সোনা জিতলে মেরি কমকে উৎসর্গ করবেন শশী

মঙ্গলবারই গুয়াহাটিতে অনুষ্ঠিত বিশ্ব যুব মহিলা বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছেন শশী। যাঁকে এই মুহূর্তে ভারতীয় বক্সিংয়ের অন্যতম সম্ভাবনা বলছেন জাতীয় দলের কোচ ভাস্কর চন্দ্র ভট্ট।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:৩৭
Share:

প্রতিভা: গুয়াহাটিতে জুনিয়র বক্সিং বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে নজর কাড়লেন শশী চোপড়া (লাল জার্সি)। ছবি:পিটিআই

কমনওয়েলথ গেমসে মেরি কমকে দেখার পর বক্সিং রিংয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা। তার পরে লন্ডন অলিম্পিক্সে সেই মেরি কম ব্রোঞ্জ পদক জিততে পাঁচ বছর আগে নিজের লক্ষ্য ঠিক করে নিয়েছিল হরিয়ানার মেয়ে শশী চোপড়া।

Advertisement

কী সেই লক্ষ্য? জানতে চাইলে হিসারের মেয়ে শশী বলছেন, ‘‘মেরি কম লন্ডন অলিম্পিক্সে ব্রোঞ্জ পদক জয়ের দিন বাড়িতে টিভির সামনে থেকে নড়িনি। সে দিন থেকেই মেরি কম আমার আদর্শ। বুঝেছিলাম মেয়েরাও লড়ে দেশের জন্য পদক আনতে পারে। আমিও সেটাই করতে চাই।’’

মঙ্গলবারই গুয়াহাটিতে অনুষ্ঠিত বিশ্ব যুব মহিলা বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছেন শশী। যাঁকে এই মুহূর্তে ভারতীয় বক্সিংয়ের অন্যতম সম্ভাবনা বলছেন জাতীয় দলের কোচ ভাস্কর চন্দ্র ভট্ট। শশী এ দিন ফেদারওয়েট বিভাগে তাইওয়ান-এর লিন লি ওয়েই-ইয়ি-কে হারিয়েছেন এক তরফা লড়াইয়ে। যুব মহিলা বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে পদক জিততে আর এক ধাপ দূরে রয়েছেন তিনি।

Advertisement

সে কথা মনে করালে ভারতের এই মহিলা যুব বক্সার ফোঁস করে ওঠেন। বলেন, ‘‘ওই পদকটা তো ব্রোঞ্জ। এখনও আমাকে আরও দু’টো বড় লড়াইয়ে জিততে হবে সোনা পেতে গেলে।’’ জাঠ মেয়ে ফের বলতে থাকেন, ‘‘দিল্লির শিবিরে আমাদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন মেরি কম দিদি। তখন ওঁর থেকে পরামর্শ নিয়েছি। দিদি, বলে দিয়েছেন, সোনার পদক একমাত্র লক্ষ্য হোক তোর। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে সোনা জিতে মেরি দিদিকে উৎসর্গ করতে চাই।’’

সেপ্টেম্বরে ইস্তানবুলে আহমেট করমেট বক্সিং টুর্নামেন্টে রুপো জিতেছিলেন শশী। সে কথা জানিয়ে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় চ্যাম্পিয়ন আরও বলছেন, ‘‘রিংয়ে আমার লক্ষ্য থাকে বিপক্ষকে কখনও আক্রমণে আসতে না দেওয়া। আগ্রাসী মেজাজেই ম্যাচ শেষ করা আমার পছন্দ।’’

শশীর মতোই এ দিন আগ্রাসী বক্সিং করে কোয়ার্টার ফাইনালে গেলেন অসমের বক্সার অঙ্কুষিতা বড়ো। সেপ্টেম্বর মাসে তুরস্কের যে প্রতিযোগিতায় রুপো জিতেছিলেন শশী সেখানেই ইউরোপ চ্যাম্পিয়ন অলুক কাগলার কাছে হেরে রূপো পেয়েছিলেন অঙ্কুষিতা। এ দিন সেই হারের প্রতিশোধ নিলেন অসমের ভূমিকন্যা। তুরস্কের কাগলাকে তিনি হারালেন ৬৪ কেজি বিভাগে। ম্যাচের পরে গুয়াহাটিতে ফোনে যোগাযোগ করা হলে অঙ্কুষিতা আক্রমণাত্মক মেজাজেই বললেন, ‘‘কাগলা আমাকে ওর দেশে হারিয়েছিল। ওকে আমার দেশে হারাতেই হবে সেই লক্ষ্য নিয়েই আজ নেমেছিলাম। ওকে দাঁড়াতে দিইনি।’’

৪৮ কেজি বিভাগে কোয়ার্টার ফাইনালে গিয়েছেন ভারতের আর এক উঠতি প্রতিভা নীতু। বর্তমানে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন এবং বলকান যুব আর্ন্তজাতিক টুর্নামেন্টে সোনাজয়ী এই বক্সার হারিয়েছেন বুলগেরিয়ার এমি-মারি তোদোরোভা-কে।

এই তিন বক্সার ছাড়াও এ দিন কোয়ার্টার ফাইনালে গেলেন, জ্যোতি জিউলি এবং সাক্ষী। সব মিলিয়ে পদকের দোড়গড়ায় দাঁড়িয়ে পাঁচ বক্সার। এরই সঙ্গে এ দিন সেমিফাইনালে গিয়ে পদক নিশ্চিত করে ফেললেন নেহা যাদব (৮১ কেজির বেশি বিভাগ) ও অনুপমাও (৮১ কেজি)। ভারতীয় দলের চিফ কোচ ভাস্কর চন্দ্র ভট্ট বলছেন, ‘‘বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে দশ জন ভারতীয় মেয়ের মধ্যে দু’জনের পদক নিশ্চিত। আর এক ম্যাচ জিতলেই পদক এই পরিস্থিতিতে রয়েছে আরও পাঁচ জন। এই মুহূর্তে এই টুর্নামেন্টের প্রথম দশটি দেশের মধ্যেই রয়েছে ভারত। টুর্নামেন্টে প্রথম পাঁচেই থাকতে চাইছি আমরা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন