দু’দিন আগেই নিজের একষট্টিতম জন্মদিন পালন করেছেন তাঁর সঙ্গে বলিউডি সেলিব্রিটি দীপিকা পাড়ুকোনের শৈশবের বিরল ছবি প্রকাশ্য পোস্ট করে। তিনি যে হাইপ্রোফাইল নায়িকা দীপিকার বাবা প্রকাশ পাড়ুকোন। আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যে সাইনা নেহওয়াল নিয়ে বলতে গিয়ে সেই প্রকাশের গলা শোনাচ্ছিল যেন নিজের আর এক মেয়ের কথা বলছেন! এ বছর সাইনার প্রথম খেতাব জেতার রাতে মোবাইলে এ দেশের প্রথম ব্যাডমিন্টন আইকন প্রকাশ পাড়ুকোন বলছিলেন, ‘‘আমার চোখে ফাইনাল ম্যাচটার সবচেয়ে তাৎপর্যের ব্যাপার সাইনার মানসিক দৃঢ়তা। প্রচণ্ড চাপের সামনে ওর মনের শক্তি। রিওতে মেডেল জিততে হলে যে জিনিসটা ওর সবচেয়ে বেশি দরকার।’’
কেন? ভারতের প্রথম অল ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়ন প্রকাশের ব্যাখ্যা, ‘‘দেখুন, আমি মনে করি অন্য সব টুর্নামেন্ট একটা ব্যাপার, অলিম্পিক্স আর একটা ব্যাপার। যে কারণে অলিম্পিক্সে ভাল করতে সবচেয়ে বেশি চাই মানসিক শক্তি। এটা শুধু ব্যাডমিন্টন নয়, সব খেলাতেই। সিডনিতে সাইনার খেলায় ঠিক সেটাই দেখতে পেলাম। যেটার ইদানীং অভাব ঘটছিল ওর খেলায়।’’ বলে তিনি আরও যোগ করলেন, ‘‘আর একটা জিনিসও খুব ভাল লাগল ওর। ম্যারাথন ম্যাচেও আক্রমণাত্মক খেলার মতো শারীরিক ফিটনেস, স্ট্যামিনা। পরের পর লম্বা র্যালি করে চলার শুধু দমই নয়, সেগুলোর বেশির ভাগ জেতার স্কিলও আবার ফিরে পেয়েছে মেয়েটা। অবশ্যই এটা সম্ভব হয়েছে হাড়ভাঙা প্র্যাকটিসের ফলে। খুব ভাল ফিজিক্যাল ট্রেনিংয়ে। কিন্তু সেসব সামলাতে তো সঙ্গে তোমার হান্ড্রেড পার্সেন্ট ফিটনেসটাও চাই। আমার মনে হচ্ছে, সাইনা সেটাও ফিরে পেয়েছে। লক্ষ্য করে দেখবেন, ইদানীং বিদেশে যে টুর্নামেন্টেই ও যেত, মিডিয়ায় বলে যেত, পুরো ফিট থাকলে ভাল রেজাল্ট করবে। ওটা কিন্তু কথার কথা ছিল না ওর। সত্যিই তাই। অস্ট্রেলিয়ায় সুপার সিরিজেই যেন পুরো ফিট সাইনা খেলল।’’
প্রকাশ অবশ্য সেমিফাইনাল-ফাইনালে পরপর দুই চিনা তারকাকে সাইনার হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়াকে বেশি গুরুত্ব দিতে নারাজ। ‘‘চিন এখন আর মেয়েদের ব্যাডমিন্টনে সুপারপাওয়ার নয়। স্পেনের ক্যারোলিনা মারিন, তাইল্যান্ডের ইন্তানন, এমনকী জাপানের দু’টো-একটা মেয়েও সত্যিকারের ওয়ার্ল্ড বিটার এখন। সেই তুলনায় ইহান, শিজিয়ানের পরে দুর্ধর্ষ চিনা মেয়ে কোথায়? জুয়েরুই চোটে চোটেই কাবু। সিডনি ফাইনালে সাইনা যে চিনা মেয়েটাকে হারাল সে বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে প্রথম দশে নেই। তার জন্য অবশ্য সাইনার কৃতিত্ব এতটুকু কমছে না। অলিম্পিক্সের ঠিক আগে সাইনার ফর্মে ফেরাটাই তো আসল।’’