Sergiy Stakhovsky

Sergiy Stakhovsky: হাতের র‌্যাকেট বদলে গেল বন্দুকে, দেশকে বাঁচাতে কিভের রণাঙ্গণে ফেডেরার-বধের নায়ক

দু’মাস আগেও তাঁকে খেলতে দেখা গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে। এখন তাঁর হাতে টেনিস র‌্যাকেট নয়, রয়েছে মেশিনগান। পকেটে টেনিস বলের বদলে কার্তুজ।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২২ ১৬:২২
Share:

অন্য লড়াইয়ে সের্জি স্ট্যাকোভস্কি।

দু’মাস আগেও তাঁকে খেলতে দেখা গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে। এখন তাঁর হাতে টেনিস র‌্যাকেট নয়, রয়েছে মেশিনগান। পকেটে টেনিস বলের বদলে রয়েছে কার্তুজ। ইউক্রেনের টেনিস খেলোয়াড় এখন পেশাদার সার্কিটের থেকে দূরে। কিভে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছেন সের্জি স্ট্যাকোভস্কি।

Advertisement

“এই অভিজ্ঞতা ভাষায় বর্ণনা করা যাবে না। কখনও ভাবিনি জীবনে এ রকম একটা দিন আসবে, যেখানে বন্দুক হাতে নিজের শহরে দাঁড়িয়ে দেশকে রক্ষা করার লড়াইয়ে নামতে হবে আমায়।” কিভের একটি বাড়ির বাঙ্কারে দাঁড়িয়ে বলছিলেন সের্জি। যোগ করলেন, “অনেকেই বলছে যে তারা এখনও খারাপ স্বপ্ন দেখছে। কিন্তু আমার তা মনে হয় না। ১৬ দিন কেটে গিয়েছে। এটা এখন আর দুঃস্বপ্ন নয়। প্রথম দু’দিন কেউ বিশ্বাসই করতে পারেনি। পরের বোঝা গেল, এটা নিয়েই থাকতে হবে।”

১২ বছর বয়স থেকেই গুরুত্ব দিয়ে টেনিস শেখা শুরু করেন সের্জি। ইউক্রেন এবং চেক প্রজাতন্ত্রে যাওয়া-আসা চলতে থাকে। ২০০৩ সালে পেশাদার হন। চারটি সিঙ্গলস এবং চারটি ডাবলস খেতাব জেতেন। ২০১০ সালে বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে ৩১-এ উঠে এসেছিলেন। ছ’বার গ্র্যান্ড স্ল্যামের তৃতীয় রাউন্ডে ওঠেন। সব থেকে বড় ব্যাপার, ২০১৩-র উইম্বলডনে রজার ফেডেরারকে চার সেটের লড়াইয়ে হারিয়ে দিয়েছিলেন। সেই সময় ফেডেরার ঘাসের কোর্টের রাজা। রাতারাতি শিরোনামে উঠে আসেন সের্জি। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের যোগ্যতা অর্জন পর্বে আমেরিকার জেজে উলফের কাছে হারেন। অবসর নেবেন কিনা সেই ভাবনা যখন মাথায় ঘুরছে, তখনই রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণ। টেনিস থেকে সাময়িক বিরতি নিয়ে যুদ্ধে নেমে পড়েছেন সের্জি।

Advertisement

২৮ ফেব্রুয়ারি কিভে পৌঁছন। ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে তুলে নেন বন্দুক। বলেছেন, “আপনি এখানে এক সেকেন্ডের জন্যে নিরাপদ। পরের সেকেন্ডেই বোমা উড়ে আসবে। কেউ এখানে নিরাপদ নয়।” হাঙ্গেরিতে স্ত্রী এবং তিন সন্তানকে রেখে এসেছেন। তবে কোথায় যাচ্ছেন বলেননি সন্তানদের। “স্ত্রী জানত, কিন্তু কোনও দিন প্রশ্ন করিনি। কিন্তু আমি বেরনোর আগে কাঁদতে থাকে। সন্তানদের সঙ্গে কথা বলাও খুব কঠিন। কারণ ওরা সব সময়েই জিজ্ঞাসা করে, আমি কখন ফিরছি। আসলে এর উত্তর আমি নিজেও জানি না। শুধু জানি, দেশ, সন্তান এবং ইউরোপের ভবিষ্যতের কথা ভেবে এখানে এসেছি।”

যুদ্ধে নামার পর থেকে অনেকের শুভেচ্ছা পেয়েছেন। সেই তালিকায় রয়েছেন নোভাক জোকোভিচও। সেই ছবি নেটমাধ্যমে দিয়েছেন সের্জি। যুদ্ধের জন্য যে বাঙ্কার তৈরি করা হয়েছে, সেখানেই থাকছেন তিনি। দু’ঘণ্টা ডিউটির পর ছ’ঘণ্টা ছুটি। কিন্তু ছুটির সময়েও বসে না থেকে সাধারণ মানুষকে সাহায্য করে যাচ্ছেন। বিশেষত যাঁদের প্রচুর বয়স এবং অন্যত্র চলে যেতে অপারগ।

সের্জি আশা রাখছেন, যুদ্ধ এক দিন শেষ হবে। সব শান্ত হবে। কিন্তু কবে? সেই উত্তর নেই তাঁর কাছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন