মরসুমের প্রথম ডার্বিতে বিশ্রী হারের পর বিরক্ত হলেও এখনই সুভাষ ভৌমিককে সরাতে নারাজ বাগান কর্তারা। বরং বাগান টিডি-কে আরও কিছু দিন সময় দিতে চান তাঁরা। এখন পর্যন্ত যা পরিস্থিতি তাতে, কলকাতা লিগের বাকি পাঁচ ম্যাচই লাইফ লাইন সুভাষের।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে ক্লাব কর্তারা আলোচনায় বসছেন টিডি এবং টেকনিক্যাল কমিটির সঙ্গে। সেখানে রবিবারের হারের পর্যালোচনা করা হবে। সব রকম সুযোগ সুবিধা পাওয়া সত্ত্বেও কেন বলবন্ত সিংহ-শিল্টন পালরা ব্যর্থ হলেন তার কারণ জানতে চাওয়া হবে। কর্মসমিতির অনেক সদস্য ইতিমধ্যেই সুভাষের বদল চেয়েছেন। মোহনবাগানের ঘরের ছেলে বলে পরিচিত এক প্রাক্তন ফুটবলারও এ দিন ফোন করে সুভাষকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য কর্তাদের বলেন। শীর্ষকর্তারা অবশ্য একটা ম্যাচ হারের জন্য দলের টিডিকে কাঠগড়ায় তুলতে নারাজ। তবে জানা গিয়েছে, নিজেদের মধ্যে আলোচনায় তাঁরা ঠিক করেছেন, সুভাষ যদি কলকাতা লিগের বাকি পাঁচ ম্যাচের সব কটিতে জেতেন তা হলে তাঁকে ছাঁটাই করা হবে না। বাগানের এক শীর্ষকর্তা বললেন, “আমরা খেতাব পাই না পাই, কলকাতা লিগের বাকি ম্যাচগুলো কিন্তু জিততেই হবে। না হলে আমাদের অন্য কিছু ভাবতে হবে।” বাগান কর্তারা জানেন সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি কলকাতা লিগ শেষ হচ্ছে। তারপর তিন মাস কোনও টুর্নামেন্ট নেই। টিডি যদি বদলাতেই হয়, তা হলে ওই সময়ই বদলানো ভাল। যাতে নতুন যেই আসুন, দলটা নিজের মতো করে তৈরি করার সময় পান।
যাঁকে নিয়ে এত আলোচনা সেই সুভাষ ভৌমিক এ দিন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেননি। তাঁর মোবাইল বেজে গিয়েছে, ধরেননি। কর্তারা অবশ্য ওটাই চাইছেন। তাদের বক্তব্য, মরসুম শুরুর সময় মুখ বন্ধ করে থাকলেও যত দিন গড়িয়েছে ততই সুভাষ এমন সব কথাবার্তা বলেছেন, যাতে বিরুপ প্রতিক্রিয়া হয়েছে সদস্য-সমর্থকদের মধ্যে। মহমেডান ম্যাচে হারের পর এক কর্তা ড্রেসিংরুমে বলেন, আত্মতুষ্টির জন্য হেরেছে দল। সুভাষ না কি তা মানতে চাননি। ডার্বি হারের পরও কর্তারা ড্রেসিংরুমেই তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়েন টিডি-সহ পুরো টিমের সামনে। সেখানেও তাঁরা বলেন, “ডার্বি জেতার জন্য যে সিরিয়াস হওয়ার দরকার ছিল সেটা কেউই ছিলেন না। ম্যাচের আগের দিন ড্রেসিংরুমে এমন একটা পরিবেশ তৈরি করা হয়েছিল যে, বাগান যেন ডার্বি জিতেই গিয়েছে। এটাই কাল হয়েছে।”
ক্লাব সূত্রের খবর, চার বিদেশির মধ্যে সনি নর্ডি এবং কাতসুমিকে বেছেছেন কর্তারা। বোয়া এবং ফাতাইকে বেছেছেন টিডি সুভাষ। ডার্বিতে বোয়ার পারফরম্যান্স দেখার পর বিরক্ত সুভাষ তাঁকে বদলানোর কথা বলেছিলেন কর্তাদের। কিন্তু তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বোয়ার সঙ্গে এক বছরের চুক্তি। ছাঁটাই করতে গিয়ে ফিফার কোপে পড়তে চায় না ক্লাব। ফাতাইয়ের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। যা পরিস্থিতি তাতে বোয়া এবং ফাতাই থেকে যাচ্ছেন। ওদের বইতে হচ্ছেই।
ইন্ডিয়ান সুপার লিগ খেলতে বাগানের দশ ফুটবলার চলে গিয়েছেন। ঠিক ছিল, বলবন্ত সিংহকেও আটলেটিকো দে কলকাতাকে বিক্রি করা হবে। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আর্থিক ক্ষতি হলেও তাঁকে ছাড়া হচ্ছে না। যুবভারতীতে বুধবার ফের লিগের ম্যাচ খেলতে নামবেন কাতসুমিরা। সাইয়ের বিরুদ্ধে। এই ম্যাচ থেকেই শুরু হচ্ছে মোহন-টিডির লাইফ লাইন।