ক্রীড়া উৎসবে চলছে খো খো প্রতিযোগিতা। সোমবার শিলচরে। — নিজস্ব চিত্র
মহিলারা মাঠে নেমে ফুটবল খেলবেন, তা কয়েক দিন আগেও ভাবতে পারত না শিলচর। কিন্তু রাজ্য সেরার খেতাব ঘরে তুলল স্থানীয় মহিলা দলই। অসম ক্রীড়া উৎসবে আজ ফাইনালে কোকরাঝাড়কে হারাল শিলচর। ২-০ গোলে। কোকরাঝাড় আজ পুরুষদের ফুটবলেও পরাস্ত হয়। সেখানে ৪-৩ গোলে তাদের হারিয়ে গোয়ালপাড়া হয় চ্যাম্পিয়ন।
পাঁচ দিনে শিলচর পদক তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে। তবে মহিলা ফুটবলে সোনা জয়ে সর্বত্র উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়ে। এর আগে আন্তঃজেলা টুর্নামেন্টে অংশ নিলেও, চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি শিলচর মহিলা দল। আজও সহজে সাফল্য ধরা দিয়েছে, এমন বলা যায় না। কোকরাঝাড়ের মেয়েরা শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ছিলেন। গোল না পেলেও শেষ বাঁশি পর্যন্ত পুরো মাঠ দাপিয়ে খেলেছেন। শিলচরের গোল-খিদে শুরু থেকে ধরা পড়ে। প্রথমার্ধে গোল করেন নাউটা শর্মা। দ্বিতীয়ার্ধে ফিরতাংপুই মার। সুশীলা আয়েকপাম তিনকাঠি সামলেও দলকে সুযোগ্য নেতৃত্ব দিয়েছেন। গত কাল ছেলেদের সেমি-ফাইনালে কোকরাঝাড়ের কাছে হেরেছিল শিলচর। আজ মেয়েরা পাল্টা জবাব দিল। কোচ বাবু সিংহ প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘‘পুরো কৃতিত্ব মেয়েদের। ১০০ শতাংশ খেটে খেলেছে।’’ ২০১০ সালে অনূর্ধ্ব ১৯ মহিলা টিম নিয়ে বঙ্গাইগাঁও গিয়েছিলেন বাবু সিংহ। রানার্স হয়ে ফেরেন তাঁরা। সেই থেকে দলকে সেরা বানানোর চেষ্টা করে গিয়েছেন তিনি। সে কাজে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহযোগিতার কথাও উল্লেখ করেন।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ-সচিব শিথিল ধর বলেন, ‘‘ইতিহাস তৈরি করল শিলচরের এই দল। শিলচর বা কাছাড় আগে কখনও চ্যাম্পিয়ন হয়নি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের বড় পাওনা, স্থানীয় মেয়েদের এই সাফল্য নতুনদের উৎসাহিত করবে।’’
চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আনন্দ ভাগ করে নিতে গিয়ে শিথিলবাবু সামান্য অতীতের দিকে তাকান। শিলচরে প্রথম মহিলা ফুটবল টুর্নামেন্টে তিনিই ছিলেন উদ্যোক্তা। ফুটবল অ্যাকাডেমির মাঠে চালু করেছিলেন সাময়িক প্রসঙ্গ কাপ মহিলা ফুটবল টুর্নামেন্ট। শুরুর দিকে চা বাগানের মেয়েরা ভাল খেলছিল। মাঝে উৎসাহে কিছুটা ভাটা দেখা দেয়। তাই দু’বছর ধরে টুর্নামেন্টটি বন্ধ। তবে চলতে থাকে জেলাদল গঠন, আন্তঃজেলা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ। বিভিন্ন জায়গায় প্রদর্শনী মহিলা ফুটবলেরও আয়োজন করা হচ্ছে। শিথিলবাবু বলেন, ‘‘এ সবেরই অবদান আজকের সোনাজয়।’’ এ দিন উৎসবের পঞ্চম দিনে রেসলিংয়েও ভাল ফল করে ঘরোয়া দল। চারটি ইভেন্টের তিনটিতেই চ্যাম্পিয়ন শিলচরের কুস্তিগীররা। একমাত্র ৮৬ কেজি ওপেনে সোনা জেতে গোলাঘাট। সাইক্লিংয়ে ২টি করে স্বর্ণপদক পায় গুয়াহাটি ও তেজপুর। কামরূপ, নগাঁও এবং যোরহাটের ঝুলিতেও যায় ১টি করে। বাস্কেটবলে গুয়াহাটি চ্যাম্পিয়ন, গোয়ালপাড়া রানার্স। ফলে এ দিনও গুয়াহাটিই পদক তালিকায় শীর্ষস্থান দখল করে রাখে।