ডার্বির পর দিন। শহরের এক চিত্র প্রদর্শনীতে বাগান কোচ ও কিপার। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।
ডার্বি জয় আর তার নায়ক দেবজিত্ মজুমদারকে ঘিরে কি চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই আত্মতুষ্টির ‘সিঁদুরে মেঘ’ ডরাচ্ছে মোহনবাগান কোচ সঞ্জয় সেনকে?
ইস্টবেঙ্গলকে হারানোর পরের সকাল থেকে বাড়িতে সংবাদমাধ্যমের ভিড়। মোবাইলে ঘনঘন ফোন আর এসএমএস। এরই মাঝে শনিবার অন্তত চারটে নিশ্চিত গোল বাঁচানো বাগান কিপার দেবজিত্কে নিয়ে সংবাদপত্র আর স্থানীয় টিভি চ্যানেলগুলোর বিরাট কভারেজ দেখে রবিবার সকালেই সঞ্জয় ফোন করেন তাঁকে। সাবধান করে বলেন, “বড় ম্যাচ জেতার আনন্দ উপভোগ করো। কিন্তু ফোকাস যেন হারিয়ে না যায়।”
সোমবার প্র্যাকটিসে নেমেও সব ফুটবলারকে একই সতর্কবার্তা দেবেন বলেও এ দিন জানালেন বাগান কোচ। বঙ্গসন্তান কোচের দর্শনডার্বি এখন অতীত। এখন পাখির চোখ আই লিগ চ্যাম্পিয়নশিপ। আর চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে বাকি এগারো ম্যাচের অন্তত ছ’টা জিততেই হবে। “ছটা অ্যাওয়ে ম্যাচ। বাকি পাঁচটা হোম। যদি এগুলোর মধ্যে ছ’টায় কোনও পয়েন্ট না হারাই আমরা তা হলে আই লিগ জেতার স্বপ্ন দেখতেই পারি।”
ইউনাইটেড স্পোর্টসের কোচ থাকার সময়েও আই লিগে টানা নয় ম্যাচ অপরাজিত ছিলেন সঞ্জয়। কিন্তু দশ নম্বরে এসে হোঁচট খান। মোহনবাগানও টানা ন’টা ম্যাচ অপরাজিত। দশ নম্বর ম্যাচের আগে তাই মনের কোণে আশঙ্কা আরওই। “ইউনাইটেডের কোচ থাকার সময়ও তো এ রকম ছিলাম। কিন্তু কী হয়েছিল?” বলে সতর্ক সঞ্জয় যোগ করেন, “পরের ম্যাচ সালগাওকর। ওরাও কাল মুম্বইকে হারিয়েছে। প্রায় প্রতি মরসুমেই দেখি শুরুটা ওরা খারাপ করলেও পরে ছন্দে ফেরে। স্বভাবতই আমাদের ঘরের মাঠেও ওদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে।”
কোচের পদাঙ্ক অনুসরণ করে দেবজিত্ও সতর্ক। পরের ম্যাচগুলোয় আরও ভাল খেলার জন্য মনঃসংযোগ বাড়াতে ব্যস্ত। ডার্বির সেরা ফুটবলার এ দিন সকালটা কাটান তাঁর উত্তরপাড়ার বাড়িতে। বিকেলের দিকে সামান্য একটু বেরিয়েছিলেন। দেবজিতের পাশপাশি এই মুহূর্তে ময়দান বাগানের গোলকিপার কোচ অর্পণ দে-র প্রশংসায়ও পঞ্চমুখ। যদিও স্বয়ং অর্পণ বললেন, “মরসুমের প্রথম দিনই দেবজিত্দের বলে দিয়েছিলাম ফার্স্ট কিংবা সেকেন্ড কিপার বলে কিছু নেই। ফিটনেস আর প্র্যাক্টিসে যে এগিয়ে সে-ই খেলবে।” তা হলে দেবজিতের সেই এগিয়ে থাকার রহস্য? এ বার অর্পণ “ওকে যা-যা করতে বলেছি নিষ্ঠার সঙ্গে সেটাই করেছে দিনের পর দিন। শুরুর দিকে ওর সেকেন্ড বল ধরতে একটু সমস্যা ছিল। প্রচণ্ড প্র্যাক্টিস করে শুধরে নিয়েছে নিজেকে।” ডার্বিতে দেবজিতের মারকাটারি রিফ্লেক্স তৈরির রোডম্যাপ-ও ফাঁস করলেন অর্পণ। “গত ক’দিন ধরেই হকির গোলপোস্টের সামনে ওকে প্র্যাক্টিস করিয়েছি। সেটাও কাজ দিয়েছে বড় ম্যাচে।”