সচিন তেন্ডুলকরের টেস্ট অবসরের সিদ্ধান্তের প্রায় এক বছর আগে থেকেই এই ব্যাপারে তাঁর সঙ্গে আলোচনা শুরু করে দিয়েছিলেন নির্বাচকরা। সদ্য নির্বাচক প্রধানের পদ ছাড়ার পর এই দাবি করলেন সন্দীপ পাটিল।
নাগপুরে ২০১২-র ডিসেম্বরে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্টে সচিন মাত্র দু’রানে আউট হওয়ার পর দুই নির্বাচক তাঁর সঙ্গে অবসর নিয়ে কথা বলেছিলেন বলে জানালেন পাটিল। এ দিন এবিপি নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘সিদ্ধান্তটা ছিল নির্বাচক কমিটির। এর মধ্যে আমার ভূমিকা বেশি ছিল ঠিকই। কিন্তু সবাই মিলে সিদ্ধান্তটা নিয়েছিলাম যে, এ বার সচিনের সঙ্গে কথা বলার দরকার। আমার নিজেরও খুব খারাপ লেগেছিল এই ব্যাপারে ওর সঙ্গে কথা বলতে। কিন্তু দেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যতের কথা ভেবে সেটা করতেই হয়েছিল।’’
সচিনের সঙ্গে অবসর নিয়ে কথা বলার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে পাটিল বলেন, ‘‘সেই টেস্টের তৃতীয় দিন আমরা নির্বাচকরা ঠিক করি ওকে জিজ্ঞাসা করব, ক্রিকেট কেরিয়ার নিয়ে ওর পরিকল্পনাটা কী? আমি আর রাজিন্দর সিংহ হনস গিয়েছিলাম ওর কাছে। ওকে জিজ্ঞাসা করি ওর প্ল্যানিংটা ঠিক কী। ও বলে টেস্টেই বেশি গুরুত্ব দেওয়ার ইচ্ছে তখন ছিল ওর। বেশ ভালই কথাবার্তা হয়। আমার সামনেই সচিন সঞ্জয় জাগদালেকে ফোন করে জানিয়ে দেয় ও আর ওয়ান ডে খেলবে না। টেস্ট অবসরের সিদ্ধান্ত নিতে ওর আরও এক বছর লেগে যায় ঠিকই। কিন্তু আমরা এই নিয়ে কথা শুরু করি তার এক বছর আগে থেকে।’’ ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে হারা সেই সিরিজের পরই সচিন ওয়ান ডে থেকে অবসরের কথা সরকারি ভাবে ঘোষণা করে দেন। টেস্ট থেকে অবসর নেন পরের বছর নভেম্বরে।
ধোনিকেও যে এক বার ক্যাপ্টেন্সি থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথা ভেবেছিলেন পাটিলরা, সে কথাও জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘ধোনির ক্যাপ্টেন্সি ডেঞ্জার জোনে ছিল এক বার। বিশেষ করে বিশ্বকাপের আগে। তখন অন্য ক্যাপ্টেন বাছার কথা উঠেছিলও। কিন্তু সেই ঝুঁকি নেওয়ার সময় ছিল না আমাদের হাতে। টেস্টে অবশ্য সেই সুযোগটা ছিল। হাতে সময় ছিল। ধোনি অবশ্য নিজেই টেস্ট ছেড়ে দেয়।’’
অস্ট্রেলিয়ায় সিরিজের মাঝখানে ধোনির হঠাৎ টেস্ট থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত যে তাঁদের চমকে দিয়েছিল, তা জানিয়ে প্রাক্তন নির্বাচক প্রধান বলেন, ‘‘ওই সময় দলটা একটা কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল। তাই ওইরকম একটা সময়ে ধোনির দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়াটা আমাদের কাছে খুব ‘শকিং’ ছিল। পরের মিটিংয়ে ধোনির সঙ্গে দেখা হতেই সবাই জিজ্ঞেস করেছিলাম, ‘‘এটা কী করলে তুমি? ওর উত্তর ছিল, ‘আমি আর পারছিলাম না। আমার পক্ষে চালিয়ে যাওয়া আর সম্ভব হচ্ছিল না।’ আসলে একটা স্ট্যান্ডার্ডে উঠে যাওয়ার পর সেটা ধরে রাখতে না পারলে যে ছেড়ে দেওয়াই ভাল, সেটাই ওর মনে হয়েছিল।’’