মঙ্গলবার প্র্যাকটিসে সনিকে বেঙ্গালুরুর রক্ষণ ভাঙার স্ট্র্যাটেজিই কি বোঝাচ্ছেন সঞ্জয়? -নিজস্ব চিত্র
আই লিগের খেতাব জেতার ম্যাচে সনি নর্ডিকে চিন্তায় রেখেছে বেঙ্গালুরু এফসি-র রক্ষণ। কিন্তু কেন? এই বেঙ্গালুরুকেই তো যুবভারতীতে চার গোল দিয়েছিলেন সনি-কাতসুমিরা। হাইতির স্ট্রাইকার আবার সুনীল ছেত্রীদের বিরুদ্ধে জোড়া গোলও করেছিলেন।
মঙ্গলবার প্র্যাকটিসের পর সনি বলছিলেন, ‘‘শেষ সাত ম্যাচে বেঙ্গালুরু কিন্তু গোল খেয়েছে মাত্র চারটি। ওদের দুই বিদেশি স্টপার জনসন এবং ওসানো খুব ভাল ফর্মে আছে। এটা ওদের প্লাস পয়েন্ট। বেঙ্গালুরুর রক্ষণ সংগঠনও বেশ শক্তিশালী। ওদের ডিফেন্স ভাঙা সহজ হবে না।’’ এটা বলার পর সুনীলদের রক্ষণ ভাঙার উপায়ও বাতলেছেন বাগানের তারকা। ‘‘গোল করার জন্য অনেক বেশি আক্রমণাত্মক হতে হবে আমাদের। ওদের রক্ষণে এমন চাপ তৈরি করতে হবে যাতে দিশাহারা হয়ে পড়ে জনসনরা। নয়তো সমস্যায় পড়ে যাব আমরা। কারণ ড্র নয়, ম্যাচটা জিততে চাইছি আমরা।’’
এ বার আই লিগে বেঙ্গালুরু এফসি (৩৪) সবচেয়ে বেশি গোল করেছে। কিন্তু গোল হজমও করেছে ১৮টি। উল্টো দিকে মোহনবাগান ৩২টি গোল করেছে। গোল খেয়েছে সবচেয়ে কম। ১৫টি। বাগান ডিফেন্স নিয়ে তাই যতই সমালোচনা হোক, বাগান কোচ সঞ্জয় সেন পরিষ্কার বলে দিলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত আমরা সবচেয়ে কম গোল খেয়েছি। তাই নিজের ডিফেন্ডারদের নিয়ে আমি আত্মবিশ্বাসী।’’ যা পরিস্থিতি তাতে সনি-বলবন্ত বনাম সুনীল-শন রুনিদের গোল করার লড়াইয়ের পাশাপাশি দু’টিমের ডিফেন্ডারদের গোল না খাওয়ার যুদ্ধটাও বেশ আকর্ষণীয় হতে চলেছে, মনে করছেন অনেকেই।
পর পর দু’ম্যাচ জিতে বাগানে এখন ‘ফিল গুড’ পরিবেশ। এ দিন প্র্যাকটিসে গিয়ে দেখা গেল ফুটবলাররা সবাই খুব চনমনে। টিমের ব্রাজিলিয়ান ফিজিক্যাল ট্রেনার গার্সিয়ার জন্মদিন উপলক্ষে এ দিন কর্তা-কোচ-ফুটবলার সবাই মিলে কেক কাটলেন। আসলে, কর্তারা এবং কোচ চাইছেন, চ্যাম্পিয়নশিপের যে প্রবল চাপ থেকে ফুটবলারদের দূরে রাখতে। সনিদের কোচ বলেও দিলেন, ‘‘আমি সব ফুটবলারকেই বলেছি একেবারে হালকা মেজাজে থাকতে। মাঠের বাইরে যেন ম্যাচ নিয়ে বাড়তি চাপ না নেয়। পরিবারের সঙ্গে মজা করে সময় কাটাতে বলেছি সবাইকে।’’
আঠারো জনের টিম ঘোষণা হওয়ার কথা ছিল এ দিন। তবে ধনচন্দ্রের চোটের পরিস্থিতি না জেনে চূড়ান্ত টিম ঠিক করা হয়নি। আজ বুধবার প্র্যাকটিসে ধনচন্দ্রকে দেখার পর তবেই বেঙ্গালুরুগামী দল ঠিক হবে। যদি ধনচন্দ্র যেতে পারেন, তবে বাদ পড়তে পারেন দীপক দেবরানি।
এ দিকে গরমের জন্য পেটের সমস্যা হওয়ায় এ দিন অনুশীলনে আসতে পারেননি আনোয়ার। আই লিগের ফাইনাল ম্যাচের আগে বাকি ফুটবলাররা যাতে গরমে অসুস্থ হয়ে না পড়েন, সে জন্য হালকা অনুশীলন করাচ্ছেন সঞ্জয়। পাশাপাশি তিনি সনিদের নির্দেশ দিয়েছেন, বেশি করে জল খেতে। সহজপাচ্য খাবার খেতে। রোদে বেশি না ঘুরতে। এবং অনিয়ম না করতে।
খেতাব জয়ের ম্যাচ নিয়ে নানা পরিকল্পনার পাশাপাশি নতুন মরসুমের দল নিয়েও চিন্তাভাবনা শুরু হয়ে গেল বাগানে। অর্থসচিব দেবাশিস দত্ত বলে দিলেন, ‘‘ফুটবল সচিব এবং কোচের সঙ্গে আলোচনা করেই পরের মরসুমে দল তৈরি হবে।’’