টেস্ট সিরিজে দুর্দান্ত সাফল্যের পরে এ বার শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ভারতের ওয়ান ডে সিরিজ। যা শুরু হচ্ছে আজ, রবিবার থেকে। টেস্টে শ্রীলঙ্কার পারফরম্যান্সে যে ভাবে ক্রমশ অবনতি ঘটেছে, তা দেখে আমি মোটেই অবাক হইনি। দূর্বল দল যদি একবার আত্মবিশ্বাসের তলানিতে চলে যায়, তা হলে তাদের ফিরিয়ে আনা বেশ কঠিন। এই শ্রীলঙ্কার অবস্থাও তাই হল। প্রথম টেস্টের পরে আরও খারাপের দিকে চলে গেল।
অনেকে হয়তো বলবেন, ওরা একটা সন্ধিক্ষণে রয়েছে বলে এমন হচ্ছে। শ্রীলঙ্কার মতো একটা বড় দল যখন নিজেদের মাঠে এ ভাবেই হেনস্থা হয়, তখন এই অজুহাতটা দেওয়া খুব সোজা। কিন্তু তাদের জন্য একটাই উপদেশ, ভারতকে দেখে শেখো। অনেক বড় বড় নাম ভারতের ক্রিকেট থেকে সরে যাওয়ার পরেও কিন্তু তাদের উত্তরসূরি তৈরি হতে বেশি সময় লাগেনি।
কোহালি, পূজারা, রাহুল, রাহানে, রোহিত, অশ্বিন, হার্দিক— এরা আমাদের দেশের ক্রিকেটে সন্ধিক্ষণের প্রভাব বেশি দিন পড়তেই দেয়নি। ওদের সর্বোচ্চ স্তরের ক্রিকেট খেলার খিদে ও প্রত্যয় আমাদের বুঝতেই দেয়নি ভারতীয় ক্রিকেটের সন্ধিক্ষণ কখন পেরিয়ে গিয়েছে। এখন যখন কোহালি ওর দল নিয়ে মাঠে নামে, তখন গর্বিত হই ওদের এই কৃতিত্বের কথা ভেবে।
এই শ্রীলঙ্কা দলটার মধ্যে প্রতিভা রয়েছে। কিন্তু লড়াকু মানসিকতা নেই বলেই মার খাচ্ছে। এই জায়গাটাতেই ওদের উন্নতি করতে হবে। শুধু প্রতিভা দিয়েই ক্রিকেটে সফল হওয়া যায় না। জেতার ইচ্ছে ও সাহসটাও খুব জরুরি। ভারতের বিরুদ্ধে ওদের সিরিজ হারটাকে যদি ওরা ভুলে যেতে চায়, তা হলে ওরা ভুল করবে। বরং ভারতীয় ক্রিকেটারদের থেকে ওরা কিছু শিখুক। ওদের মতো হতে চেষ্টা করুক। ওদের শট বাছাই, মনঃসংযোগ হারিয়ে আউট হওয়া যদি এ রকম ভাবে চলতেই থাকে, তা হলে ওদের এই সন্ধিক্ষণ দীর্ঘ হতে থাকবে।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতের বিরুদ্ধে জয় শ্রীলঙ্কাকে এই ওয়ান ডে সিরিজে আত্মবিশ্বাস জোগাত। যদি না ঘরের মাঠে জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে হারত ওরা। টেস্ট সিরিজে ভারত যতটা শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল, ওয়ান ডে সিরিজে তার চেয়েও বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে। যদিও বেশির ভাগ নির্ভরযোগ্য সদস্যকেই বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে, তাও এই ভারতীয় দলে একাধিক ম্যাচ উইনার রয়েছে। রোহিতকে ভাইস ক্যাপ্টেন করার সিদ্ধান্তটা খুব ভাল। আইপিএলে ওর পারফরম্যান্সের পুরস্কারই বোধহয় দেওয়া হল রোহিতকে। এই সিরিজে আমার নজর অবশ্য থাকবে তরুণ হার্দিক পাণ্ড্যর ওপর। এই ভারতীয় দলের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ক্রিকেটার এখন ও-ই।