অদল-বদল। ইস্টবেঙ্গল জার্সি দেল রিওর গায়ে। চ্যাম্পিয়নশিপ বেল্ট ডু ডংয়ের হাতে। বৃহস্পতিবার। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
উচ্চতা ছ’ফুট পাঁচ ইঞ্চি। ওজন ১০৮ কিলোগ্রাম। রিংয়ের মধ্যে তিনি বরবারের নৃশংস। কখনও হাত ভেঙে দিচ্ছেন। কখনও চার পাঁচজনকে দড়ির ওপারে ফেলে দিচ্ছেন। আবার লাথি মেরে কারও নাক ফাটাচ্ছেন। মেক্সিকোর এই দৈত্য সামনে এসে দাঁড়ালে হাড়ে হিম ধরতে বাধ্য। বারো মাসই রেসলিং রিংয়ে তাঁকে দেখতে অভ্যস্ত ভক্তরা। ডব্লিউডব্লিউই-র অন্যতম সেরা নাম আলবার্তো দেল রিওর কিন্তু রিংয়ের বাইরেও একটা দুনিয়া আছে। যে দুনিয়ায় তিনি নিজেই এক জন ফ্যান। এক জনের পাগল ভক্ত।
মেক্সিকান দৈত্যের সেই নায়কের নাম ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো।
সিআর সেভেনের নাম শুনলেই যাঁর গম্ভীর মুখে নিমেষে ফুটে ওঠে হাসি। বলে দেন, ‘‘ইয়েস রোনাল্দো! হি ইজ দ্য বেস্ট।’’
ডব্লিউডব্লিউ-এর প্রচারে এসেছেন কলকাতায়। সকালে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অনুষ্ঠানে গিয়েছেন। বিকেলে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে স্টেজে উঠে বল নাচিয়েছেন, ডু ডুং- অর্ণবদের নিজের চ্যাম্পিয়নশিপ বেল্টও উপহার দিয়ে এসেছেন। কলকাতায় এসে এখনও রসগোল্লা বা মিষ্টি দই খাওয়া হয়নি। তবে এত ব্যস্ততার মধ্যেও সময় বার করে নিলেন একান্ত সাক্ষাৎকার দেওয়ার জন্য। আর সেখানে রোনাল্ডো প্রসঙ্গ উঠতেই উচ্ছ্বাস চেপে রাখতে পারছেন না দেল রিও। হাতে কোকা কোলা ক্যান নিয়ে হাসিমুখে দেল রিও বলে দিলেন, ‘‘আমি খুশি রোনাল্ডো ইউরো ফাইনালে উঠেছে। জানি, ফাইনালে জার্মানি বা ফ্রান্স, যে-ই উঠুক, লড়াইটা কঠিন হবে। কিন্তু আশা করব ও জিতবে ট্রফিটা।’’
সিআর সেভেন নিয়ে উন্মাদনা এতটাই যে রিংয়ের মধ্যে লোকেদের হাত-পা ভাঙার মাঝে সময় পেলেই চলে যান সান্তিয়াগো বের্নাবাও। রিয়াল মাদ্রিদের খেলা শুধু দেখেন না, যে কোনও ডাই হার্ড সমর্থকের মতোই উপভোগ করেন। ‘‘রেসলিংয়ের পর ফুটবলই আমার প্রিয়। আর ফুটবলে আমার ভালবাসা রিয়াল। রিয়ালে আবার রোনাল্ডো। তাই বুঝতেই পারছেন আমি সময় পেলেই রিয়ালের খেলা দেখতে স্পেনে যাই,’’ হাসতে হাসতে বললেন দেল রিও।
সারা বিশ্বের কাছে রোনাল্ডো একজন ঔদ্ধত্যের প্রতীক। কিন্তু দেল রিওর মতে ধারণাটা সম্পূর্ণ ভুল। তিন বার ব্যালন ডি’অরজয়ী ফুটবলার আসলে মাটির মানুষই। দেল রিও বলছেন, ‘‘আমার সঙ্গে একবার দেখা হয়েছিল রোনাল্ডোর। খুব কম সময়ের জন্যই কথা হয়। কিন্তু ওর মধ্যে কোনও ঔদ্ধত্যের ছাপ দেখিনি। একেবারে পাশের বাড়ির ছেলের মতো হাবভাব।’’ বিশ্বফুটবলে এই মুহূর্তে ধারণাটা হল, তুমি রোনাল্ডোকে ভালবাসলে, মেসিকে সহ্য করতে পারো না। দেল রিও নিজে স্বাভাবিক ভাবেই রোনাল্ডো ক্যাম্পের। মেসিকে হাল্কা ঠুকে বললেন, ‘‘দু’জনের মধ্যে অবশ্যই আমার পছন্দ রোনাল্ডো। ও-ই বেশি ভাল। মেসি দুর্দান্ত, কিন্তু বার্সেলোনার হয়ে ও শুধু ভাল খেলে। দেশের হয়ে তেমন সাফল্য কোথায়? রোনাল্ডোও হয়তো পর্তুগালকে ট্রফি দিতে পারেনি, কিন্তু দলটাকে একাই টানে।’’
রোনাল্ডোর ক্যাবিনেট যেমন ট্রফিতে ভর্তি, দেল রিওর আলমারি সাজানো নানা সাইজের বেল্ট দিয়ে। ওয়ার্ল্ড হেভিওয়েট টাইটেল হোক বা ইউএস চ্যাম্পিয়ন, সব কিছুই জিতেছেন। সবচেয়ে স্মরণীয় কোনটা? ‘‘অনেক স্মরণীয় মুহূর্ত উপভোগ করেছি। কিন্তু সবার উপরে রাখব ডব্লিউডব্লিউই-তে আমার অভিষেক। সেই রাত কোনও দিন ভুলব না।’’
অন্য খেলায়
আগামী ২৪শে জুলাই কবি সুকান্ত স্পোর্টিং ক্লাবে ব়ডিবিল্ডিং প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হতে চলেছে।