সেরেনার ভয় ফর্ম, সাহস জর্ডন

নিজের চলতি ‘ফ্লু’ আর প্রতিদ্বন্দ্বীর এই মুহূর্তের অপ্রত্যাশিত তুখোড় ফর্ম—এই দুটো মাত্র ফ্যাক্টর সেরেনা উইলিয়ামসের শনিবার কুড়িতম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের পথে কাঁটা হতে পারে বলে টেনিসপণ্ডিতরা ভাবছেন। যদিও ইতিমধ্যেই সেরেনার সেমিফাইনাল জয় খেলাধুলোর সর্বকালীন ইতিহাসে মাইকেল জর্ডনের সেই বিখ্যাত ‘দ্য ফ্লু গেম’-এর পাশে বসে পড়ছে! দু’টোই জুনের ঘটনা। ১১ আর ৪— এক সপ্তাহের এ দিক-ও দিক!

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৫ ০৩:২৬
Share:

চ্যাম্পিয়ন।

নিজের চলতি ‘ফ্লু’ আর প্রতিদ্বন্দ্বীর এই মুহূর্তের অপ্রত্যাশিত তুখোড় ফর্ম—এই দুটো মাত্র ফ্যাক্টর সেরেনা উইলিয়ামসের শনিবার কুড়িতম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের পথে কাঁটা হতে পারে বলে টেনিসপণ্ডিতরা ভাবছেন। যদিও ইতিমধ্যেই সেরেনার সেমিফাইনাল জয় খেলাধুলোর সর্বকালীন ইতিহাসে মাইকেল জর্ডনের সেই বিখ্যাত ‘দ্য ফ্লু গেম’-এর পাশে বসে পড়ছে! দু’টোই জুনের ঘটনা। ১১ আর ৪— এক সপ্তাহের এ দিক-ও দিক!

Advertisement

১৯৯৭-এর এনবিএ ফাইনালে জাজের বিরুদ্ধে শিকাগো বুলসের রোমাঞ্চকর ৯০-৮৮ পয়েন্টে জয়ের পরেই প্রবল ফ্লু নিয়ে খেলা কিংবদন্তি বাস্কেটবলার জর্ডন কোর্টেই টিমমেটদের গায়ে জ্ঞান হারিয়ে লুটিয়ে পড়েন। তার আগে চূড়ান্ত হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচে তিনি একাই ৩৮ পয়েন্ট এনে দিয়েছিলেন বুলসকে। শুধু দ্বিতীয় কোয়ার্টারেই করেছিলেন ১৭ পয়েন্ট। যার আগেই সাইডলাইনে বমি করেছিলেন ৩৪ বছর বয়সি জর্ডন।

ফরাসি ওপেন সেমিফাইনালেও ‘ফ্লু’ আক্রান্ত তেত্রিশের সেরেনা এক সেট এবং দ্বিতীয় সেটে একটি ব্রেকে পিছিয়ে থাকা অবস্থায় এক মিনিটের কোর্ট বদলের বিরতিতে তাঁর চেয়ারে বসে তোয়ালেতে মুখ গুঁজে বমি করেন। তার পর কোর্টে ঢুকেই প্রতিপক্ষ ব্যাসেনস্কির সার্ভিস ভেঙে শুধু সমতাতেই ফেরেননি সেরেনা, পরের প্রত্যেকটা গেম জিতে ম্যাচটাই বার করে নেন। টানা দশ গেম জিতে। এবং জর্ডনের মতোই বলেন, ‘‘আমার খেলোয়াড়জীবনের সম্ভবত কঠিনতম কাজটা করলাম!’’ সেরেনার কোচ-কাম-প্রেমিক প্যাট্রিকও পরে সাংবাদিক সম্মেলনে অবাক বিস্ময়ে বলেন, ‘‘ওর শারীরিক অবস্থা এতটাই বেহাল ছিল যে, প্রথম সেট কখন শেষ হয়েছে বুঝতেই পারেনি। চেয়ার আম্পায়ারকে জিজ্ঞেস করেছিল!’’

Advertisement

তা সত্ত্বেও আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যে রোলাঁ গারোর ফিলিপ শাঁতিয়ের কোর্টে ‘কুপ সুজান লেংলেন’ হাতে তোলার ব্যাপারে সেরেনাকে ৭৫-২৫ ফেভারিট ভাবা হচ্ছে। জিতলে ওপেন যুগে স্টেফি গ্রাফের (২২) পর সেরেনা প্রথম প্লেয়ার হিসেবে কুড়িটা সিঙ্গলস গ্র্যান্ড স্ল্যাম পাবেন। যা কোনও পুরুষ টেনিস প্লেয়ারেরও নেই। ২০০১-এ জেনিফার ক্যাপ্রিয়েতির পর প্রথম প্লেয়ার হিসেবে বছরের প্রথম দু’টো গ্র্যান্ড স্ল্যাম (অস্ট্রেলীয় ও ফরাসি ওপেন) জিতবেন। গত বছর যুক্তরাষ্ট্র ওপেন থেকে সেরেনার মেজরে জয়-হারের হিসেব ২০-০। কিন্তু ২০১৩ ইউএস ওপেন থেকে ধরলে সাফারোভার জয়-হারের হিসেবও ফেলে দেওয়ার নয়। ২০-৬। বিশেষ করে চলতি গ্র্যান্ড স্ল্যামে সেরেনা যেখানে তাঁর ২৪টি মেজর ফাইনালে ওঠার পথে সবচেয়ে বেশি গেম (৫৭) খুইয়েছেন, সেখানে সাফারোভা ছ’টা রাউন্ডে একটাও সেট হারেননি। সেরেনা এই বয়সে একটাই টুর্নামেন্টে চারটে থ্রি-সেটার’ জেতার ধকল কাটিয়ে ফাইনালে কতটা তাজা থাকবেন সেই প্রশ্নও কেউ কেউ করছেন!

কিন্তু সেরেনা যে আবার শীর্ষ বাছাই হিসেবে কখনও গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনালে বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে প্রথম দশের বাইরে থাকা কোনও প্রতিদ্বন্দ্বীর কাছেও হারেননি! এগারো বছর আগে উইম্বলডন ফাইনালে এক টিনএজার রুশ সুন্দরীর কাছে যে হেরেছিলেন, তখন তো আসলে বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে সেরেনা ছিলেন ১০ আর শারাপোভা ১৫। তবু এক যুগের ব্যবধানে নাম দুটোয় যেন কেমন মিল! সেবার শারাপোভা। এ বার সাফারোভা!

কোনও অঘটনের আগাম বার্তা কি?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন