জিরুর হেডে এল ইউরো ২০১৬-র প্রথম গোল। ছবি: রয়টার্স।
ফ্রান্স-২ (জিরু, পায়েট)
রোমানিয়া-১ (স্তাঞ্চু-পেনাল্টি)
বিপত্তারণ পায়েট!
হাফটাইমে যখন ড্রেসিংরুমে ফিরছিলেন দেশঁ, মুখটা থমথমে। গোল হয়নি।
ম্যাচের শেষ মুহূর্তে টিভি ধরল ফরাসি কোচের মুখটা। তিনি তখন জয়ের গোলদাতা পায়েটকে জড়িয়ে আদর করছেন।
ইউরোর প্রথম ম্যাচটায় দেখতে আগ্রহী ছিলাম পোগবা, গ্রিজম্যান, মাতুইদিদের আক্রমণকে কী ভাবে মোকাবিলা করে রোমানিয়া ডিফেন্স। কিন্তু ম্যাচটা দেখার পর আমি হতাশ। হ্যাঁ, পোগবারা জেতা সত্ত্বেও।
এ বারের ইউরোতে অন্যতম ফেভারিট বলা হচ্ছে ফ্রান্সকে। শুক্রবার রাতে জিরুদের দেখার পর আমি বলতে পারছি না, প্লাতিনি বা জিদানরা যে ভাবে মস্তানি দেখিয়ে ফরাসিদের ইউরো বা বিশ্বকাপ দিয়েছিলেন, সে ভাবে ফ্রান্স এ বার ঘরের মাঠেও এলাম-দেখলাম-জয় করলাম স্টাইলে ইউরো কাপ নিয়ে উৎসব করবে। যদিও মাত্র একটা ম্যাচ দেখলাম। তাও।
আমার মতে এর কারণ দু’টো। এক) আক্রমণে বেঞ্জিমার মতো ফুটবলারের অভাবে ভুগতে হবে দেশঁর টিমকে। রোমানিয়ার বিরুদ্ধে প্রথমার্ধে জিরু যখন একের পর এক গোলের সুযোগ মিস করছিল তখন ব্যাপারটা চোখে পড়ল আরও বেশি করে। ফিনিশিং গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলা। যদিও দ্বিতীয়ার্ধে উইং দিয়ে ক্রস কাজে লাগিয়ে জিরু হেডে গোলটা করল বটে। তবে সেক্ষেত্রে রোমানিয়ার কিপারের ভুলই প্রকট। দুই) ফ্রান্সের দুই সাইড ব্যাক— সাগনা আর এভ্রা। দু’জনের গতিই এত কম যে ওভারল্যাপে উঠতে পারল না সে ভাবে। পাশাপাশি ঠিক ওই জায়গাতেই এ দিন রোমানিয়া নিশানা বানিয়ে ফেলেছিল। এ দিন রোমানিয়ার ১-১ করার পেনাল্টিটাও এল এভ্রার জন্য। আজকের দিনের ফুটবলে যখন একটা খেলা নিয়ে বারবার কাঁটাছেড়া চলে, তখন ফ্রান্সের এই দুর্বলতা ইউরোয় ওদের জন্য বড় ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
একটু পিছনে ফিরলে দেখা যাবে প্রস্তুতি ম্যাচের সব ক’টায় জিতলেও গোল হজম করেছে ফ্রান্স। যতই তাদের ফরোয়ার্ড ও মিডফিল্ড দুরন্ত ফর্মে থাকুক না কেন। রোমানিয়ার কোচ ম্যাচের আগের দিন নিজের টিমকে একটু আড়াল করে রেখেছিলেন। বলেছিলেন ড্র করলেই একটা বড় সাফল্য হবে তাদের কাছে। আসলে এ বারের ইউরো কোয়ালিফায়ারে সবচেয়ে কম গোল খেয়েছে রোমানিয়া। কাজেই ওদের ডিফেন্স যে পোগবাদের ফাঁকা জায়গা দেবে না তা জানা ছিলই। ম্যাচে তা দেয়নি। দু’টো গোল আর জিরুর একটা হেড পোস্টে লাগা সত্ত্বেও এ কথা বলব। তবে ইউরোর মতো টুর্নামেন্টে, তাও ঘরের মাঠে বলে প্রথম ম্যাচে হয়তো দেশঁদের উপর চাপ ছিল। তবে দেশঁর লুকনো তাস পায়েট। এ দিন ও খেলল তেল খাওয়া ইঞ্জিনের মতো। তিন পয়েন্টের সঙ্গে ফ্রান্সের প্রাপ্তি পায়েট-ও।