আগ্রাসন আর ফুটবলার বাছায় এগিয়ে সঞ্জয়

সঞ্জয় সেন বনাম অ্যাশলে ওয়েস্টউড। মগজাস্ত্রের যুদ্ধে কে এগিয়ে, তিন মেগা কোচের ময়নাতদন্ত—মাথা ঠান্ডা রেখে কঠিন পরিস্থিতি সামলানো সঞ্জয়ের মস্ত গুণ। এক গোলে পিছিয়ে পড়া মোহনবাগান দ্বিতীয়ার্ধে যে ভাবে মরিয়া হয়ে উঠেছিল, তাতেই বোঝা যাচ্ছে হাফটাইমে ড্রেসিংরুমে টিমকে কতটা মোটিভেট করেছিল কোচ সঞ্জয়। ওয়েস্টউড ঠিক এই জায়গাতেই ব্যর্থ।

Advertisement

তানিয়া রায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০১৫ ০৪:২২
Share:

সঞ্জয় সেন বনাম অ্যাশলে ওয়েস্টউড। মগজাস্ত্রের যুদ্ধে কে এগিয়ে, তিন মেগা কোচের ময়নাতদন্ত—

Advertisement

প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়
১) টিমকে তাতানো
মাথা ঠান্ডা রেখে কঠিন পরিস্থিতি সামলানো সঞ্জয়ের মস্ত গুণ। এক গোলে পিছিয়ে পড়া মোহনবাগান দ্বিতীয়ার্ধে যে ভাবে মরিয়া হয়ে উঠেছিল, তাতেই বোঝা যাচ্ছে হাফটাইমে ড্রেসিংরুমে টিমকে কতটা মোটিভেট করেছিল কোচ সঞ্জয়। ওয়েস্টউড ঠিক এই জায়গাতেই ব্যর্থ।

২) আক্রমণাত্মক স্ট্র্যাটেজি
মোহনবাগানের উইংয়ের ব্যবহার অসাধারণ। শুরু থেকেই সঞ্জয় আক্রমণাত্মক স্ট্র্যাটেজি নিয়েছিল, যা একদম ঠিক। একগাদা গোল মিস না করলে মোহনবাগান জিততেও পারত।

Advertisement

সুনীল ছেত্রীর মতো স্ট্রাইকারকে রিজার্ভ বেঞ্চে বসিয়ে রেখে বড় ভুল করেছে ওয়েস্টউড। সুনীল কি আনফিট ছিল? তা হলে বেঞ্চে থাকল কী ভাবে? ও খেললে অনেক বেশি আক্রমণাত্মক দেখাত বেঙ্গালুরুকে।

৩) ম্যাচ রিডিং
বৃষ্টি হওয়ার জন্য মাঠ পিচ্ছিল ছিল। বেঙ্গালুরুতেও হয়েছিল। তা সত্ত্বেও মোহনবাগান ফুটবলাররা সবাই মিলে ওঠা-নামা করেছে। যদি পুরো টিম ফিট না থাকে এটা করা সম্ভব নয়। সঞ্জয় সেটা দেখিয়েছে।

সনির পিছনে দু’জনকে লাগানোটা ওয়েস্টউডের ভুল সিদ্ধান্ত। কারণ মোহনবাগান টিম গেম খেলেছে। এক জনকে আটকে দিলে অন্য প্লেয়ার সেই জায়গাটা পূরণ করে দেয়।

ট্রেভর জেমস মর্গ্যান

১) টিম-গেম

মোহনবাগান সব ম্যাচেই টিম-গেম খেলেছে। এটা ওদের সাফল্যের বড় কারণ। কৃতিত্বটা কোচকেই দেব।

সনি, কাতসুমি বা বোয়াকে আটকানোর দিকেই বেশি নজর দিয়েছিল বেঙ্গালুরু। কিন্তু মোহনবাগানের যে প্রায় সবাই গোল করছে, সেটা ভুলে গিয়েছিল। সব সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে এ দিনও অনেক গোলে জিততে পারত ওরা।

২) চাপেও ঠান্ডা স্নায়ু

প্রবল চাপে স্নায়ু শান্ত রাখা সহজ ছিল না। সেটা মোহনবাগান ফুটবলাররা করে দেখিয়েছে। কাউন্টার অ্যাটাকের যে স্ট্র্যাটেজি মোহনবাগান কোচ নিয়েছিলেন, তাতে তিনি সফল।

এক গোল করার পর বেঙ্গালুরু সেটা ধরে রাখতেই বেশি মরিয়া ছিল। দ্বিতীয় গোল পাওয়ার চেষ্টা সে ভাবে করেনি। ওয়েস্টউডের যেটা করা উচিত ছিল।

৩) সঠিক ফুটবলার নির্বাচন

সনি-কাতসুমিকে সব ম্যাচেই উইংয়ে ব্যবহার করেছেন বাগান কোচ। ওদের ক্রমাগত আক্রমণে যে কোনও বিপক্ষই চাপে পড়ে যাবে।

সুনীলকে কেন শুরু থেকে খেলানো হল না বু‌ঝলাম না। চোট না থাকলে ওকে বেঞ্চে বসিয়ে রাখার যে সিদ্ধান্ত বেঙ্গালুরু কোচ নিয়েছেন, সেটা বড় ভুল।

ডেরেক পেরেরা

১) দূরদর্শিতা

যে কোনও কোচের সবচেয়ে বড় গুণ ম্যান ম্যানেজমেন্ট। যে কাজটা দারুণ ভাবে করেছেন সঞ্জয় সেন। সে জন্যই ওর দল চ্যাম্পিয়ন।

সুনীল ছেত্রীর মতো দেশের এক নম্বর স্ট্রাইকার বেঞ্চে বসে থাকলে যা হওয়ার সেটাই হয়েছে বেঙ্গালুরুর।

২) আক্রমণে গতি

সনি, কাতসুমিকে উইংয়ে ব্যবহার করার সঙ্গে বোয়া, বলবন্তকে যে ভাবে আপফ্রন্টে ব্যবহার করছিলেন সঞ্জয় তাতে আক্রমণে গতি বেড়েছে।

বেঙ্গালুরু ফুটবলারদের একটা সময়ের পর ক্লান্ত দেখাচ্ছিল। বিরতির পর ওরা বেশি রক্ষণাত্মক হয়ে পড়ে।

৩) মাথা ঠান্ডা রাখা সঞ্জয় সেন ঠাণ্ডা মাথার কোচ। যার প্রভাব ওঁর টিমের ফুটবলারদের উপরও পড়েছে। সে জন্য গোল খাওয়ার পরেও টিমটা হতাশ হয়ে পড়েনি।

শেষের দিকে মোহনবাগান যখন গোল শোধ করতে মরিয়া ছিল, তখন বেঙ্গালুরু সেই চাপটা আর নিতে পারেনি। এটা ওদের কোচকেই উদ্দীপ্ত করতে হত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন