মোরের মন্ত্রেই অস্ট্রেলিয়া সফরে সাফল্য, গুরুকে ধন্যবাদ পন্থের

ইংল্যান্ড থেকে ফেরার পরে জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে মোরের কাছে কয়েক দিন ক্লাস করেছিলেন ঋষভ। যেখানে ঋষভের ছোটখাটো কয়েকটা ত্রুটি শুধরে দেন ভারতের প্রাক্তন কিপার। যা তাঁকে অস্ট্রেলিয়া সফরে দারুণ সাহায্য করেছে বলে জানাচ্ছেন ঋষভ।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৪:৩৮
Share:

প্রত্যয়ী: আইপিএলেও আগ্রাসন ধরে রাখবেন ঋষভ। ফাইল চিত্র

ইংল্যান্ড সফরে তাঁর ব্যাটিং প্রশংসিত হলেও উইকেটকিপিং সমালোচনার মুখে পড়েছিল। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া সফরে শুধু ব্যাটিংই নয়, ঋষভ পন্থের উইকেটকিপিংও প্রশংসা পেয়েছে ক্রিকেট মহলে। যে সফরে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন অ্যাডিলেড টেস্টে ১১টি শিকার নিয়ে বিশ্বরেকর্ড করে। কিপার হিসেবে তাঁর এই উত্থানের পিছনে কিরণ মোরেকে কৃতিত্ব দিচ্ছেন ঋষভ।

Advertisement

ইংল্যান্ড থেকে ফেরার পরে জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে মোরের কাছে কয়েক দিন ক্লাস করেছিলেন ঋষভ। যেখানে ঋষভের ছোটখাটো কয়েকটা ত্রুটি শুধরে দেন ভারতের প্রাক্তন কিপার। যা তাঁকে অস্ট্রেলিয়া সফরে দারুণ সাহায্য করেছে বলে জানাচ্ছেন ঋষভ। নিউজ়িল্যান্ড থেকে দেশে ফিরে সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে এক সাক্ষাৎকারে ঋষভ বলেছেন, ‘‘ইংল্যান্ডে কিপিং করাটা সম্পূর্ণ অন্য একটা অভিজ্ঞতা ছিল। এর পরে দেশে ফিরে আমি কয়েক দিন কিরণ স্যরের সঙ্গে কাজ করি। বিশেষ বিশেষ কিছু ব্যাপার নিয়ে আমরা আলোচনা করেছিলাম। কয়েকটা জিনিস ঠিকঠাক করে নিই। তার পরে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্টে কিপ করতে কোনও সমস্যা হয়নি।’’

ঠিক কী সমস্যার সমাধান করেছিলেন মোরে? ঋষভ এই নিয়ে মুখ খুলতে না চাইলেও মোরে বলেছেন, ‘‘ঋষভ আগে পাশাপাশি নড়াচড়া করত। আমি ওকে আরও ‘ওপেন স্টান্স’ নেওয়ার কথা বলি। যতটা সম্ভব সোজা থাকার কথা বলি। এতে কিপিং করার সময় শরীরের ভারসাম্যটা ঠিক থাকে, মাথাটা স্থির থাকে। মহেন্দ্র সিংহ ধোনির মধ্যে যে ব্যাপারটা দেখা যায়।’’ ঋষভের হাতের অবস্থানও ঠিক করে দিয়েছিলেন মোরে। তিনি বলেন, ‘‘আমি বলেছিলাম, আঙুলের মুখ বোলারের দিকে না রেখে মাটির দিকে রাখতে। এতে চোটের আশঙ্কা কমে। আবার ক্যাচ ধরার সম্ভাবনাও বাড়ে।’’

Advertisement

নিজের ক্রিকেট জীবনের শুরুতেই ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার মতো দুটো কঠিন বিদেশ সফরে অংশ নিয়েছিলেন ঋষভ। এই সংক্ষিপ্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট জীবনের টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে ঋষভ দেখাচ্ছেন ওভালের টেস্ট সেঞ্চুরিকে। এই তরুণ ক্রিকেটার বলেছেন, ‘‘ইংল্যান্ডে ওই সেঞ্চুরিটা পাওয়ার পরে আমার আত্মবিশ্বাস দারুণ ভাবে বেড়ে গিয়েছিল। তার পর থেকে আমি শুধু ভাবতাম আরও কী ভাবে নিজেকে উন্নত করা যায়। ইংল্যান্ডে যে শেখা শুরু হয়েছিল, অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে তার ফল পেয়েছি।’’

ঋষভের ব্যাটিংয়ে ঝুঁকি নেওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি। কখনও মনে হয় না, ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময় এ রকম আগ্রাসী মানসিকতা আপনার ক্ষতি করে দিতে পারে? এ রকম ব্যাটিং করার সময় কি নিরাপত্তাহীনতা ভোগায় না?

ঋষভের জবাব, ‘‘নিরাপত্তার অভাব সব সময়ই থাকবে। সে আপনি দেশের হয়ে খেলুন কি আইপিএলে। কিন্তু সেই নিরাপত্তাহীনতা দূরে সরিয়ে আপনি কী রকম খেলেন, সেটাই আসল কথা। ভারতীয় দলের হয়েই হোক বা আইপিএলে দিল্লির হয়ে, ম্যাচের গুরুত্ব সব সময়ই বেশি থাকবে। এই সব ম্যাচে খেলতে নামলে অন্য কিছু মাথায় রাখলে চলবে না। তা হলে মনঃসংযোগ নষ্ট হতে পারে।’’

আসন্ন অস্ট্রেলিয়া সিরিজের পরেই শুরু হচ্ছে আইপিএল। গত বছর দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের (এখন নাম বদলে দিল্লি ক্যাপিটালস) হয়ে ৬৮৪ রান করেছিলেন। এ বারও সেই ছন্দটা ধরে রাখতে চান। পাশাপাশি চান ব্যাটিং অর্ডারে উপরের দিকে নামতে। ঋষভের মন্তব্য, ‘‘ব্যাটসম্যান হিসেবে আমি সব সময় চাইব, যতটা বেশি সম্ভব উপরের দিকে খেলতে। কিন্তু টিম ম্যানেজমেন্ট কী ভাবে দল সাজাতে চাইছে, সেটাও একটা বড় ব্যাপার।’’

বাইশ গজে সফল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মাঠের বাইরেও তাঁর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। টুইটারে ইতিমধ্যেই ঋষভের অনুরাগীর সংখ্যা দু লক্ষ ৭৭ হাজার। কিন্তু ভক্তদের ভালবাসায় ভেসে যেতে চান না ঋষভ। তিনি বরং অনেক সতর্ক। ঋষভের কথায়, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ে সব সময় সতর্ক থাকতে হয়। জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকা মানে ব্যক্তিগত জীবনের বৃত্ত কমতে থাকা। মনে রাখতে হবে, প্রশংসা যেমন আসবে, তেমনই আসবে নেতিবাচক মন্তব্যও। যেটা সামলানোর জন্য তৈরি থাকতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন