ইডেনের নেটে রোহিতের অপেক্ষা। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।
শুরু হয়ে গেল দেবীপক্ষ। বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসবের ঢাকে কাঠি পড়তে আর মাত্র ক’টা দিন বাকি। শহর অবশ্য এর মধ্যেই ঢুকে পড়েছে পুজো-মোডে। উৎসবের যে মেজাজটা ভারতের আড়াইশোতম হোম টেস্টের জন্য একেবারে আদর্শ। ঐতিহাসিক টেস্টের আদর্শ মঞ্চ হিসেবে তৈরি ইডেনও।
ভরা বর্ষার মধ্যেও মাঠ টেস্ট ক্রিকেটের উপযুক্ত করে তুলতে দিনরাত অসম্ভব পরিশ্রম করেছেন ইডেনের গ্রাউন্ডস স্টাফ। ওঁদের প্রত্যেককে একাটা বিশাল ধন্যবাদ। বিশেষ করে গত ক’দিন যে রকম বৃষ্টি হয়েছে তার পরেও যে পিচ আর আউটফিল্ড আড়াইশোতম টেস্টের জন্য তৈরি, সেটার কৃতিত্ব পুরোপুরি পিচ কিউরেটর এবং ওঁর টিমের।
ইডেনের পিচ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই অনেক কথা কানে আসছে। নানা রকম জল্পনা শুনছি। নিজে যা দেখছি এবং ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, ইডেনের উইকেটে শুরুতে আর্দ্রতা থাকবে। টানা বৃষ্টি চলছিল বলে পিচ ঢেকেই রাখতে হয়েছিল। মাটি তেমন রোদ পায়নি, কিছুটা স্যাঁতসেতে থেকে গিয়েছে। তবে আগামী ক’দিন যদি বৃষ্টি বন্ধ হয়ে বেশ ঝলমলে রোদ ওঠে তা হলে ম্যাচ যত গড়াবে, তত উইকেটে বল টার্ন করবে— উপমহাদেশের আবহাওয়ায় সাধারণত যে রকম হয়ে থাকে। সব মিলিয়ে আগামী ক’দিন ইডেনে ব্যাট বনাম বলের লড়াই জমে ওঠা উচিত।
লোকেশ রাহুলের জায়গায় শিখর ধবনকে নিয়ে আসার বাইরে ভারতীয় দলে তেমন কোনও পরিবর্তন করা হবে বলে আমার মনে হয় না। তা ছাড়া এই টিমটায় তেমন কোনও পরিবর্তনের প্রয়োজনও দেখছি না। ব্যাটসম্যানরা প্রত্যেকেই রীতিমতো ভাল ছন্দে আছে। এখনই বলে দেওয়া যায়, এই মুহূর্তে বিরাট কোহালির সমস্ত ফোকাস একটা বড় ইনিংস খেলার দিকে। তবে ইডেনে নামার জন্য সবচেয়ে বেশি ছটফট করছে যে, তার নাম রোহিত শর্মা। ইডেনের সঙ্গে রোহিতের সমীকরণটাই আলাদা। ওর সবচেয়ে প্রিয় মাঠ, যেখানে অভিষেকে সেঞ্চুরি করেছিল। ওয়ান ডে ক্রিকেটে ওর সর্বোচ্চ রানটাও ইডেনেই, ডাবল সেঞ্চুরি-সহ। কানপুরের দ্বিতীয় ইনিংসে খুব দ্রুত রান তোলার পর আত্মবিশ্বাসেও এই মুহূর্তে রোহিত বেশ টগবগ করছে। নিজের প্রিয় মাঠে আরও একটা বড় ইনিংস খেলতে পারলে নিজের উপর ওর ভরসাটা আরও বাড়বে।
অন্য দিকে, নিউজিল্যান্ড কানপুরের ধাক্কাটা এখনও সামলে উঠেছে বলে মনে হয় না। নিজেদের উপর আস্থা ফিরে পেতে হলে ইডেনে ওদের ব্যাটিংটা ভাল করতেই হবে। উইলিয়ামসন আরও একটা বড় ইনিংস খেলে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তৈরি থাকবে। তবে ক্যাপ্টেনের চেষ্টা সার্থক করতে হলে ওর পাশে দাঁড়াতে হবে টিমের বাকিদের।
আড়াইশো টেস্টের ইতিহাসে টসের ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, সেই প্রশ্ন উঠবেই। আমার মনে হয়, দুই ক্যাপ্টেনই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সকালে বাইশ গজটা শেষবার মন দিয়ে পরখ করে নিতে চাইবে।