সাতে ছয় করতে মরিয়া লাল-হলুদের সিংহ

জোসে ব্যারেটোর এই রেকর্ড নেই। নেই ভাইচুং ভুটিয়ারও। সবুজ-মেরুন জার্সিতে ব্যারেটো ৫২ ম্যাচে ১৭ গোল করেছেন। ভাইচুং ৫৩ ম্যাচে করেছেন ১৯ গোল। ওডাফা ওকোলিও থেমে গিয়েছেন। ন’টা ডার্বিতে তাঁর গোলের সংখ্যা চার।

Advertisement

রতন চক্রবর্তী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:৪১
Share:

অস্ত্রে শান। কাঞ্চনজঙ্ঘায় রবিন। শনিবার। -বিশ্বরূপ বসাক

জোসে ব্যারেটোর এই রেকর্ড নেই। নেই ভাইচুং ভুটিয়ারও।

Advertisement

সবুজ-মেরুন জার্সিতে ব্যারেটো ৫২ ম্যাচে ১৭ গোল করেছেন। ভাইচুং ৫৩ ম্যাচে করেছেন ১৯ গোল।

ওডাফা ওকোলিও থেমে গিয়েছেন। ন’টা ডার্বিতে তাঁর গোলের সংখ্যা চার।

Advertisement

এমন সব মহাতারকাকে টপকে, সবার অজান্তে ডার্বির এক অনন্য রেকর্ড সঙ্গে নিয়ে আজ রবিবার কাঞ্চনজঙ্ঘায় নামছেন লাল হলুদের সিংহ—রবিন।

ডার্বির দীর্ঘ বিরানব্বই বছরের ইতিহাসে শতাংশের হিসাবে রবিন সিংহের যা সাফল্য, তার ধারেকাছে কেউ নেই। ছ’টা ডার্বি খেলে পাঁচটা গোল! সাফল্য প্রায় নব্বই শতাংশের কাছাকাছি। ‘‘এটা যখন শুনি তখন ভাল লাগে। পরের মুহূর্তেই মনে হয় ওটা তো ইতিহাস, পরের ডার্বিতে গোলটা পাব কবে? টিমকে জেতাতে পারব তো?’’ ইস্টবেঙ্গলের টিম হোটেলে বসে যখন নয়ডার বোহেমিয়ান ছেলে এটা বলেন তখন তাঁকে দেখে বোঝা যাচ্ছিল, শিলিগুড়িতে নিজের সাত নম্বর ডার্বিতে গোল করে শতাংশের রেকর্ডটা অক্ষত রাখতে ঠিক কতটা মরিয়া।

বেঙ্গালুরুকে আই লিগ দিয়েছেন প্রথম বার। গত বার চোটের জন্য খেলতে পারেননি। এক সময় বেপরোয়া জীবনের জন্য ট্রেভর মর্গ্যান তাঁকে বাতিল করে দিয়েছিলেন। সেই মর্গ্যানের সঙ্গে পরামর্শ করেই আবার তাঁকে ফিরিয়ে এনেছেন লাল-হলুদ কর্তারা।

আশেপাশে তারকাদের ভিড়। ওয়েডসন গোল করছেন। উইলিস প্লাজার পা থেকে আসছে গোল। বুকেনিয়া, তাঁরও তো তিন গোল হয়ে গেল। এঁদের পাশে থেকে সব ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি রবিন। কিন্ত তা সত্ত্বেও তাঁর নামের পাশে চার ম্যাচে দু’গোল। ‘‘যদি কাল কোচ সুযোগ দেন, তা হলে দলকে জিতিয়ে ফিরব। এ বারও তো আমার গোল-সাফল্য পঞ্চাশ শতাংশ।’’ বলতে বলতে ‘‘ডার্বিতে গোল করার সঙ্গে অন্য কোনও ম্যাচে গোল করার তুলনা হয় না,’’ বলে থামেন মর্গ্যানের টিমের স্ট্রাইকার। যিনি মনে করেন, ‘‘গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে গোল করতে না পারলে কোনও স্ট্রাইকারের দাম থাকে না।’’

কলকাতায় সই করেই ডার্বি খেলতে চললেন ইস্টবেঙ্গলের নতুন বিদেশি ক্রিস পেইন। -শঙ্কর নাগ দাস

টিম হোটেলে তাঁর রুম মেট সঙ্গী স্ট্রাইকার উইলিস প্লাজা। রবিন বলছিলেন, ‘‘ওর সঙ্গে মাঠে যেমন আমার সমঝোতা তৈরি হয়েছে তেমন বাইরেও। শুধু ডার্বি নয়, ওর সঙ্গে আমার সব বিষয় নিয়ে কথা হয়। কাল মাঠে এই সমঝোতাটা কাজে লাগাতে হবে।’’

বেঙ্গালুরুতে অ্যাশলে ওয়েস্টউডের কোচিংয়ে খেলার সময় ডার্বি-জ্বর মিস করতেন, স্বীকারোক্তি দিয়ে রবিনের মন্তব্য,‘‘স্টেডিয়াম ভর্তি দর্শকের সামনে দৌড়তে একমজন অ্যাথলিটেরও ভাল লাগে। আমার তো ভাল লাগবেই। বেঙ্গালুরুতে সেটা মিস করতাম।’’ বহু দিন পর ছেলে ডার্বি খেলবে বলে তাঁর বাবা-মা আসতে পারেন আজ। সে রকমই ইঙ্গিত দিচ্ছেন মর্গ্যানের টিমের পয়মন্ত স্ট্রাইকার। রবিনের উচ্চতা আর ক্ষিপ্রতাই সেরা সম্পদ। সেটার দৌলতে কি মোহনবাগানের রক্ষণ টপকাতে পারবেন? রবিন হাসতে হাসতে বললেন, ‘‘আমি তো চাইব আমাকে ওরা আটকাতে যেন না পারে। কিন্তু ডার্বি তো। তাই সবাই সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করবে। সেটাও মাথায় রাখতে হবে।’’ রবিন উল্টো দিকে খেলবেন এবং সেট পিস থেকে হেডে গোল করায় তিনি দক্ষ, এটা মাথায় আছে সঞ্জয় সেনেরও। বাগান কোচ ঠিক করেছেন, এরিয়াল বলে রবিনের ভয়ঙ্কর হেড আটকাতে রক্ষণকে সতর্ক থাকতে বলবেন।

দেখার, তিন নতুন বিদেশির আড়ালে বেড়ে ওঠা স্বদেশিকে বাগান থামাতে পারে কি না। ডার্বিতে রবিন সিংহের ‘লাক’ কিন্তু হঠাৎ-ই রং ছড়াতে পারে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন