উৎসাহ: লুঝনিকি স্টেডিয়ামে শিলিগুড়ির দর্শক। নিজস্ব চিত্র
ফুটবল সব দূরত্ব ঘুচিয়ে দেয়। শিলিগুড়ি থেকে মস্কোয় বিশ্বকাপ দেখতে এসে বারেবারেই এমন মনে হচ্ছে। এখানে রাস্তাঘাটে ভাষার সমস্যা হচ্ছে। কারণ, অনেকেই ইংরেজি জানেন না। কিন্তু ভিন্দেশি অতিথিদের সাহায্য করতে ঝাঁপিয়ে পড়়ছেন সকলেই। ফুটবল বিশ্বকাপের জন্য অনেক স্বেচ্ছাসেবকও দেখছি।
মঙ্গলবার ফুটবল ফ্যানদের জন্য নির্দিষ্ট জায়গায় ঢাউস পর্দায় ম্যাচ দেখতে গিয়েছিলাম। ফেরার সময়ে মেট্রো রেল বন্ধ ছিল। অগত্যা হেঁটে প্রায় ৬ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে ট্যাক্সি ধরতে হয়েছে। সে সময়ে রাস্তা যাতে ভুল না হয় ওই দেশের নাগরিকরাই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। আমার সঙ্গী অনির্বাণ দত্ত, বিপ্লব সেন, সমীরণ ঘোষ, উত্তীয় লাহা, সজল দেব সহ উত্তরবঙ্গের সকলেই এই সহযোগিতায় অভিভূত। এঁদের মধ্যে বিপ্লব অবশ্য কর্মসূত্রে ম্যানিলায় থাকে।
বুধবারের পর্তুগাল-মরক্কো ম্যাচের টিকিট কেটেছিলাম অনেক আগেই। সেই ম্যাচ দেখতে আমাদের জাতীয় পতাকা নিয়ে গিয়েছিলাম। তা দেখে নানা দেশের লোকজন এগিয়ে এসে হাত মেলালেন, ভাঙা ভাঙা ইংরেজিতে গল্পও চলল। ভারতীয়দের ফুটবলের প্রতি ভালবাসাকে স্যালুট করলেন কেউ কেউ। মাঠে বসে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর খেলা দেখার সময় গায়ে কাঁটা দিচ্ছিল। আর যখন রোনাল্ডো গোল দিল, তখন চিৎকারে স্টেডিয়ামে কান পাতা দায়। খেলা শেষের পরেও ঘোর কাটছিল না। শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে কবে এমন কানায় কানায় ভরা দর্শকাসনে ফুটবল ম্যাচ দেখব সেটাই ভাবছিলাম।
বিশ্বকাপ দেখতে এসে খাওয়া নিয়ে তেমন বাছবিচার করছি না। এ দেশে দেখছি ‘বেকড’ আর ‘বয়েলড’-এর কদর বেশি। ভারতীয় খাবার খুঁজলে খাবার নাও জুটতে পারে। সে এক অভিজ্ঞতা। (লেখক: শিলিগুড়ির এক ক্রীড়াপ্রেমী)