মধ্যমণি: জন্মদিনে ভক্তদের সঙ্গে সচিন তেন্ডুলকর। বুধবার। পিটিআই
মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ২০১১ সালের বিশ্বকাপ জয়ই তাঁর জীবনের মধুরতম মুহূর্ত। বুধবার ৪৬তম জন্মদিনে আবারও সেই স্মরণীয় রাতের স্মৃতিরোমন্থন করলেন সচিন তেন্ডুলকর।
বিরাট কোহালি থেকে ক্রিস গেল, বীরেন্দ্র সহবাগ থেকে নতুন প্রজন্মের কুলদীপ যাদব—জন্মদিনে ‘মাস্টার ব্লাস্টার’কে শুভেচ্ছা জানানোর ঢেউ আছড়ে পড়ে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং ওয়েবসাইটে। বন্ধু বিনোদ কাম্বলি আবার ‘ইয়ারানা’ ছবির জনপ্রিয় গান গেয়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন তাঁর জীবনের সেরা ‘বস’কে। সকালে মুম্বইয়ে তাঁর বাড়ির সামনেও ভিড় জমিয়েছিলেন ভক্তেরা। সেই পরিচিত ‘স্যাচিন, স্যাচিন’ গর্জন ফিরে এসেছিল। কাউকে হতাশ করেননি কিংবদন্তি। অটোগ্রাফ দেওয়ার সঙ্গে তাঁদের সঙ্গে তুলেছেন নিজস্বীও।
আগামী মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে ইংল্যান্ড শুরু হবে বিশ্বকাপ। সচিনের ভাবনাতেও তাই আনাগোনা করছে আট বছর আগের সেই রঙিন রাতের স্মৃতি। তিনি বলেছেন, ‘‘২০১১ সালের বিশবকাপ জয় আমার জীবনের মধুরতম মুহূর্ত। তার সঙ্গে অনয কোনও কিছুর তুলনা চলে না।’’ সেখানেই না থেমে সচিন আরও বলেছেন, ‘‘ওই বিশ্বকাপে দলের পক্ষে আমি সবচেয়ে বেশি রান করেছিলাম। বলতে পারেন, বিশ্বকাপ জয়ের জন্য সামান্য অবদান আমারও ছিল। কিন্তু সেটা নিয়ে আলাদা কোনও অনুভূতি নেই। আসল কথা হল, দিনের শেষে বিশ্বকাপটা আমাদের ড্রেসিংরুমে শোভা পাচ্ছে না কি প্রতিপক্ষের ড্রেসিংরুমে? আমরা লক্ষ্য ছুঁতে পেরেছিলাম। এক জন ক্রিকেটার হিসেবে তার চেয়ে সেরা তৃপ্তি আর কী হতে পারে।’’ যোগ করেছেন, ‘‘বিশ্বকাপ নিয়ে সতীর্থদের কাঁধে চড়ে গোটা মাঠ প্রদক্ষিণ করার মধ্যে যে কী আনন্দ রয়েছে, তা ভাষায় ব্যাখ্যা করা যায় না। নির্দ্বিধায় বলতে পারি, সেটাই আমার জীবনের সেরা মুহূর্ত।’’ সচিন জানিয়েছেন, জীবনে প্রথম বার ‘ইন্ডিয়া ক্যাপ’ হাতে নিয়ে রোমাঞ্চিত হয়ে পড়েছিলেন। তিনি বলেছেন, ‘‘ইন্ডিয়া ক্যাপ পরে প্রথম বার মাঠে নামছি, সেটা ছিল অন্য ধরনের উত্তেজনা। তবে তার সঙ্গে বিশ্বকাপ জয়ের কোনও তুলনা চলে না। গোটা দেশ উৎসবে মেতে উঠেছে। এবং ওয়াংখেড়ের মানুষ সে রাতে যে ভাবে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে আনন্দ করছিলেন, সেটা আমার কাছে এখনও অপার্থিব একটা ঘটনা বলে মনে হয়।’’ সচিন আরও বলেছেন, ‘‘জীবনে এমন বিরল মুহূর্ত খুব কম আসে, যেখানে আপনার সাফল্যের সঙ্গী হিসেবে গোটা দেশ উৎসবে ভেসে যাচ্ছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘সেটা বাদ দিলে বেশিব ভাগ সময়েই তো যে কোনো বিষয়ে মতামতই বেশি উড়ে আসে। কেউ হয়তো বোলিংয়ের প্রশংসা করেন, কেউ আবার ব্যাটিং নিয়ে উল্লসিত হয়ে পড়েন। মিশ্র মতামতের ভিড়ে আসল আনন্দটাই ফিকে হয়ে পড়ে। কিন্তু বিশ্বকাপ জয় ছিল সেই মুহূর্ত, যখন কোনও আলাদা ভাবনা ছিল না। ছিল না আলাদা মতামত। গোটা দেশ বিশ্বকাপ জয়ের শরিক হয়ে উল্লাসে ফেটে পড়ছে। তার সঙ্গে আমি অন্য কোনও কিছুকে মেলাতে পারব না। মেলানো সম্ভব নয়।’’