে তারকার মেলা। শুধু ফুটবল বিশ্বকাপার নন, ক্রিকেট, বলিউড, টলিউড তারকা হাজির থাকার কথা ১২ অক্টোবরের অনুষ্ঠানে। থাকবেন কর্পোরেট জগতের বহু লোকজন। কিন্তু উৎসব-বোধনের জন্য যুবভারতী কি প্রস্তুত হয়ে যাবে ওই সময়?

যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সংগঠকরা একসঙ্গে কাজ করলেও তা নিয়ে কিন্তু সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। এবং সেটা দুর্গাপুজোর জন্যই। পুজোর সময় সরকারি ছুটির মাঝে প্রায় আট দিন কতটা কাজ হবে তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন সব পক্ষই। অথচ কাজ বাকি প্রচুর। ক্রীড়া দফতরের যুগ্ম সচিব জ্যোতিষ্মান চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলছেন, “স্টেডিয়ামের ভিতরের কাজ শেষ হয়ে যাবে। তবে বাইরের সব কাজ হবে বলে মনে হয় না। যেমন জলের লাইনগুলো বদল বা জঞ্জাল সরানোর মতো কাজ।” আসলে ক্রীড়া দফতরের কর্তারা স্টেডিয়াম স্বয়ং সম্পূর্ণ করতে চান সামনের বছর স্টেডিয়াম বন্ধ রেখে। আই এস এল শেষ হওয়ার পর। জ্যোতিষ্মানবাবু বললেন, “অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপের জন্য স্টেডিয়াম স্বয়ং সম্পূর্ণ করে তোলাটাই আমাদের লক্ষ্য। আই এস এলের চেয়েও যা গুরুত্বপূণর্। একবছর বন্ধ রেখে পুরো কাজটা করতে হবে।”

মঙ্গলবার স্টেডিয়াম ঘুরে এবং বিভিন্ন দফতরের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে মনে হল উদ্বোধনের দিন ভিতরটা হয়তো শেষপর্যন্ত ঝাঁ চকচকে হয়ে উঠবে। কিন্তু স্টেডিয়ামের বাইরে থেকে যাবে জঞ্জাল। জল উপচে পড়া ড্রেন। সংগঠকরা অস্থায়ী স্কোর বোর্ড, সাজানো-গোছানো নতুন রিজার্ভ বেঞ্চ, ইলেকট্রনিক বিজ্ঞাপন বোর্ড লাগিয়ে মাঠ আলোকিত করবেন বলে ঠিক করেছেন। কিন্তু মাঠের বাইরে কী হবে? সেখানে তো কোনও পরিবর্তনের সম্ভবনাই নেই। চারিদিকে এখনও জঞ্জালে ভর্তি। বড় বড় ঘাসের জঙ্গল। শুকনো গাছের ডালপালা, উপচে পড়া ড্রেনের জল দুর্গন্ধ ছাড়াবে ম্যাচের দিনগুলিতে। জঙ্গল থেকে মাঝেমধ্যেই বেরিয়ে পড়তে পারে সাপও। ভি আই পি বক্স থেকে তুলে ফেলা পুরানো চেয়ার ডাঁই করে রাখা রয়েছে প্রধান গেটে ঢোকার রাস্তার পাশে। সেগুলো পাঠানো হবে রবীন্দ্র সরোবর স্টেডিয়ামে। কবে? কেউ জানে না। আসলে মাঠের বাইরের স্টেডিয়াম চত্ত্বর সাফ-সুতরো করার কথা ক্রীড়া দফতরের। আই এস এলের আগে তাদের এ সব কাজ করার কোনও পরিকল্পনা নেই।

সুপার লিগের সংগঠকরা ফ্র্যাঞ্চাইজিদের দল কেনার সময় বারবার বলে দিয়েছেন, ক্রিকেট মাঠের মতো দর্শক স্বাচ্ছন্দ্য যেন সব স্টেডিয়ামে থাকে। আই এস এলে যেটা সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। কোচি ছাড়া দেশের বাকি প্রায় সব স্টেডিয়ামেই সেটা হয়ে গেছে বলে দাবি আই এম জি কর্তাদের। কিন্তু যুবভারতীতে সেটা কোথায়? খাবারের স্টল হবে বলে ঠিক হয়েছে। সেখানে জলের পাউচও বিক্রি করা হবে। ব্যাস এই টুকুই। কিন্তু দর্শকরা যেখান থেকে ঢুকবেন সেখানে তো রাস্তা জুড়ে জঞ্জাল, গাছ। আর যেখানে দু’শো-তিনশোর টিকিট কেটে বসবেন দশর্করা সেই গ্যালারিতে তো শ্যাওলা ভর্তি। গ্যালারিতে রং করা হবে? ক্রীড়া দফতরের যুগ্মসচিব বললেন, “রং করার সময় কোথায়? এখন সম্ভব নয়। যুব বিশ্বকাপের আগে সব হয়ে যাবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন