ডার্বির পরের দিন আলো-আঁধারিতে দুই প্রধানের দুই কোচ।
সমালোচনাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে সঞ্জয় সেন যেমন ফের চলে এসেছেন আলোর বৃত্তে, উল্টো দিকে আইজলকে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন করার কোচ খালিদ জামিল প্রবল অস্বস্তিতে। লাল-হলুদে প্রথম বার তিনি পড়েছেন তীব্র সমালোচনার মুখে। পরামর্শের মোড়কে কর্তারা তাঁকে অনেক কিছুই করতে বারণ করেছেন।
সপ্তাহ শেষে শনি ও রবিবার দুই প্রধানকে খেলতে হবে তিন নম্বর ম্যাচ। সনি নর্দে-দের প্রতিপক্ষ চার্চিল ব্রাদার্স। আল আমনা-দের লড়াই লাজং এফসি-র বিরুদ্ধে। এই পরিস্থিতিতে দুই প্রধানের শিবিরে দু’রকম ছবি।
কাতসুমি ইউসাকে বাতিল করে আর এক জাপানি ইউতা কিনোয়াকি-কে নেওয়ার পর ক্লাবের অন্দরেই সমালোচনায় বিদ্ধ হয়েছিলেন সঞ্জয় সেন। আই লিগের প্রথম ম্যাচে কাতসুমি গোল করে এবং করিয়ে সেরা ফুটবলার হওয়ার পর যা আরও বেড়েছিল। কিন্তু ডার্বিতে নেমেই ইউতা নায়ক হয়ে যাওয়ার পর সোমবার মোহনবাগান কোচ স্বস্তিতে। বলে দিলেন, ‘‘কাতসুমি যে জায়গায় খেলে, সেখানে অনেক ফুটবলার আছে মোহনবাগানে। তাই কর্তাদের বলেছিলাম ইউতাকে নিতে। সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার হিসেবে ওকে চেয়েছিলাম। রক্ষণ এবং আক্রমণ দুটোই ভাল। ওকে নামানো ঝুঁকির ছিল। তবুও ডাক্তার অনুমতি দেওয়ায় নামিয়েছিলাম। ডার্বিতে নেমে ও নিজেকে প্রমাণ করেছে।’’ পাশাপাশি তাঁর মন্তব্য, ‘‘সমালোচনা কেউ করতেই পারে। তা নিয়ে মাথা ঘামাই না কখনও।’’ এ বার নিয়ে চার মরসুম সবুজ-মেরুনের কোচ সঞ্জয়। আই লিগে ঘরের মাঠের একটা ম্যাচও না হারার দুরন্ত রেকর্ডও অক্ষত তাঁর। গত তিন বছরে একবার চ্যাম্পিয়ন, দু’বার রানার্স হয়েছে তাঁর টিম। বলছিলেন, ‘‘এক পয়েন্টের জন্য দু’বার চ্যাম্পিয়ন হতে পারিনি। গতবার ডার্বি জিতেও পরের ম্যাচে লাজংয়ের বিরুদ্ধে পয়েন্ট নষ্ট করেছিলাম। চ্যাম্পিয়ন হতে পারিনি। এ বার সেটা যাতে না হয়, তার চেষ্টা করতে হবে মঙ্গলবার থেকে।’’ তবে ডার্বিতে চোট পাওয়া দিপান্দা ডিকাকে শনিবার মাঠে নামানো হবে কি না তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেননি সঞ্জয়। তাতে কোনও সমস্যা হবে না, জানাচ্ছেন তিনি।
আরও পড়ুন: সমস্যার মধ্যেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নামছেন মেসি
ইউতার আবিষ্কারে যখন সঞ্জয় তুরীয় মেজাজে এবং পরের ম্যাচের কথা ভাবছেন, তখন ইস্টবেঙ্গল কর্তারা হারের কারণ নিয়ে কথা বলেছেন খালিদ জামিলের সঙ্গে। যুবভারতীতে ম্যাচের পর তো বটেই, সোমবার বিকেলেও কোচ ও ফুটবলারদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন কর্তারা। এক শীর্ষ কর্তা বললেন, ‘‘শনিবারের ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য যা যা করার দরকার, সেটা করা হচ্ছে। শিলং ম্যাচের পর দরকার হলে খালিদের সঙ্গে বসব।’’
ক্লাব সূত্রের খবর, রবিবার ম্যাচের পর উইলিস প্লাজার পারফরম্যান্স, ডার্বিতে এত খারাপ খেলার কারণ নিয়ে কর্তারা তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁকে পরামর্শ দেওয়া হয়, সংঘবদ্ধ ভাবে চলার। খালিদ তাঁর টিম মিটিংয়ে শুধু বাছাই করা ফুটবলারদের ডাকেন। সহকারী কোচকেও ঢুকতে দেন না। এগুলো কর্তারা চান না। কোচের তুকতাক ও খামখেয়ালিপনা যে পছন্দ করছেন না, সেটাও নাকি বুঝিয়ে দেওয়া হয় খালিদকে। তবে তাঁকে এখন সরানোর কোনও প্রশ্নই নেই, এটাও পরিষ্কার। এক কর্তা বলছিলেন, ‘‘কলকাতা লিগে মহমেডান আর আই লিগে শুধু ইস্টবেঙ্গলের কাছে হেরেছে। এখনই সরানোর প্রশ্ন আসছে কেন? পরপর আই লিগের ম্যাচ আছে। সেটা মাথায় রাখছি আমরা।’’