উপরের কোণে পেনাল্টি মারতে পারত রোনাল্ডো

ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর ফস্কানো পেনাল্টিটার মূল্য কি পর্তুগালকে চোকাতে হবে? এই সপ্তাহে ইউরোর এটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। পর্তুগালের এমন একটা দিন গেল, যে দিন কিছুই ওদের পক্ষে ছিল না। ম্যাচে অনেক বার রোনাল্ডো নিজের জাত দেখাল। যার মধ্যে ওই দুর্দান্ত শটটা ছিল যেটা অস্ট্রিয়ান গোলকিপার বাঁচিয়ে দিল।

Advertisement

পিটার শিল্টন

শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৬ ০৯:৪৪
Share:

ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর ফস্কানো পেনাল্টিটার মূল্য কি পর্তুগালকে চোকাতে হবে? এই সপ্তাহে ইউরোর এটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। পর্তুগালের এমন একটা দিন গেল, যে দিন কিছুই ওদের পক্ষে ছিল না। ম্যাচে অনেক বার রোনাল্ডো নিজের জাত দেখাল। যার মধ্যে ওই দুর্দান্ত শটটা ছিল যেটা অস্ট্রিয়ান গোলকিপার বাঁচিয়ে দিল। তবু তার চেয়েও বড় আলোচনা হয়ে দাঁড়িয়েছে রোনাল্ডোর মিসটা। যেটা যে কারও সঙ্গে হতে পারে। ওই বলটা যদি জালে ঢোকাতে পারত, তা হলে সবাই ওর গুণগান গাইত। কিন্তু এখন যা দাঁড়িয়েছে সেটা হল, ওই পেনাল্টি মিসটা পর্তুগালের কাছে বিরাট ধাক্কা। আশা করছি পরের দিকে ওদের সেটা নিয়ে আফসোস করতে হবে না।

Advertisement

রোনাল্ডো যদি নেটের কোণ লক্ষ্য করে শটটা নিত, তা হলে হয়তো গোল হওয়ার আরও বেশি সুযোগ থাকত। রকেটের গতির ওই শটের বিরুদ্ধে পৃথিবীর কোনও গোলকিপারের কিছু করার থাকে না। তা ছাড়াও আছে সনাতনী ‘কিপারের দিকে তাক করা’ পেনাল্টি শট। আর আজকাল স্ট্রাইকাররা দেখি কিপারের উপর দিয়ে বল চিপ করার চেষ্টা করে। এ সব ক্ষেত্রে কিপাররা বাধ্য হয় আগে মুভ করতে। যেটা আমাকে এক বার খুব দুঃখ দিয়েছিল।

তখন আমার বয়স আঠারো। লেস্টার সিটির হয়ে চেলসির বিরুদ্ধে খেলছিলাম। মনে আছে বেশ আগেই ডাইভ দিয়ে ফেলেছিলাম। স্ট্রাইকারের পায়ের আলতো ছোঁয়ায় বলটা আমার বুটের স্পাইক ঘেঁষে গোলে ঢুকে গেল, একেবারে পোস্টের মাঝখান দিয়ে। সে দিন মনে হয়েছিল পুরো স্টেডিয়াম আমাকে নিয়ে হাসছে। মনে হয়েছিল রেফারি, এমনকী আমার টিমমেটরাও আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করছে। সে দিন বুঝেছিলাম কোনও একটা দিকে যাওয়ার আগে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করার গুরুত্ব। বলতে চাইছি যদি কিপারকে আগে ডাইভ করতে বাধ্য করা যায়, তা হলে স্ট্রাইকারের সাফল্যের সুযোগ বেশি। পর্তুগালের অবশ্য সেটা নিয়ে এখন ভেবে লাভ নেই।

Advertisement

যাই হোক, অন্য ম্যাচের কথায় আসি। ওয়েলসের বিরুদ্ধে শেষ মুহূর্তে হলেও খুব ভাল জিতল ইংল্যান্ড। কিন্তু এই প্রথম বার রয় হজসনকে নিয়ে হতাশ হলাম। প্রথম ম্যাচে যে টিম ছিল, দ্বিতীয় ম্যাচেও ও একই টিম নামানোয়। দেড়খানা ম্যাচ খেলা হ্যারি কেনের জন্যেও খারাপ লাগছিল। বেচারি একা একা খেলছে, কাউকে পাশে পাচ্ছে না। কেউ কেউ বলছে ওকে দেখে নাকি ক্লান্ত লাগছে। কিন্তু আশেপাশে কাউকে না পেলে একা স্ট্রাইকার হিসেবে খেলা কঠিন। তাই হ্যারি ওর সেরা ফর্মে নেই।

গোলকিপিংয়ের বিচারে জো হার্ট-কে দেখে খুব ভাল লাগল না। সহজ একটা ক্রস ফস্কাল, যেটা থেকে গোল হতে পারত। ওর মনোযোগ আরও ভাল হওয়া দরকার। শেষ ষোলো নিশ্চিত করতে হলে স্লোভাকিয়া ম্যাচ থেকে এ বার পয়েন্ট দরকার। আর গ্রুপে ইংল্যান্ডের পরে সেরা টিম হল স্লোভাকিয়াই। ওদের হারানো সহজ হবে না।

অন্য ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে বেলজিয়াম নিজেদের জাত চিনিয়ে দিল। নিজেরা নিজেদের ক্ষতি না করে ফেললে ইউরোয় বেলজিয়াম অন্যতম প্রতিভাবান টিম। কয়েকটা ‘ছোট’ দেশের খেলা দেখেও ভাল লেগেছে। আলবেনিয়া আর আইসল্যান্ডের টিম স্পিরিট, প্রচেষ্টা, দৃঢ় মানসিকতা আর শৃঙ্খলাবদ্ধতা চোখে পড়ার মতো।

সামনের সপ্তাহে যে ম্যাচগুলো আছে, সেখানে আমি চাইব নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে জার্মানি সতর্ক থাকুক। ইউক্রেনকে হারিয়ে এই দলটা এখন দারুণ আত্মবিশ্বাসী। আর চেক প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে ওরা যা খেলল, তার ভিত্তিতে ইউরোয় আমার ডার্ক হর্স ক্রোয়েশিয়া। যদি না ওরা আবার নিজেদের ফোকাস হারিয়ে ফেলে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন