আইসিসিতে শশাঙ্ক মনোহর না শ্রীনিবাসন?
আইসিসি-তে নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনের ভাগ্য। প্লেয়ার এবং বোর্ডকর্তাদের স্বার্থ সংঘাত নিয়ে আইন। নির্বাচক কমিটিতে হয়তো একটা বদল। শশাঙ্ক মনোহরের প্রস্তাবিত বিভিন্ন সংস্কারমূলক ধারায় সরকারি সিলমোহর।
আগামিকাল মুম্বইয়ে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের অফিসে যে বার্ষিক সাধারণ সভা বসতে চলেছে, তা ঠিক করে দেবে শ্রীনিবাসন-উত্তর যুগে কোন পথে চলবে বিসিসিআই। উপরের বোর্ডের ভাবমূর্তি পরিচ্ছন্ন এবং শ্রীনি-সংসার সাফ করার যে চ্যালেঞ্জ প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর মনোহর নিয়েছিলেন, তা কোন দিকে যাচ্ছে তার একটা ইঙ্গিত মিলতে পারে বৈঠকে।
বোর্ডের এই বৈঠকে শ্রীনিবাসনের থাকার কোনও খবর নেই। তামিলনাড়ুর ক্রিকেট সংস্থার প্রতিনিধি হয়ে আসছেন না তিনি। টিএনসিএ-র প্রতিনিধিত্ব করার কথা ভাইস প্রেসিডেন্ট পি এস রামনের। আপাতত যা ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, তাতে সোমবার শ্রীনিবাসনের বদলে ভারতীয় বোর্ড থেকে মনোহরকে আইসিসি প্রতিনিধি বাছা হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। সেটা যদি শেষ পর্যন্ত হয়, তা হলে ক্রিকেট থেকে আপাতত পুরোপুরি মুছে যাবে শ্রীনিবাসনের ছায়া।
কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট বা স্বার্থ সংঘাত নিয়েও কড়া হতে চলেছে বোর্ড। যে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে তা এ রকম: কোনও প্লেয়ার্স ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি কোনও ক্রিকেটারের প্রতিনিধিত্ব করলে, সেই কোম্পানিতে সংশ্লিষ্ট ক্রিকেটারের কোনও ব্যবসায়িক স্বার্থ থাকা চলবে না। ক্রিকেটারকে তাঁর এজেন্ট বা ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির নাম বোর্ডকে জানাতে হবে। বোর্ডের স্পনসরের সঙ্গে যে সব বাণিজ্যিক কোম্পানির লড়াই আছে, তাদের সঙ্গে চুক্তি করতে পারবেন না ক্রিকেটাররা। বোর্ড বা বোর্ডের অনুমোদিত সংস্থার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ কোনও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজমেন্ট বোর্ডে কোনও ক্রিকেটার থাকতে পারবেন না যদি তিনি সেই ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে নিয়ন্ত্রণ করেন। বোর্ডের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ কোনও প্রাক্তন ক্রিকেটার আইপিএল-সহ বোর্ডের কোনও কমিটিতে থাকতে পারবেন না।
এতেই শেষ নয়। প্রস্তাবে পরিষ্কার বলা আছে, জাতীয় স্তরের কোচ বা নির্বাচকেরা কোনও ভাবেই কোনও প্রাইভেট কোচিং অ্যাকাডেমি বা কোনও ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি বা কোনও ক্রিকেটারের এজেন্ট হতে পারবেন না। বিসিসিআই কর্তাদের জন্যও কড়া আইন আনতে চলেছে বোর্ড।
স্বার্থ সংঘাতের ধাক্কায় বদল আসতে পারে নির্বাচক কমিটিতেও। ছেলে স্টুয়ার্ট বিনি ভারতীয় দলে থাকায় সরে যেতে হতে পারে অন্যতম নির্বাচক রজার বিনিকে। তাঁর জায়গায় দক্ষিণাঞ্চল প্রতিনিধি হিসেবে তিন জনের নাম শোনা যাচ্ছে। এমএসকে প্রসাদ, বেঙ্কটেশ প্রসাদ এবং ডব্লিউ ভি রামন। বাকি কমিটিতে কোনও বদল আদৌ হয় কি না, সেটাই এখন দেখার।
আইপিএল নিলাম হবে ২০১৭-এ: মহেন্দ্র সিংহ ধোনি, সুরেশ রায়নাদের কী ভাবে নতুন দুটো ফ্র্যাঞ্চাইজি পরবর্তী আইপিএলে দলে নিতে পারবে, তা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে বর্তমান আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সম্ভবত শেষ মিটিংয়ে এটা ঠিক হয়ে গেল, পুরোদস্তুর আইপিএল নিলামটা হবে ২০১৭ সালে। ২০১৬ সালে নয়। পরের বছর শুধু সাসপেন্ড হওয়া ফ্র্যাঞ্চাইজিদের নিলামে তোলা হবে।
এ দিন মিটিংয়ের পর আইপিএল চেয়ারম্যান রাজীব শুক্ল সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘পুরোদমে আইপিএলের নিলামটা হবে ২০১৭ সালে। আর বাকি দুটো ফ্র্যাঞ্চাইজির জন্য দরপত্র নেওয়া হবে ৮ ডিসেম্বর।’’ তবে কাউন্সিলের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, জয়পুর এবং কোচি এই দুই শহর আইপিএল টিমের জন্য বিড করতে পারবে না। এও জানা যাচ্ছে, সাসপেন্ড হওয়া দুই ফ্র্যাঞ্চাইজি— চেন্নাই এবং রাজস্থানের পাঁচ-পাঁচ দশ জন ক্রিকেটারকে ‘ড্রাফ্টেড ক্রিকেটার’ হিসেবে নিলামে তোলা হবে। যাঁদের নেওয়ার প্রথম সুযোগ পাবে নতুন দুটো দল। তবে ঠিক কী পদ্ধতিতে এই দশ জন ক্রিকেটারকে নেওয়া যাবে, তা এখনও পরিষ্কার নয়।