সনির কিক রুখে দিয়েই সেরা হলেন, ধারণা রেহনেশের

ফ্যাকাশে, বিবর্ণ ডার্বি ম্যাচ। তবু তার পরও সামনে চলে এল দুই দলের দুই কিপারের উজ্জ্বল দু’টো মুখ।

Advertisement

রতন চক্রবর্তী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:৩৬
Share:

ফ্যাকাশে, বিবর্ণ ডার্বি ম্যাচ। তবু তার পরও সামনে চলে এল দুই দলের দুই কিপারের উজ্জ্বল দু’টো মুখ।

Advertisement

মোহনবাগানের দেবজিৎ মজুমদার এবং ইস্টবেঙ্গলের টিপি রেহনেশ—দু’জনেই দু’টি করে দুর্দান্ত সেভ করলেন। না হলে ম্যাচটার স্কোর লাইন অন্য রকম হত।

যে ম্যাচে সেরা হতেই পারতেন ওয়েডসন, এডু, সৌভিক অথবা প্রণয় সেই ম্যাচে সেরার সম্মান পেলেন কেরলের ছেলে রেহনেশ। এবং পেয়ে নিজেই যেন অবাক হয়ে গেলেন!

Advertisement

আই লিগের নিয়মে ম্যাচ কমিশনারই বাছেন ম্যাচের সেরা ফুটবলার। অদ্ভুত এই নিয়মের জন্য প্রতি ম্যাচেই সেরা নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে। তা হোক, কিন্তু দু’বছর ইস্টবেঙ্গলের জার্সিতে খেলার পর ডার্বিতে সেরা হয়ে লাল-হলুদের কিপার বলে দিলেন, ‘‘সনির যে সোয়ার্ভিং কিকটা বাঁচিয়েছি ওটা বাঁচানো কঠিন ছিল। বলটা ঝুপ করে গোলে পড়ছিল। হয়তো সে জন্যই আমাকে বাছা হয়েছে।’’ মুখ ভর্তি আগোছাল দাড়ি নিয়ে বাগানের প্রীতম কোটালের প্লেসিং শটটি রুখে দেওয়ার পর তিনি ভারতীয় দলে ডাক পাবেন কী না জানেন না রেহনেশ। অবাক হলেন মাঠে জাতীয় কোচ স্টিভন কনস্ট্যান্টাইন ছিলেন শুনে। ‘‘আমি জানতাম না, দেখিওনি ওঁকে।’’ বলছিলেন ট্রেভর মর্গ্যানের টিমের কিপার।

স্টিভন তাঁকে দলে নেবেন কী নেবেন না সেটা ভেবে ডার্বি খেলেননি দেবজিৎ মজুমদার। আইএসএলে আটলেটিকে দে কলকাতাকে চ্যাম্পিয়ন করার পর এখন আই লিগ জেতার কথা ঘুরছে তাঁর মাথায়। ওয়ান টু ওয়ান অবস্থায় উইলিস প্লাজার শট বাঁচিয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘‘গোল বাঁচানোটাই আমার কাজ। সেটাই করেছি। কাউকে দেখে ভাল খেলার চেষ্টা করিনি।’’ প্লাজার শট বাঁচানো ছাড়াও লাল-হলুদের ওয়েডসনের শটও বাঁচিয়েছেন রিষড়ার ছেলে। টিম বাসে ওঠার মুখে বলছিলেন, ‘‘ম্যাচটায় তিন পয়েন্ট পেলে ভাল হত। আমরা ইস্টবেঙ্গলকে ধরে ফেলতাম।’’

সনি নর্ডি আবার বলে গেলেন হাঁটুতে সামান্য যন্ত্রণা অনুভব করছেন। সদ্য চোট সারিয়ে এ ম্যাচেই মাঠে ফেরা হাইতির স্ট্রাইকারকে অবশ্য মুম্বই এফসি ম্যাচের জন্য টিমের সঙ্গে মুম্বই নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পরে প্র্যাকটিসে দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তিনি আদৌ খেলায় জায়গায় আছেন কি না।

ডার্বি গোলশূন্য হলেও বাংলার ফুটবলের নতুন এক দিক কিন্তু উন্মোচন করেছে শিলিগুড়ি। অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের জন্য যুবভারতী বন্ধ হয়ে যাওয়ায় খেলা হল যে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে, সেখানে বাথরুম-সহ দর্শকদের জন্য ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধাও নেই। তা সত্ত্বেও এখানে খেলা হচ্ছে। আসছেন প্রচুর মহিলা সমর্থকও। যদিও তাঁদের অনেকেই এ দিন নানা সমস্যায় পড়েন। এত দিন পাহাড়ের উপর নির্ভর করত শিলিগুড়ির অর্থনীতি। এখন সেখানে জায়গা করে নিয়েছে ফুটবল। নানা সমস্যা সত্ত্বেও।

এ দিন সকাল থেকে এখানকার বাজারগুলোয় ছিল কেনাকাটার ভিড়। ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান সমর্থকরা অনেকেই হোটেল পাননি। তাঁরা সারা দিন বাজার করে ম্যাচ শেষে চলে গিয়েছেন ডুয়ার্স বা কালিম্পং বেড়াতে। অথবা ফিরে গিয়েছেন কলকাতা। মেয়েদের সাফ কাপের পর কলকাতা ডার্বি হয়ে গেল। এর পর ইস্টবেঙ্গল-শিলং ম্যাচও হবে এখানে।

ইস্টবেঙ্গলের চতুর্থ বিদেশি ক্রিস পেইন এ দিন গ্যালারিতে বসে ডার্বি দেখলেন। ক্লাব সূত্রের খবর, তাঁকে শিলং ম্যাচে বুধবার খেলানো হতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন