লক্ষ্য: আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হতে মরিয়া সঞ্জয় সেন। ফাইল চিত্র
ঘরের মাঠে বেঙ্গালুরুকে দুরমুশ করে রীতিমতো ফুটছেন বাগান কোচ সঞ্জয় সেন। বলছেন, ‘‘মোহনবাগান আই লিগের লড়াইতে ছিল। এখন আরও প্রবল ভাবে রয়েছে।’’
রবিবার শিলিগুড়িতে আই লিগের ফিরতি ডার্বি। তার আগে মঙ্গলবারের এএফসি কাপের ম্যাচে সনিদের প্রতিপক্ষ ঢাকা আবাহনী। ডার্বির প্রসঙ্গ উঠতেই মোহনবাগান কোচ ফের আত্মবিশ্বাসী মেজাজে বলে দেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গল যথেষ্ট শক্তিশালী দল। তবে ডার্বি থেকে তিন পয়েন্ট পাওয়ার ব্যাপারে যথেষ্ট আশাবাদী আমরা।’’
বেঙ্গালুরুকে হারিয়ে উঠে সনি নর্দে হুঙ্কার ছেড়েছিলেন, ডার্বি জিতলেই লিগ প্রায় হাতের মুঠোয় চলে আসবে। মোহনবাগান কোচ অবশ্য সেই যুক্তি মানতে নারাজ। বলছেন, ‘‘ওটা সনির ব্যক্তিগত মত হতে পারে। কিন্তু আমি তা মনে করি না। ডার্বির পরেও আমাদের চারটে ম্যাচ খেলতে হবে।’’
ডার্বির প্রস্তুতি সম্পর্কে সঞ্জয় বলে দেন, ‘‘মঙ্গলবার এএফসি কাপের ম্যাচের পর ডার্বি নিয়ে ভাবতে বসব। আপাতত ম্যাচ বাই ম্যাচ স্ট্র্যাটেজি সাজাচ্ছি।’’কিন্তু এত কিছুর পরেও যদি লিগ টেবলে শীর্ষে থাকা আইজল টানা চার ম্যাচ জিতে যায়, তা হলেই তো চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে তারা।
মোহনবাগান কোচ এ বার বলেন, ‘‘আইজলকে চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে বেঙ্গালুরু, মোহনবাগানকে হারাতে হবে। ওদের আই লিগ জেতা এত সহজ হবে না। আগে আমাদের হারাক। শেষ দিন পর্যন্ত ওদের তাড়া করে যাব। লিগ এখনও ওপেন।’’
চলতি বছরে আই লিগের শুরুতে হোঁচট না খেলেও, ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে ডার্বির পরেই ছন্দ হারায় সঞ্জয় সেনের সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। শনিবারের বেঙ্গালুরু ম্যাচের আগে শেষ পাঁচ ম্যাচ থেকে মোহনবাগান পেয়েছিল ছয় পয়েন্ট। জয় মোটে একটি। তাও সেটা ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি। ডিএসকে শিবাজিয়ান্সের বিরুদ্ধে। সেই অর্থে বিরতির পর আই লিগ ফের শুরু হতেই আই লিগের লড়াইতে ফের প্রত্যাবর্তন সনি নর্দে-দের।
মোহনবাগান কোচের যদিও প্রবল আপত্তি ‘প্রত্যাবর্তন’ শব্দটির ব্যবহারে। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা যখন পয়েন্ট নষ্ট করেছি তখন অন্য টিমগুলোও পয়েন্ট নষ্ট করেছে। চ্যাম্পিয়নের দৌড়ে তাই থেকেই গিয়েছিলাম আমরা। ব্যবধানটা কখনওই খুব বেশি ছিল না। এএফসি কাপের জন্য আমরা কম ম্যাচ খেলায় পয়েন্টের তফাত বেশি করে চোখে পড়ছে। প্রত্যাবর্তনের প্রশ্নই নেই।’’
মোহনবাগান কোচের কাছে জানতে চাওয়া হয়, তা হলে একচল্লিশ দিন পর জয় এল কেন? সঞ্জয় সেনের উত্তর, ‘‘এটা ঠিক যে পরপর ম্যাচ খেলার জন্য টিমে ক্লান্তি ও চোট-আঘাত বাড়ছিল। নষ্ট হচ্ছিল মনঃসংযোগও। তাই পয়েন্ট নষ্ট হয়েছে। তবে বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে অ্যাওয়ে ম্যাচে প্রথমার্ধে যে সুযোগগুলো তৈরি হয়েছিল সেগুলো কাজে লাগাতে পারলে আমরাই জিতে ফিরতাম।
তা হলে হঠাৎ কী ভাবে এই ঝকঝকে ফর্ম সনি, কাতসুমিদের? সঞ্জয় বলছেন, ‘‘আই লিগের বিরতিতে দু’টো বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিয়েছিলাম। এক, ফুটবলারদের ফিটনেস লেভেল ফের তুলে আনা। দুই, মিডিয়ার সঙ্গে কথা বন্ধ করে দেওয়া। দু’টোই এখনও পর্যন্ত সঠিক ভাবে করা গিয়েছে। আর বিশ্রাম পেয়ে সনি-কাতসুমিরাও চনমনে লিগ ফের শুরু হতেই।’’
মোহনবাগান কোচ আরও বলেন, ‘‘কাতসুমিদের বলে দিয়েছিলাম, তোমাদের কাজ মাঠে নেমে টিমকে জেতানো। শনিবারও বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে জেতার পর সনিদের বলে দিয়েছি, ভুলে যাও এই জয়। আই লিগ না জিতলে সব বৃথা। ডার্বির আগে কোনও কথা নয় মিডিয়ার সঙ্গে। ছেলেরা নির্দেশগুলো অক্ষরে অক্ষরে পালন করছে বলেই জয়ে ফিরেছি আমরা।’’