অনুশীলন বয়কট করার হুমকি সনিদের

আই লিগের শেষ তিন ম্যাচের আগে কী ভাবছেন খেতাব যুদ্ধে থাকা টিমের কোচেরা? লুধিয়ানা থেকে ফোনে সঞ্জয় সেনের মন্তব্য, ‘‘লিগ খেতাব পেতে হলে আমাদের দু’টো ম্যাচ জিততেই হবে। একটিতে ড্র চাই।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৩৯
Share:

ফুরফুরে: লুধিয়ানায় যাওয়ার পথে একটি ধাবায় বলবন্ত-শেহনাজরা।

আই লিগের শেষ তিন ম্যাচের আগে কী ভাবছেন খেতাব যুদ্ধে থাকা টিমের কোচেরা?

Advertisement

লুধিয়ানা থেকে ফোনে সঞ্জয় সেনের মন্তব্য, ‘‘লিগ খেতাব পেতে হলে আমাদের দু’টো ম্যাচ জিততেই হবে। একটিতে ড্র চাই।’’

লাল-হলুদে তাঁর কোচিং জীবন সুতোয় ঝুলছে এই অবস্থায় ট্রেভর জেমস মর্গ্যান বলে দিচ্ছেন, ‘‘আমাদের সম্ভাবনা ক্ষীণ। তবে ফুটবলে কোনও কিছুই অসম্ভব নয়।’’

Advertisement

আর গোয়ায় পৌঁছে আইজল এফ সি-র কোচ খালিদ জামিলের মন্তব্য, ‘‘বাকি তিনটি ম্যাচের সব দলই খুব কঠিন প্রতিপক্ষ। পয়েন্ট নষ্ট করলেই ছিটকে যাব।’’

এ বারের আই লিগ টেবলের যা পরিস্থিতি তাতে সেই অর্থে বড় কোনও অঘটন না ঘটলে খেতাব যুদ্ধটা মোটামুটি মোহনবাগান ও আইজলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে মনে হচ্ছে। কারণ ডার্বি হারের পর মেহতাব হোসেনদের যা অবস্থা তাতে তাদের শেষ তিনটি ম্যাচ জিতলেও খেতাব জেতা সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে মোহনবাগান ও আইজলকে অন্তত একটি করে ম্যাচ হারতে হবে এবং ড্র করতে হবে। যা কার্যত অসম্ভব। উইলিস প্লাজাদের এখনও ম্যাচ বাকি ডি এস কে শিবাজিয়ান্স, মিনার্ভা পঞ্জাব এবং মুম্বই এফ সি-র সঙ্গে। ইস্টবেঙ্গল সব ম্যাচ জিতলেও ৩৬-এর বেশি পয়েন্ট তুলতে পারবে না। এটা মর্গ্যানের চেয়ে বেশি কেই বা জানে? শিলিগুড়িতে ডার্বি ম্যাচের পর কর্তাদের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি বলে দিয়েছিলেন, ‘‘আমাদের খেতাব জেতার সম্ভাবনা দশ শতাংশও নেই।’’

অন্যদিকে মোহনবাগান এবং আইজল দাঁড়িয়ে আছে ৩০ পয়েন্টে। তবে গোল পার্থক্যে এগিয়ে সনি নর্দেরা। দু’দলেরই তিনটে করে ম্যাচ বাকি। সনি-ড্যারেল ডাফিদের খেলতে হবে মিনার্ভা পঞ্জাব ছাড়াও আইজল এবং চেন্নাইয়ের সঙ্গে। এর মধ্যে চেন্নাই ম্যাচটাই শুধু তাদের ঘরের মাঠে। আইজলের ম্যাচ বাকি চার্চিল ব্রাদার্স, মোহনবাগান এবং শিলং লাজংয়ের সঙ্গে। আপাতদৃষ্টিতে দেখতে গেলে আইজলের সঙ্গে তাদের মাঠে মোহনবাগান ম্যচটাই টার্নিং পয়েন্ট হয়ে যেতে পারে খেতাব যুদ্ধের।

সেজন্যই তেরো বছর পর মোহনবাগানকে আই লিগ দেওয়া কোচ সঞ্জয় সেন শনিবারের লুধিয়ানার ম্যচটাকে ফাইনাল ধরে এগোতে চাইছেন। ভোর পৌনে পাঁচটায় শিলং থেকে বেরিয়ে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে সাতটায় সনি, ডাফি, দেবজিৎ মজুমদাররা লুধিয়ানা পৌঁছলেন। প্রায় সাড়ে চোদ্দ ঘণ্টার বিমান ও বাস যাত্রার পর প্রচণ্ড ক্লান্ত ইউসা কাতসুমিরা দ্রুত ডিনার করে চলে যান নিজেদের ঘরে। মোহনবাগান কোচ ঠিক করেছিলেন ফুটবলারদের বিশ্রাম দিতে আজ শুক্রবার বিকেলে অনুশীলন করাবেন। সে জন্যই বিকেল সাড়ে চারটের সময় স্টেডিয়ামে অনুশীলনের জন্য মিনার্ভা কর্তাদের কাছে অনুরোধ করেছিল মোহনবাগান। কিন্তু মিনার্ভা তা দিতে রাজি হয়নি। উল্টে প্রচন্ড গরমে দুপুর বারোটায় অনুশীলন করতে বলা হয় সনিদের। মোহনবাগানের পক্ষ থেকে পুরো ঘটনা জানিয়ে ফেডারেশনের কাছে প্রতিবাদপত্র পাঠানো হয় রাতে। জানানো হয়, মিনার্ভা কর্তাদের এই অমানবিক আচরণের প্রতিবাদে তাঁরা না-ও অনুশীলনে নামতে পারেন। ফোনে মোহনবাগান কোচ বলছিলেন, ‘‘প্রচন্ড ক্লান্ত সবাই। বুধবার রাতে ঘুমোতে পারেনি কেউই। এই অবস্থায় দুপুরে অনুশীলন করা সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে ম্যাচের আগে অনুশীলন না-ও করাতে পারি।’’ সঞ্জয়ের যা অঙ্ক তাতে মিনার্ভা ও চেন্নাই ম্যাচ জিতে আইজল ম্যাচ ড্র করতে পারলেই খেতাব মুঠোয়। খালিদ অবশ্য কোনও অঙ্ক নিয়ে কথা বলতে নারাজ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘না জিতলে কোনও অঙ্কই কাজে লাগবে না।’’

ফেডারেশন চাইছে চ্যাম্পিয়ন ও অবনমনে থাকা সব টিমের ম্যাচ এক সঙ্গে দিতে। সেক্ষেত্রে চ্যাম্পিয়নশিপ হয়তো নির্ধারিত হবে ৩০ এপ্রিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন