আমের গ্রেফতারের সেই দিন।
ভারতীয় ক্রিকেট যখন বিরাট কোহালির নেতৃত্বে ছুটছে, পাক ক্রিকেট তখন ফের বিদ্ধ স্পট ফিক্সিং কেলেঙ্কারিতে। দুবাইয়ে পাকিস্তান সুপার লিগ থেকে ইতিমধ্যেই স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগে ফেরত পাঠানো হয়েছে শার্জিল খান ও খালিদ লতিফ’কে। পাক ক্রিকেট বোর্ড সূত্রে খবর, দু’জনের বিরুদ্ধেই চার্জশিট জমা দিচ্ছে পাক বোর্ডের দুর্নীতিদমন শাখা।
স্পট ফিক্সিং কাণ্ডে এমনই হুলস্থূল পড়ে গিয়েছে পাক ক্রিকেটে যে, আইপিএলের ঢংয়ে তৈরি তাদের সুপার লিগ নিয়েও অপ্রীতিকর প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এমনকী, অনেকে আক্রমণ করছেন মহম্মদ আমিরকে ফিরিয়ে আনার পক্ষে থাকা কর্তাদেরও। এঁদের বক্তব্য, ‘‘আমিরকে এমন নায়কের অভ্যর্থনা দিয়ে ফেরানোটা মোটেও ঠিক উদাহরণ হয়ে থাকল না।’’ শার্জিল ও খালিদের পাঁচ থেকে আট বছরের নির্বাসন হতে পারে বলে খবর। কারও কারও আশঙ্কা, তাঁদের শাস্তির রায় বেরিয়ে গেলেই ফের বিতর্কের আগুনে পুড়বে পাক ক্রিকেট।
সেই স্মৃতি ফিরে এল ইরফানদের ঘিরে।
এর মধ্যেই পাক বোর্ডের চেয়ারম্যান শাহরিয়র খান সংবাদসংস্থাকে জানিয়েছেন, দীর্ঘকায় পেসার মহম্মদ ইরফানের বিরুদ্ধে স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগ নিয়ে তদন্ত চলছে। পাক বোর্ড প্রাক্তন বিচারপতিকে দিয়ে একটি শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি করবে বলেও তিনি জানিয়েছেন। এই কমিটিই দোষীদের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। পাশাপাশি, আমিরকে নিয়ে তোপের মুখে পড়েছেন বলেই শাহরিয়র বলতে বাধ্য হয়েছেন যে, ‘‘কেউ যদি মনে করে থাকে অপরাধ করেও ফিরে আসবে ড্যাং ড্যাং করে, তাহলে ভুল ভাবছে।’’ তাঁর কথা শুনে পাক ক্রিকেটমহলে অবশ্য অনেকেই হাসছেন। এঁদের বক্তব্য, ‘‘নাকের ডগায় বসে একের পর এক ফিক্সিং হচ্ছে। পিসিবি কবে কী করল!’’
পাক বোর্ডকে একহাত নিয়েছেন তারকা ক্রিকেটার শাহিদ আফ্রিদিও। তিনিও প্রশ্ন তুলেছেন আমিরের প্রত্যাবর্তন নিয়ে। ‘‘আমি আর কী বলব? কতবার তো বলেইছি যে, পাকিস্তান বোর্ড যদি উপযুক্ত ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে এ রকমই হতে থাকবে। যারা কলঙ্কিত ক্রিকেটারদের ফিরিয়ে আনে, তাদের জন্য এ রকম ঘটনাই তো অপেক্ষা করে থাকবে।’’
আরও পড়ুন:
বাংলাদেশকে উড়িয়ে অস্ট্রেলিয়াকে বিরাট-হুঙ্কার
পাকিস্তান সুপার লিগে কিংবদন্তিরা সব জড়িয়ে রয়েছেন। ভিভিয়ান রিচার্ডস থেকে ওয়াসিম আক্রম সকলে দুবাইয়ে এই টুর্নামেন্টে কোচের ভূমিকায় রয়েছেন। কিন্তু টুর্নামেন্টই এমন দাউদাউ বিতর্কের আগুনে দগ্ধ যে, তারকা ক্রিকেটার থেকে শুরু করে রিচার্ডসের মতো কিংবদন্তি— অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছেন। দুবাই থেকে অবশ্য খবর পাওয়া গেল, সোমবার রাত পর্যন্ত অন্তত পাক ক্রিকেটের আইপিএল বন্ধ হচ্ছে না। টুর্নামেন্ট চালিয়ে যাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টাই চলছে। কিন্তু পাক ক্রিকেট নিয়ে বিশ্বস্ততা যে ফের মারাত্মকভাবে আক্রান্ত, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই কারও।