গোটা ক্রিকেট দুনিয়া এত দিন তাঁর তারুণ্য-রহস্যের সমাধান খুঁজেছে। কিন্তু উত্তর পায়নি। শেষ পর্যন্ত রহস্যের যবনিকা পড়ল আত্মজীবনীতে। তাও আবার ক্রিকেট বুট তুলে রাখার তিন বছর পরে।
যে আত্মজীবনীর নাম ‘গেম চেঞ্জার’। কিন্তু সেই আত্মজীবনীর পাতাতেই যে শাহিদ আফ্রিদির বয়সটাই বেমালুম পরিবর্তন হয়ে যাবে তা কে ভেবেছিলেন!
এত দিন কাগজে-কলমে পাকিস্তানের এই প্রাক্তন ক্রিকেটারের জন্মের সাল ছিল ১৯৮০। কিন্তু এই ২০১৯ সালে এসে তাঁর আত্মজীবনীতে আফ্রিদি স্বীকার করে নিলেন ১৯৮০ নয়। তিনি জন্মেছেন আরও পাঁচ বছর আগে ১৯৭৫ সালে। যার অর্থ, ১৯৮০ সালের ১ মার্চ আফ্রিদির জন্মদিন বলে জানতেন ভক্তরা। তা বদলে গেল। এ যেন ছিল রুমাল হয়ে গেল বেড়াল-এর মতোই। তবে ১৯৭৫ সালের কোন মাসে কোন দিন তাঁর জন্ম তা নিয়ে বিশদে আফ্রিদি কিছুই উল্লেখ করেননি আত্মজীবনীতে।
ক্রিকেট-বিশ্ব এত দিন জানত, ১৯৯৬ সালে নাইরোবিতে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ৩৭ বলে শতরান করার সময় আফ্রিদির বয়স ছিল ১৬। যে রেকর্ড অক্ষত ছিল ১৭ বছর। কিন্তু আত্মজীবনীতে আফ্রিদি জানিয়েছেন, ‘‘আমার জন্ম ১৯৭৫ সালে। ফলে কাগজে-কলমে যে বয়স এত দিন গণ্য হত, তা ঠিক নয়। ১৯৯৬ সালে ওই রেকর্ড গড়ার ইনিংসের সময় আমার বয়স ১৬ ছিল না। তখন আমার বয়স ছিল ১৯। কর্তৃপক্ষ ভুল বয়স বলেছিল।’’
কিন্তু তাতেও যে গোলকধাঁধা থাকছে আফ্রিদির বয়সে। ১৯৭৫ সালে যদি আফ্রিদির জন্ম হয়, তা হলে ১৯৯৬ সালে আফ্রিদির বয়স দাঁড়ায় ২১। কখনও তা ১৯ হতে পারে না। তবে এর উত্তর দেননি আফ্রিদি। নাইরোবির সেই সিরিজের সময় পাক অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে খেলে কিনিয়া এসেছিলেন আফ্রিদি। তাতে বোঝা যায়, জানা সত্ত্বেও বয়স ভাড়িয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ দলে সে সময় খেলেছিলেন পাকিস্তানের এই সুদর্শন ক্রিকেটার।
২০১৬ সালে ওয়ার্ল্ড টি-টোয়েন্টির পরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেন আফ্রিদি। তিন বছর পরে প্রকাশিত হল তাঁর এই আত্মজীবনী। যেখানে আফ্রিদি জন্মের বছর ঠিক করে বলার পরেও বয়স নিয়ে ধোঁয়াশা কাটছে না। কারণ, ২০১৬ সালে অবসরের সময় তাঁর বয়স ৩৬ ছিল না। আফ্রিদির বয়স সেই সময় যে ছিল ৪১।