স্বপ্নপূরণ শেখ ফৈয়জের। মোহনবাগানের হয়ে এ বার আই লিগ খেলবেন তিনি।
কলকাতা প্রিমিয়ার লিগে চলতি মরসুমে মহমেডানের হয়ে দুরন্ত ফর্মে বছর বাইশের ফৈয়জ। উইঙ্গার হয়েও এখনও পর্যন্ত তিন গোল করেছেন তিনি। এ বার তাঁর লক্ষ্য আই লিগেও মোহনবাগানের হয়ে নিয়মিত খেলা। কলকাতা প্রিমিয়ার লিগ শেষ হলেই সবুজ-মেরুনের চুক্তিতে সই করবেন ফৈয়জ। হাওড়ার মাকড়দহে বাড়ি বাড়ি ঘুরে আতর বিক্রি করেন ফৈয়জের বাবা শেখ জালালউদ্দিন। প্রবল দারিদ্রের মধ্যেও ছেলের খেলা বন্ধ হতে দেননি তিনি। মোহনবাগানে চূড়ান্ত হয়ে উচ্ছ্বসিত ফৈয়জ বললেন, ‘‘আই লিগে খেলার স্বপ্ন এ বার বাস্তব হতে চলেছে। আমার লক্ষ্য মোহনবাগানের হয়ে নিজেকে উজাড় করে দেওয়া।’’ ২০ অগস্ট বারাসত স্টেডিয়ামে সাদার্ন সমিতির বিরুদ্ধে কলকাতা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে অসাধারণ খেলেছিলেন ফৈয়জ। জো়ড়া গোল করে ম্যাচের সেরাও হন তিনি। মহমেডান উইঙ্গারের খেলা দেখে মুগ্ধ জাতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক জো পল আনচেরি বলেছিলেন, ‘‘লক্ষ্যে স্থির থাকতে পারলে অনেক দূর যাবে ফৈয়জ।’’ ফৈয়জের বিশেষত্ব কী? আনচেরির ব্যাখ্যা, ‘‘গতি এবং হার না মানা মানসিকতা।’’
কলকাতা প্রিমিয়ার লিগে ফৈরজের খেলা দেখেই তাঁকে আই লিগের জন্য সই করানোর সিদ্ধান্ত নেন মোহনবাগান কোচ সঞ্জয় সেন। তিনি বললেন, ‘‘ফৈয়জ দারুণ প্রতিভাবান। বল নিয়ে প্রচণ্ড গতিতে আক্রমণে উঠে কাট করে ভিতরে ঢুকতে পারে। প্রচুর পরিশ্রম করে। তাই আই লিগের জন্য ওকে নিয়েছি।’’ ১০০ মিটার ১২ সেকেন্ডেরও কম সময়ে দৌড়তে পারেন ফৈয়জ। গতি বাড়াতে বাড়তি অনুশীলনও করেন তিনি। ফৈয়জ বলছিলেন, ‘‘এআইএফএফ অ্যাকাডেমিতে থাকার সময় জাতীয় দলের ফিজিক্যাল ট্রেনার ড্যান ডেগানের কাছে গতি বাড়ানোর বিশেষ অনুশীলন করতাম। ওঁর বানিয়ে দেওয়া প্র্যাকটিস শিডিউল মেনে এখনও প্র্যাকটিস করি।’’
মোহনবাগানে ডাক পেয়েই শুধু নয়, ফৈয়জ উত্তেজিত সনি নর্দের সঙ্গে খেলার সুযোগ পেয়ে। বললেন, ‘‘সনি ও আমার একই পজিশন। তাই ওর কাছে জানতে চাইব, কী ভাবে খেলার উন্নতি করা যায়। সনির মতো তারকার সঙ্গে খেলার সুযোগটা পুরোপুরি কাজে লাগাতে চাই।’’ হাওড়া মৌরি স্পোর্টিং ক্লাব থেকে উত্থান ফৈয়জের। শুরু করেছিলেন স্ট্রাইকার হিসেবে। কিন্তু অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় দলের কোচ কলিন টোলের পরামর্শে পজিশন বদল করেন তিনি। মাসখানেক আগে অনূর্ধ্ব-২৩ জাতীয় শিবিরেও ডাক পেয়েছিলেন। কিন্তু চূড়ান্ত দলে সুযোগ পাননি। জাতীয় দল থেকে বাদ পড়াটাই যেন তাতিয়ে দিয়েছিল সুনীল ছেত্রীর ভক্তকে। নিজেকে প্রমাণ করার জন্য বেছে নেন কলকাতা প্রিমিয়ার লিগ।