কোচ নিয়ে এ বার হয়তো বৈঠক প্রাক্তন ত্রয়ীর

বার্মিংহামে পাকিস্তানকে উড়িয়ে দেওয়ার পরে বিরাট কোহালি-রা পরের ম্যাচ খেলবেন লন্ডনে। ওভালে তাঁদের পরের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। তার পরে ওভালেই দক্ষিণ আফ্রিকা।

Advertisement

সুমিত ঘোষ

লন্ডন শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৭ ০৫:১৯
Share:

ভারতীয় দলের কোচ হিসেবে অনিল কুম্বলের ভবিষ্যৎ কী, তা ঠিক করার জন্য তাঁর পুরনো সতীর্থরা দু’তিন দিনের মধ্যেই বৈঠক করতে পারেন। যতই বিভিন্ন মহল থেকে দাবি করা হোক, কোচ এবং অধিনায়কের মধ্যে কোনও ব্যবধান নেই, তা আদৌ ঠিক নয়। ঘটনা হচ্ছে, ভারতীয় বোর্ডকে খুব শীঘ্রই সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে, কুম্বলেকে রেখে দেওয়া হবে নাকি নতুন কাউকে আনা হবে।

Advertisement

বার্মিংহামে পাকিস্তানকে উড়িয়ে দেওয়ার পরে বিরাট কোহালি-রা পরের ম্যাচ খেলবেন লন্ডনে। ওভালে তাঁদের পরের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। তার পরে ওভালেই দক্ষিণ আফ্রিকা। সৌরভ-রাও তাই এই সময়ে লন্ডনে থাকবেন। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ধারাভাষ্য দিচ্ছেন সৌরভ। এজবাস্টনে রবিবারের মহারণে উপস্থিত থাকা সচিনও এখন ইংল্যান্ড ছেড়ে যাচ্ছেন না। লক্ষ্মণও চলে আসছেন ধারাভাষ্য দিতে।

যা ইঙ্গিত, তিন জনে লন্ডনে বসতে পারেন কোচ নিয়ে আলোচনা করার জন্য। দু’তিন দিনের মধ্যেই হতে পারে সেই বৈঠক। কুম্বলে থাকবেন নাকি তাঁর জায়গায় অন্য কেউ আসবেন, তা ঠিক করার মূল দায়িত্ব বর্তেছে ক্রিকেট অ্যাডভাইসরি কমিটির ওপর। সচিন-সৌরভ-লক্ষ্মণকে নিয়ে এই কমিটি তৈরি হয় জগমোহন ডালমিয়ার আমলে। রবি শাস্ত্রীকে সরিয়ে কুম্বলেকে কোচ বেছেছিল এই কমিটি। এখন এক বছরের মধ্যে তাঁদের নতুন করে বৈঠক করতে হচ্ছে নতুন কোচ বাছা নিয়ে। বোর্ড থেকে বিজ্ঞাপনও দেওয়া হয়েছিল, নতুন কোচের আবেদন চেয়ে। সেই আবেদন থেকে সব চেয়ে হট ফেভারিট হিসেবে উঠে এসেছে বীরেন্দ্র সহবাগের নাম।

Advertisement

যদিও কুম্বলে পুরোপুরি সমর্থনহীন হয়ে গিয়েছেন বলে মনে হচ্ছে না। তাঁর দিকটাও গুরুত্ব দিয়ে শুনতে চান অনেকে। দেশের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি তিনি। ক্রিকেট জীবনে অনেক গর্বের মুহূর্ত উপহার দিয়েছেন। কোচকে পুরোপুরি উপেক্ষা করে একতরফা ক্রিকেটারদের কথা শোনা ঠিক হবে না, বলে অনেকের মত। এক জন বললেন, ‘‘গত এক বছরে দায়িত্বে থাকার সময় কুম্বলের অধীনে খারাপ ফল তো হয়নি। তা হলে তাঁকে সরানো হবে কী ভাবে?’’

আরও পড়ুন: কৌশল পাল্টে রানে ফিরলেন যুবরাজ সিংহ

বোর্ডের মধ্যে একটা অংশ অতীতের নানা ঘটনার জন্য কুম্বলের প্রতি অসন্তুষ্ট। এঁরা চাইবেন না কুম্বলে কোচ থাকুন। এঁদের ঘোড়া বীরেন্দ্র সহবাগ। তবে কুম্বলের রক্ষাকার্তা হয়ে উঠতে পারেন তাঁর প্রাক্তন সতীর্থরাই। ক্রিকেট অ্যাডভাইসরি কমিটির তিন জনের মধ্যে অন্তত দু’জন ভীষণ ভাবেই কুম্বলের পাশে দাঁড়াবেন। এঁরা দু’জন কারা, তা জানার জন্য ফেলুদা হওয়ার দরকার নেই। সৌরভ এবং লক্ষ্মণ যে সেই দু’টো নাম, যে কেউ বলে দিতে পারবে।

একমাত্র সচিনকে যদি বিরাট পরিষ্কার করে বলে দেন, কুম্বলের অধীনে ড্রেসিংরুম চালানো কঠিন হয়ে পড়ছে, তবে পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠতে পারে। সোমবার পর্যন্ত যা খবর, বিরাট বোর্ড কর্তাদের কাছে তাঁর মনোভাব স্পষ্ট করে দিয়েছেন। কিন্তু প্রথম সিদ্ধান্ত অ্যাডভাইসরি কমিটির হাতে। তাঁদের কাছে এই বার্তা সরাসরি পৌঁছতে হবে যে, কুম্বলে ড্রেসিংরুমের বিশ্বাস এবং আস্থা হারিয়েছেন। তাঁকে আর কোনও ভাবেই রাখা যাবে না।

সে রকম হলে কুম্বলে এবং কোহালির সঙ্গে আলাদা করে কথাও বলতে পারেন সচিন-সৌরভরা। যদি মিটমাটের পরিস্থিতি থাকে, তবে চেষ্টাও করতে পারেন। কিন্তু যা ইঙ্গিত, গুরু গ্রেগ চ্যাপেলের সময়কার সেই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির মতো এ বারেও হয় এসপার-নয় ওসপারের দিকে এগোচ্ছে কোচ এবং অধিনায়কের সম্পর্ক। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পরে কুম্বলে-কোহালি সহবাস নাকি প্রায় অসম্ভব। একমাত্র খেলা ঘোরাতে পারেন সচিন। তিনি যদি বিরাটকে বোঝান এবং তাঁর প্রিয় নায়কের কথা শোনেন অধিনায়ক।

এটাই এখন দেখার যে, তিনি, সচিন তেন্ডুলকর কী করেন। চার দিকেই তাঁর বন্ধুরা রয়েছে। এক দিকে কুম্বলে। অন্য দিকে কোহালি। আবার প্রাক্তন ডিরেক্টর রবি শাস্ত্রীকে ফেরত চাইতে পারেন কোহালি। সচিন কাকে ছেড়ে কার দিকে ঝুঁকবেন? আবার সহবাগও সচিনের খুব প্রিয়। রবিবার এজবাস্টনে পাকিস্তানকে হারানোর পরে পুরো মাঠ ঘুরে দর্শকদের দিকে হাত নাড়েন সচিন। সেই সময় তাঁর সঙ্গী ছিলেন বীরেন্দ্র সহবাগ। গোটা মাঠ প্রদক্ষিণ করতে করতে এক বারও কি কোচের পদে সহবাগের আবেদন করা নিয়ে কথা হল না, বিশ্বাস করা কঠিন।

ভারতীয় ক্রিকেটে কিন্তু কাঁহাবত আছে, সচিন থাকলে তাঁকে জিজ্ঞেস না করে সহবাগ কিছু করবেনই না!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন