চোট বলেই সাইনা হেরে গেল

প্রাক্তন ব্যাডমিন্টন তারকা, মেয়েদের জাতীয় কোচ। সাইনা-সিন্ধুদের রিও অভিযান নিয়ে লিখছেন শুধু আনন্দবাজারে। প্রথমে খুব অবাক হয়েছিলাম। সাইনা নেহওয়াল যে এ ভাবে হারতে পারে, ভাবতেই পারিনি। কোনও সমস্যা না হলে এ ভাবে হারার মেয়ে নয় সাইনা। ঠিকই ধরেছিলাম। পরে শুনলাম ওর হাঁটুতে চোট ছিল। কোর্টে ঠিকমতো মুভ করতে পারছিল না। মেয়েটার কপালটাই খারাপ।

Advertisement

মধুমিতা সিংহ বিস্ত

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৬ ০৪:৩৬
Share:

প্রথমে খুব অবাক হয়েছিলাম। সাইনা নেহওয়াল যে এ ভাবে হারতে পারে, ভাবতেই পারিনি। কোনও সমস্যা না হলে এ ভাবে হারার মেয়ে নয় সাইনা। ঠিকই ধরেছিলাম। পরে শুনলাম ওর হাঁটুতে চোট ছিল। কোর্টে ঠিকমতো মুভ করতে পারছিল না। মেয়েটার কপালটাই খারাপ। এই পর্যায়ের ম্যাচে নামার আগে চোট থাকলে সেটা কাটিয়ে উঠে সেরা পারফরম্যান্স দেওয়াটা খুব মুশকিল।

Advertisement

সাইনার এই পারফরম্যান্স দেখে চিন্তা হচ্ছিল সিন্ধুর জন্যও। ভাবছিলাম, প্রি-কোয়ার্টারে ওঠার ম্যাচে নামার আগে সাইনার অলিম্পিক্স থেকে ছিটকে যাওয়া দেখে ও না আবার চাপে পড়ে যায়। সেই আশঙ্কা নিয়েই বসেছিলাম টিভির সামনে সিন্ধুর ম্যাচটা দেখতে। তার উপর মিশেল, মানে যে সিন্ধুর চ্যালেঞ্জার ও আবার কমনওয়েলথ চ্যাম্পিয়ন। গ্লাসগোতে সিন্ধুকে হারিয়েছিল। প্রথম গেমটায় সিন্ধুকে দেখে মনেও হচ্ছিল চাপে রয়েছে। সেটা ওর খেলাতে ধরাও পড়ছিল। প্রথম অলিম্পিক্সে নামার চাপ হয়তো ছিল। তা ছাড়া মিশেল সিন্ধুর খেলা ভালরকম জানে। তাই ওকে শট মারার কোনও জায়গা দিচ্ছিল না। শাটল লো রাখছিল। যাতে সিন্ধু স্ম্যাশ করতে না পারে। সেটাও ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

চাপটা কাটল দ্বিতীয় গেমে। আমাদের চিফ কোচ গোপীচন্দ ব্রেকে সিন্ধুকে নিশ্চয়ই খেলাটা আরও ছড়িয়ে দিতে বলেছিল। মিশেলকে পুশ করতে। যাতে সিন্ধু নিজের স্বাভাবিক শটগুলো মারার সুযোগ পায়। ঠিক সেটাই করে দ্বিতীয় গেম থেকে সিন্ধু মোমেন্টামটা পেয়ে যায়। এটাই আসল। সিন্ধু এক বার ছন্দ পেয়ে গেলে কী করতে পারে সেটা ও আগেই দেখিয়ে দিয়েছে। গত বছর অলিম্পিক্স চ্যাম্পিয়ন লি জুয়েরুইকে হারিয়েছে। সার্কিটে সব টপ প্লেয়ারকে হারানোর রেকর্ড আছে সিন্ধুর। মিশেলকে হারাতে তাই আর সমস্যা হয়নি। বরং আজ বড় চ্যালেঞ্জ ছিল কোর্টের বাইরের চাপটা কাটিয়ে ওঠার। যে ভাবে ও একটা গেম হেরেও ম্যাচটা বার করে নিল তাতেই বুঝিয়ে দিয়েছে প্রথম অলিম্পিক্স হলেও মানসিক ভাবে ও কতটা তৈরি।

Advertisement

তবে লড়াই তো সবে শুরু। পদকের দৌড়ে থাকতে সিন্ধুকে অনেক দূর যেতে হবে। কোয়ার্টারে উঠতে সম্ভবত চিনা তাইপের তাই জু ইংয়ের সঙ্গে সিন্ধুকে লড়তে হবে। তাই জুকে সার্কিটে স্ট্রোক প্লে-র জন্যই সবাই জানে। সিন্ধুকে তাই সতর্ক থাকতে হবে। সিন্ধুকে বলব তাই জুর বিরুদ্ধে লম্বা র‌্যালিতে যাও। ওকে কোর্ট জুড়ে খেলতে বাধ্য কর। যাতে ও স্ট্রোক মারলেও সেটা তুলে দেওয়া যায়। স্ট্রোক প্লেয়াররা যদি সেরা অস্ত্রটা ব্যবহার করতে না পারে, হতাশ হয়ে যায়। সেটাই করতে হবে সিন্ধুকে। আমার বিশ্বাস, সিন্ধু সেটা পারবেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন