ডোপিংয়ের অভিযোগকে ভয় পাচ্ছেন না বাইলস

দীপা কর্মকারকে হারিয়ে রিও অলিম্পিক্সে সোনা জেতা সিমোন বাইলস কি ডোপ করেছিলেন? মার্কিন অ্যাথলিটের বিরুদ্ধে রাশিয়ার হ্যাকারদের চাঞ্চল্যকর দাবি ওঠার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই কিন্তু পাল্টা দাবিতে ডোপিংয়ের সম্ভাবনা ওড়ালেন স্বয়ং বাইলস।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৪২
Share:

দীপা কর্মকারকে হারিয়ে রিও অলিম্পিক্সে সোনা জেতা সিমোন বাইলস কি ডোপ করেছিলেন?

Advertisement

মার্কিন অ্যাথলিটের বিরুদ্ধে রাশিয়ার হ্যাকারদের চাঞ্চল্যকর দাবি ওঠার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই কিন্তু পাল্টা দাবিতে ডোপিংয়ের সম্ভাবনা ওড়ালেন স্বয়ং বাইলস।

রিওয় চারটি ইভেন্টে সোনাজয়ী বাইলসের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, ওয়াডার তালিকায় নিষিদ্ধ এমন ওষুধ বহুবার নিয়েছেন তিনি। তবু তাঁকে ছাড় দিয়েছে ওয়াডা। বিশ্ব ডোপ বিরোধী সংস্থার ডেটাবেস হ্যাক করে এই তথ্য উঠে এসেছে দাবি করেছিল রাশিয়ার হ্যাকার গ্রুপ ফ্যান্সি বিয়ারস।

Advertisement

বাইলসের রোগ

ফোকাস করতে সমস্যা, চঞ্চলতা, অগোছালো হয়ে পড়া, অনর্গল কথা বলা,
কারও কথা বা খেলার মাঝে আচমকা ঢুকে পড়া। যা সামলাতে তাঁকে ওযুধ খেতে হচ্ছে।

ওয়াডা মঙ্গলবারই তাদের ডেটাবেস হ্যাক হওয়ার কথা স্বীকার করলেও এটা পরিষ্কার করে দিয়েছিল যে, নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে কোনও কোনও অ্যাথলিটকে চিকিৎসার জন্য নিষিদ্ধ ওযুধ ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। অ্যাথলিটরা ডোপ করেননি। সব নিয়ম মেনেই তাঁদের এই অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।

সিমোন বাইলসের সাফাই, ছোটবেলা থেকেই তাঁর একটা সমস্যা রয়েছে। যার নাম এডিএইচডি বা অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাকটিভিটি ডিসঅর্ডার। যে জন্য তাঁকে ওষুধ খেতে হয়। ‘‘এডিএইচডির জন্য ছোটবেলা থেকেই ওযুধ খাচ্ছি। এতে লজ্জার কিছু নেই। ব্যাপারটা সবাইকে জানাতে আমি ভয় পাচ্ছি এমনও নয়। আমি খেলাধুলোকে পরিচ্ছন্ন রাখায় বিশ্বাস করি। সব সময় তাই নিয়ম মেনে চলেছি। এবং সেটাই করে যাব।’’ সিমোনের কথা সমর্থন করে আন্তর্জাতিক জিমন্যাস্টিক্স ফেডারেশনও জানিয়ে দিয়েছে কোনও নিয়ম ভাঙেননি তিনি।

রাশিয়ার হ্যাকাররা শুধু সিমোন নয়, সঙ্গে দুই মার্কিন টেনিস তারকা সেরিনা আর ভিনাস উইলিয়ামসকেও নিশানা করেছিল। তাদের বক্তব্য ছিল দু’জনই ডোপ করেছেন। যার পাল্টা দাবিতে এ দিন ভিনাস উইলিয়ামস বলেছেন, ‘‘আমার ব্যক্তিগত গোপন মেডিক্যাল ডেটা এ ভাবে প্রকাশ্যে আসায় আমি খুব হতাশ।’’ ভিনাসের বক্তব্য, যে ওযুধগুলো তিনি নিয়েছেন বলা হয়েছে, সেগুলো সবই চিকিৎসার জন্য। যাকে বলা হয়, টিইউই বা থেরাপিউটিক ইউজ এগ‌জেমশন। সেই অনুমতি পেতে কঠোর নিয়মের মধ্যে যেতে হয়। সে সবই মেনে তিনি অনুমতি পেয়েছিলেন। ভিনাস তাঁর দাবি জানালেও এ ব্যাপারে সেরিনা উইলিয়ামস এখনও মুখ খোলেননি। আন্তর্জাতিক টেনিস ফেডারেশন অবশ্য জানিয়ে দিয়েছে, দুই টেনিস তারকা কোনও নিয়ম ভাঙেননি।

কিন্তু হঠাৎ রাশিয়ার হ্যাকাররা বেছে বেছে মার্কিন অ্যাথলিটদেরই নিশানা করলেন কেন?

বলা হচ্ছে, একশোরও উপর রাশিয়ান অ্যাথলিটকে ডোপ কেলেঙ্কারিতে রিও অলিম্পিক্স থেকে নির্বাসিত করাটাই নাকি কারণ। তারই বদলা নেওয়ার চেষ্টা করল হ্যাকাররা। আগেই নাকি সাইবার আক্রমণ নিয়ে ওয়াডাকে সতর্কও করা হয়েছিল। রুশ সরকার নিয়ন্ত্রিত ডোপ কেলেঙ্কারি ওয়াডা ফাঁস করার পর। রুশ সরকার অবশ্য জানিয়েছে হ্যাকিংয়ের সঙ্গে তাঁদের কোনও রকম সম্পর্ক নেই। ‘‘এই সাইবার আক্রমণের সঙ্গে রাশিয়ার সরকারের জড়িত থাকার কোনও প্রশ্নই নেই,’’ বলেছেন রুশ সরকারের মুখপত্র।

কিন্তু তাতেই বিতর্ক থামছে না। বরং হ্যাকারদের আক্রমণে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ ওয়াডা। ডিরেক্টর জেনারেল ওলিভিয়ার নিগলি বলেছেন, ‘‘রাশিয়ার উপর বিশ্বের ডোপ বিরোধী কমিউনিটির আস্থা ফেরার প্রক্রিয়া এই ঘটনায় জোর ধাক্কা খেল। আমরা জানতে পেরেছি এই আক্রমণ রাশিয়া থেকেই আসছে।’’

ফ্যান্সি বিয়ারসের হুঙ্কার অবশ্য এখানেই থামছে না। তাদের দাবি, ‘‘অপেক্ষা করুন। খুব তাড়াতাড়ি আমরা ফাঁস করব বিখ্যাত অ্যাথলিটদের ডোপে জড়ানোর কেলেঙ্কারি। সঙ্গে হইচই ফেলে দেওয়ার মতো প্রমাণও দেব।’’

তবে যতই রাশিয়ার হ্যাকাররা দাবি করুক, আইওসি কিন্তু জানিয়ে দিয়েছে, ‘‘যে যে অ্যাথলিটের কথা বলা হয়েছে তারা কোনও নিয়ম ভাঙেনি। যে ভাবে তাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে সেটা নিন্দনীয়।’’

মার্কিন জিমন্যাস্ট সংস্থার মুখপাত্র আবার বলেছেন, ‘‘টিইউই-র জন্য কোনও ডোপ বিরোধী নিয়ম ভাঙেনি বাইলস। রিও অলিম্পিক্সেও না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন