খালিদে ধোঁয়াশা, শঙ্করলালে আস্থা

আই লিগে স্বপ্নভঙ্গের বিকেলে দুই প্রধানের অন্দরমহলের ছবিতে আশ্চর্য বৈপরীত্য। লাল-হলুদ শিবিরে যখন অস্বস্তি বাড়ছে খালিদকে নিয়ে, তখন শঙ্করলালকে ঘিরেই সুপার কাপ জয়ের স্বপ্ন মোহনবাগানের। 

Advertisement

শুভজিৎ মজুমদার

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৮ ০৪:৫১
Share:

তাঁর কোচিংয়ে আই লিগে শাপমুক্তির স্বপ্ন দেখেছিল ইস্টবেঙ্গল। যুবভারতীতে বৃহস্পতিবার নেরোকা এফসি-র বিরুদ্ধে ড্র করে খেতাব হাতছাড়া করার পরে সেই খালিদ জামিল-ই লাল-হলুদে তাঁর ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা উস্কে দিলেন!

Advertisement

আর এক জন আই লিগের অষ্টম ম্যাচে দায়িত্ব নেন মোহনবাগানের। তাঁর কোচিংয়েই খেতাবি দৌড়ে দিপান্দা ডিকা-দের নাটকীয় প্রত্যাবর্তন। তিনি, শঙ্করলাল চক্রবর্তী এ দিন থেকেই সুপার কাপের প্রস্তুতি শুরু করে দিলেন।

আই লিগে স্বপ্নভঙ্গের বিকেলে দুই প্রধানের অন্দরমহলের ছবিতে আশ্চর্য বৈপরীত্য। লাল-হলুদ শিবিরে যখন অস্বস্তি বাড়ছে খালিদকে নিয়ে, তখন শঙ্করলালকে ঘিরেই সুপার কাপ জয়ের স্বপ্ন মোহনবাগানের।

Advertisement

বৃহস্পতিবার যুবভারতীতে অনেক আশা নিয়ে এসেছিলেন লাল-হলুদ সমর্থকরা। এক) পঞ্চকুল্লায় চার্চিল ব্রাদার্সের বিরুদ্ধে মিনার্ভা এফসি পয়েন্ট নষ্ট করবে। দুই) কোঝিকোড়ে মোহনবাগানকে হারিয়ে দেবে গোকুলম এফসি। তিন) নেরোকা-কে ঘরের মাঠে হারিয়ে চোদ্দো বছর পরে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হবে ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু চার্চিলের বিরুদ্ধে মিনার্ভা এগিয়ে যাওয়ার পরেই শোকের ছায়া নেমে এল যুবভারতীতে। ম্যাচ তখন সবে আঠারো মিনিট গড়িয়েছে। দ্বিতীয় ধাক্কা দিপান্দা ডিকা গোল করে গোকুলমের বিরুদ্ধে মোহনবাগানকে এগিয়ে দেওয়ার পরে। রিজার্ভ বেঞ্চে বসে থাকা খালিদেরও সমর্থকদের মতো বিধ্বস্ত অবস্থা। এই পরিস্থিতিতে ৪২ মিনিটে অর্ণব মণ্ডলের ভুলে গোল করে নেরোকা-কে এগিয়ে দিলেন ফেলিক্স চিডি।

যুবভারতীর গ্যালারিতে প্রাণ ফিরল মোহনবাগানের বিরুদ্ধে গোকলুম সমতা ফেরানোর পরে। খালিদও উজ্জীবিত হয়ে উঠে মহম্মদ আল আমনা, ডুডু-দের উৎসাহ দিতে শুরু করলেন। শেষ পর্যন্ত ডুডু-ই ৭৩ মিনিটে গোল করে সমতা ফেরালেন। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। যাবতীয় জল্পনার অবসান ঘটিয়ে আই লিগ জিতে ইতিহাস গড়ল মিনার্ভা এফসি। আর ম্যাচের পরেই সাংবাদিক বৈঠকে খালিদ বলে দিলেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গলের কোচ থাকব কি না জানি না। ক্লাব কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেব।’’

আই লিগের দ্বিতীয় ডার্বিতে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে হারের পর থেকেই কোচকে সরানোর দাবিতে সরব লাল-হলুদ সমর্থকরা। খালিদ জানিয়েছিলেন, তিনি পালিয়ে যেতে চান না। এ দিনই প্রথমবার দায়িত্ব ছাড়ার ইঙ্গিত দিলেন তিনি। খালিদ বলছেন, ‘‘ব্যর্থতার দায় সম্পূর্ণ আমার। ফুটবলারদের কোনও দোষ নেই। কোচ হিসেবে আমি হয়তো ঠিক মতো পরিকল্পনা করতে পারিনি।’’ কিন্তু সামনেই তো সুপার কাপ? ইস্টবেঙ্গল কোচের জবাব, ‘‘সুপার কাপ নিয়েও এই মুহূর্তে ভাবছি না।’’ তবে কোচ পরিবর্তনের পক্ষে নন লাল-হলুদ কর্তারা। ফুটবল সচিব বললেন, ‘‘খালিদের তো কোনও দোষ নেই। খারাপ রেফারিংয়ের জন্য আমরা জিততে পারলাম না। তা ছাড়া মরসুমের শেষে এখন নতুন কোচ-ই বা পাব কোথায়।’’

মোহনবাগান কোচ বৃহস্পতিবার রাতে কোঝিকোড় থেকে ফোনে শঙ্করলাল বললেন, ‘‘চ্যাম্পিয়ন হতে না পারার আক্ষেপ রয়েছে। তবে আই লিগ এখন অতীত। কারণ, সামনেই যে এখন সুপার কাপ।’’

ইস্টবেঙ্গল: উবেদ সি কে, সামাদ আলি মল্লিক, অর্ণব মণ্ডল, এদুয়ার্দো ফেরিরা, লালরাম চুলোভা, কাতসুমি ইউসা, মহম্মদ রফিক (কেভিন লোবো), মহম্মদ আল আমনা, ইয়ামি লংভা (লালডানমাওয়াইয়া রালতে), জবি জাস্টিন (আনসুমানা ক্রোমা) ও ডুডু ওমাগবেমি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন